জলে ডুবে চাষ জমি 

East Bardhaman News: চরম চিন্তায় রয়েছেন রাজ্যের শস্যভাণ্ডারের ধান চাষিরা 

পূর্ব বর্ধমান: জলমগ্ন পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা। ধান সহ অন্যান্য চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় রাজ্যের শস্য ভান্ডারের কৃষকেরা। জলের তলায় বিঘের পর বিঘে কৃষি জমি। দুদিনের ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি ডিভিসির ছাড়া জলের জেরেই এই পরিস্থিতি বলে মত জেলার চাষিদের। ধান চাষে চরম ক্ষতির আশঙ্কায় কাটোয়া, মঙ্গলকোট, কালনা সহ জেলার সব প্রান্তের কৃষকরা। কার্যত টাকা দিয়ে জল কিনে চাষ করা বিঘের পর বিঘে জমি এখন জলের তলায়। পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার অন্তর্গত মন্তেশ্বরের একাধিক জায়গাতেও দেখা গেল সেই ছবি। মন্তেশ্বর ব্লকের মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েতের আমাটিয়া, বসতপুর, ভান্ডারবাটি, পিয়াগ্রাম, ভেলিয়া গ্রাম সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে নতুন করে তলিয়ে গেছে চাষের জমি।

ফলে চরম দুশ্চিন্তায় স্থানীয় কৃষকেরা। এই প্রসঙ্গে উক্ত এলাকার এক কৃষক জানান,”একেতো বৃষ্টির জল আবার অন্যদিকে ডিভিসির জল। আমাদের এখানে যে বাঁকা নদী রয়েছে সেই নদী ওভারফ্লো হয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। আমাদের এই দিকে সকলেরই ধান রোপন করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জমির মধ্যে এই জল যদি এক সপ্তাহ রয়ে যায় তাহলে সব নষ্ট হয়ে যাবে। এর ফলে আমাদের সবথেকে বড় সমস্যা হবে, চাষের জন্য আর বীজ আমাদের কাছে নেই। এমত অবস্থায় সরকার যদি আমাদের একটু দেখে , তাহলে আমাদের খুবই উপকার হয়।”

প্রসঙ্গত, রাজ্যে শস্য ভান্ডার তথা ধানের গোলা হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা। এই জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধান চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু এবার সমস্যায় পড়েছে সেই শস্য ভান্ডারের চাষিরাই। পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৩৭ শতাংশের বেশি জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। কিন্তু ১৫ ই আগস্ট এর মধ্যে রোপনের কাজ শেষ না হলে ফলন কমার আশঙ্কা থাকতে পারে। তবে ১৫ আগস্ট এর আগে চাষ জমি থেকে জল নেমে যাবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। তবে জল জমে থাকার কারণে ধানের চারা নষ্ট হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন জেলার চাষিরা। এর ফলে তাঁদের আবার নতুন করে ধানের চারা রোপন করতে হবে জমিতে।

কিন্তু নতুন বীজ পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হতে পারে চাষিদের। জেলা কৃষি দফতরেরও বীজ নিয়ে সমস্যা হতে পারে সেই আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত জেলা জুড়ে মোট কত পরিমাণ চাষ জমির ক্ষতি হয়েছে তা পরিষ্কার হয়নি। জল যতক্ষণ না কমছে ততক্ষণ কিছুই পরিষ্কার হবে না বলেই জানা গিয়েছে। জেলা জুড়ে চাষের জমিতে জল জমে থাকার কারণে বর্তমানে চরম সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। সব মিলিয়ে বর্তমানে যেন শস্য ভান্ডারের চাষিদের রাতের ঘুম উড়েছে। চাষ নিয়ে দারুণ চিন্তায় রয়েছেন বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী