কোচবিহার: নির্বাচনের ভোটার অধিকার প্রয়োগ করা প্রত্যেকটি মানুষের জন্য মূল্যবান। প্রত্যেকেই স্বাধীন ভারতের নাগরিক। তাই নারী অথবা পুরুষের মতই তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তির একটি ভোটও গণতন্ত্রে ততটাই জরুরি। এই বার্তাই বার বার দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে কোনও জায়গা ছাড়েননি তাঁরা। আর তারই প্রতিফলন চোখে পড়ছে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকায়। তৃতীয় দফার ভোটার লিস্টে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারদের। ভোটের সকালে তাঁরাও বৈধ ভোটার কার্ড নিয়ে দাঁড়াবেন ভোটের লাইনে। হাতে কালির ফোটা নিয়ে বুঝিয়ে দেবেন তাঁরাও এই সমাজে ততটাই গুরুত্বপূর্ণ যতটা একজন নারী বা পুরুষ।
তৃতীয় লিঙ্গের একজন মানুষ সুমি দাস জানান, ‘‘জেলা কোচবিহারে ভোটার তালিকায় বর্তমানে স্থান পেয়েছে বহু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের নাম। তবে নাম স্থান পাওয়া পর্যন্তই শেষ। কাজ এগোয়নি কিছুই। হয়নি স্বতন্ত্র ভোটার লাইন, পাওয়া যায়নি কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা। পাওয়া যায়নি কোনওরকম আলাদা শৌচালয়ের ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্র নাগরিক হিসেবে পরিচয় পেলেও এই মানুষগুলো যেন আজও কোনও জায়গায় অবহেলিত হয়ে রয়ে গিয়েছেন। দীর্ঘ সময় পরেও তাঁদের উন্নতি নিয়ে কোনও রকম মাথা ব্যথা নেই প্রশাসনিক স্তরের কর্তাদের। সব মিলিয়ে বলতে গেলে, ভোট আসে ভোট যায়। তবে এই মানুষ গুলির পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয় না। ’’
আরও পড়ুন : মাত্র ৩০ টাকায় বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন ১০০ টি ফুচকা! রইল সহজ রেসিপি
আরও দু’জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ শুভ দাস ও ঈশ্বর চন্দ জানান, “আসলে শতাংশের হিসেব যাই দেখা যাক। নির্বাচনের হাত ধরে কোথাও একটা সামাজিক বিধি ভাঙছে। সংখ্যার নিরিখে উপস্থিতি সামান্য হলেও নেহাতই অবহেলা করা যায় না রূপান্তরকামী মানুষদের। তবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার বিষয়টি শেষ নয়। দরকার আরও বিভিন্ন বিষয়। এই বিষয়গুলি নিয়ে বর্তমান সময়ে কোনওরকম হেলদোল দেখতে পাওয়া যায় না সরকারি আধিকারিকদের।” কার্যত ভোটাধিকার প্রয়োগ প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের স্থান দেওয়া সম্ভব হলেও এখনও পর্যন্ত অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন এই মানুষেরা।