আহত সহকারী চালক মন্নু কুমার এবং তাঁর বাবা-মা৷

Kanchanjunga express accident: প্রাণে বেঁচেছে ছেলে, তবু ভয় কাটছে না! কোন আতঙ্কে মালগাড়ির সহকারী চালকের বাবা-মা?

শিলিগুড়ি: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার দায় প্রাথমিক ভাবে ঘাতক মালগাড়ির মৃত চালকের উপরেই চাপিয়েছে রেল৷ গত সোমবারের এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মালগাড়ির প্রধান চালকের মৃত্যু হলেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন সহকারী চালক মন্নু কুমার৷ উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা মন্নু কুমার বর্তমানে শিলিগুড়ির একটি নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন৷ এই দুর্ঘটনার রহস্যভেদে মন্নু কুমারের জবানবন্দি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে৷

এ দিন উত্তর প্রদেশ থেকে শিলিগুড়িতে এসে ছেলে যাতে অবিচারের শিকার না হন, সেই দাবি তুললেন মন্নু কুমারের বৃদ্ধ বাবা-মা৷ যেভাবে মালগাড়ির প্রধান চালকের উপরে দুর্ঘটনার দায় চাপিয়েছে রেল, তা দেখে নিজেদের ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তায় মন্নু কুমারের বাবা রঘুনন্দন চৌধুরী এবং মা দ্রৌপদী মুর্মু৷

আরও পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু! বুধবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ, ঠিক কী ঘটেছিল সেই দিন?

মন্নু কুমারের বাবা এবং মা জানিয়েছেন, আট বছর ধরে ট্রেন চালকের চাকরি করছেন মনু৷ ঘটনার দিন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে সকাল ৬.৪২ মিনিট থেকে ডিউটি ছিল তাঁর৷ সময় মতোই স্টেশনে পৌঁছে বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছিলেন মন্নু৷ এর ঘণ্টা দুয়েক পরেই মন্নু কুমার যে মালগা়ড়ি চালাচ্ছিলেন, সেটি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে ধাক্কা মারে৷ টিভি দেখে সেই খবর জানতে পারে মন্নু কুমারের পরিবার৷ টিভির পর্দায় দুর্ঘটনাস্থলের ভয়াবহ ছবি দেখে ছেলের কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মন্নুর বাবা মা৷ ফোনেও ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা৷ পরে রেলের পক্ষ থেকে বাড়িতে খবর দিয়ে জানানো হয় মন্নু চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ সেই খবর পেয়েই এলাহাবাদ থেকে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন প্রবীণ দম্পতি৷

এ দিন শিলিগুড়ি পৌঁছে ওই নার্সিং হোমে গিয়ে মন্নুর সঙ্গে দেখা করেন তাঁর বাবা-মা৷ তাঁদের করুণ আর্তনাদ, ‘ইনসাফ চাই। আমাদের ছেলের চিকিৎসা যেন যথাযথ হয়। ছেলে সুস্থ হয়ে যেন তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসে।’

মনুর মা দ্রৌপদী দেবী এ দিন হাপুস নয়নে কেঁদে চলেছেন। আর বলছেন, ‘আমার ছেলের কিছু হয়ে গেলে আমরা আর বাঁচব না।’ তাঁর বাবা অবশ্য অনেকটা মাথা ঠান্ডা রেখে চিকিৎসকদের উপরে ভরসা রেখেছেন। সাথে তাঁর দাবি, ‘তদন্ত যথাযথ হোক। কিন্তু আমার ছেলে দোষী নয়। জোর করে যেন দোষী সাব্যস্ত না করা হয়।’ আপাতত মনুর বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় তার প্রিয়জনেরা৷