Tag Archives: third gender

Offbeat News: ১৮ বছর ধরে লালনপালনের পর দত্তককন্যার বিয়ে দিলেন তৃতীয় লিঙ্গের এক মা, কুর্নিশ সকলের

সৌভিক রায়, বীরভূম: দত্তক কন্যার বিয়ে দিলেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজন। শুনে অবাক হচ্ছে নিশ্চয়ই। পুরো ঘটনা একদম সত্যি। তীব্র দাবদাহে পুড়ছে বীরভূম-সহ রাজ্যের একাধিক জেলা। ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চলছে বীরভূমে। যা স্বাভাবিকের থেকে ৬ ডিগ্রি বেশি। ঠিক তারই মাঝে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের মল্লারপুরে দেখা গেল সমাজের তৃতীয় লিঙ্গ নামে পরিচিত সেই পরিবারের বিবাহ।মল্লারপুরের বাসিন্দা খুশি বেগম হিজড়ে সম্প্রদায়ের এক মা।এক কথায় খুশি বেগমকে ‘বীরভূমের মা’ নামে চেনেন সবাই।

জানা যায় এই খুশি বেগম আজ থেকে ১৮ বছর আগে একটি শিশুকন্যাকে দত্তক নিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১৮ বছর মেয়েটির খাওয়া-দাওয়া পড়াশোনা-সহ সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন। খুশি বেগম তার মেয়ের নাম রাখে শাবানা খাতুন। এছাড়াও তিনি আরও একটি ছেলের দায়িত্ব নিয়েছেন।মেয়ে শাবানা খাতুনকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করান এবং অবশেষে এলাকার চার পাঁচশো লোকজনের উপস্থিতিতে তাঁর বিবাহ দেন।

খুশি বেগম জানান , “মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়িয়েছি। তাঁর বিয়ের জন্য একটা ভাল ছেলে দরকার ছিল। তাই ভাল কোম্পানিতে কর্মরত সুপাত্রের সন্ধান পেয়েছিলাম।ছেলের বাড়ি বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে।আজ যতটা সম্ভব এলাকার মানুষের সহযোগিতায় মেয়ের বিয়ে দিলাম। তাঁদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক এই কামনা করি। শুধু নিজের গর্ভে ধারণ করা ছেলে মেয়ে থাকলেই মা-বাবা হওয়া যায়. সেটা নয়। আজ তার প্রমাণ দিলেন খুশি বেগম।

আরও পড়ুন : তরমুজের বীজও খেয়ে ফেলছেন? কতটা ক্ষতি হচ্ছে শরীরের? কী হয় এর বীজ পেটে গেলে? জানুন বিশদে

প্রতিবেশীদের বক্তব্য, এই খুশি বেগমরা ১০-১২ জন একটা বাড়িতে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছেন মল্লারপুরে। তাঁদের দেখে সমাজের অনেক মানুষ অনেক কথা বলেন। তাঁরা খুব কষ্ট করে প্রতিটা বাড়িতে, ট্রেনে ,বাসে আবার কখনও রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলে এবং এই টাকা দিয়ে বিভিন্ন সমাজসেবার কাজে খরচ করেন শুনেছিলাম। কিন্তু আজ তার প্রমাণ চোখে দেখলাম ৬-৭ লক্ষ টাকা খরচ করে দত্তক মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন এবং ৪০০ থেকে ৫০০ জন লোককে খাওয়া দাওয়া করাচ্ছেন-এটা শিক্ষণীয়।

Paper Plate Making: এইভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা! জানলে আপনিও চমকে উঠবেন

কোচবিহার: জেলায় রয়েছেন বেশ কয়েকজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। ইতিমধ্যেই ভোটার তালিকায় তাঁরা তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তবে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশ কঠিন। তবে কোচবিহারের ঘুঘুমারি এলাকায় কিছু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ মিলে তৈরি করেছেন কাগজের প্লেট তৈরির কারখানা। আর এই কারখানা তৈরির মাধ্যমেই তাঁরা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন।

এছাড়াও তাঁদের পাশাপাশি স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন এলাকার বহু দুঃস্থ এবং গরিবরা। একটা সময় থার্মোকলের তৈরি খাবারের থালার বাজারে প্রচুর চাহিদা ছিল। তবে প্রকৃতিবান্ধব না হওয়ার কারণে এই খাবারের প্লেটগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমান সময়ে তাই বাজারে চাহিদা রয়েছে কাগজের তৈরি খাবার প্লেটের। যেকোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে এই প্লেটগুলি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাইত সারা বছর এই প্লেটগুলির চাহিদা বাজারে কম হতে দেখা যায় না। তাই এই প্লেট তৈরি করার মাধ্যমে যেকোনও মানুষ খুব সহজেই আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারবেন স্বল্প সময়ের মধ্যে। তবে এই প্লেট তৈরির কারখানা তৈরি করতে খুব একটা বেশি খরচ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। অল্প খরচে এই কারখানা তৈরি করা সম্ভব।

আর‌ও পড়ুন: চাহিদার অভাবে এই বিখ্যাত গ্রাম থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে কাঠির তৈরি মাদুর

প্লেট তৈরির কারখানার কর্ণধার তথা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ সুমি দাস বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে তাঁরা বিভিন্ন রকম আর্থিক কষ্টের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন। তারপর এই ফ্যাক্টরি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে গোটা বিষয়টি ঘটান। তবে এই কারখানা তৈরির পর ধীরে ধীরে তাঁরা স্বনির্ভর হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে শুধু নিজেদের চাহিদা মেটান না, বহু দুঃস্থ মানুষের পাশেও এই আয় নিয়ে দাঁড়ান।

সার্থক পণ্ডিত

Lok Shabha Election 2024: লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা যা বললেন! জানুন

কোচবিহার: নির্বাচনের ভোটার অধিকার প্রয়োগ করা প্রত্যেকটি মানুষের জন্য মূল্যবান। প্রত্যেকেই স্বাধীন ভারতের নাগরিক। তাই নারী অথবা পুরুষের মতই তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তির একটি ভোটও গণতন্ত্রে ততটাই জরুরি। এই বার্তাই বার বার দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে কোনও জায়গা ছাড়েননি তাঁরা। আর তারই প্রতিফলন চোখে পড়ছে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের ভোটার তালিকায়। তৃতীয় দফার ভোটার লিস্টে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারদের। ভোটের সকালে তাঁরাও বৈধ ভোটার কার্ড নিয়ে দাঁড়াবেন ভোটের লাইনে। হাতে কালির ফোটা নিয়ে বুঝিয়ে দেবেন তাঁরাও এই সমাজে ততটাই গুরুত্বপূর্ণ যতটা একজন নারী বা পুরুষ।

তৃতীয় লিঙ্গের একজন মানুষ সুমি দাস জানান, ‘‘জেলা কোচবিহারে ভোটার তালিকায় বর্তমানে স্থান পেয়েছে বহু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের নাম। তবে নাম স্থান পাওয়া পর্যন্তই শেষ। কাজ এগোয়নি কিছুই। হয়নি স্বতন্ত্র ভোটার লাইন, পাওয়া যায়নি কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা। পাওয়া যায়নি কোনওরকম আলাদা শৌচালয়ের ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্র নাগরিক হিসেবে পরিচয় পেলেও এই মানুষগুলো যেন আজও কোনও জায়গায় অবহেলিত হয়ে রয়ে গিয়েছেন। দীর্ঘ সময় পরেও তাঁদের উন্নতি নিয়ে কোনও রকম মাথা ব্যথা নেই প্রশাসনিক স্তরের কর্তাদের। সব মিলিয়ে বলতে গেলে, ভোট আসে ভোট যায়। তবে এই মানুষ গুলির পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয় না। ’’

আরও পড়ুন : মাত্র ৩০ টাকায় বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন ১০০ টি ফুচকা! রইল সহজ রেসিপি

আরও দু’জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ শুভ দাস ও ঈশ্বর চন্দ জানান, “আসলে শতাংশের হিসেব যাই দেখা যাক। নির্বাচনের হাত ধরে কোথাও একটা সামাজিক বিধি ভাঙছে। সংখ্যার নিরিখে উপস্থিতি সামান্য হলেও নেহাতই অবহেলা করা যায় না রূপান্তরকামী মানুষদের। তবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার বিষয়টি শেষ নয়। দরকার আরও বিভিন্ন বিষয়। এই বিষয়গুলি নিয়ে বর্তমান সময়ে কোনওরকম হেলদোল দেখতে পাওয়া যায় না সরকারি আধিকারিকদের।” কার্যত ভোটাধিকার প্রয়োগ প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের স্থান দেওয়া সম্ভব হলেও এখনও পর্যন্ত অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন এই মানুষেরা।