পশ্চিম মেদিনীপুর: দুর্গা পুজোর আগে বন্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন ঘাটালের মানুষ। তবে একমাস কাটতে না কাটতে ফের ঘাটালে বন্যা। ঘূর্ণিঝড়ের দুর্যোগ মুহূর্তে ভারী বর্ষণের ফলে ঘাটাল ব্লক, ঘাটাল পৌরসভার একাধিক ওয়ার্ড জলের তলায়। জলের তলায় বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে যখন সাধারণ মানুষ সামান্য আশার আলো দেখেছিলেন, তখনই শিলাবতী নদীর উপরিভাগের একাধিক এলাকায় ভারী বর্ষণের কারণে নিম্নভাগে, ঘাটাল মহকুমা জুড়ে একাধিক জায়গা প্লাবিত। উপরের অংশের জল কমতে শুরু করলে জল বাড়বে ঘাটাল এলাকায়। স্বাভাবিকভাবে কালীপুজোর প্রাক মুহূর্তে নাজেহাল পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের। কিভাবে পুজো হবে তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল অত্যন্ত নিচু এলাকা। শুধু তাই নয়, ঘাটাল মহকুমা জুড়ে রয়েছে শিলাবতী, ঝুমি সহ একাধিক নদী। রয়েছে ছোট-বড় খালও। স্বাভাবিকভাবে বছরে বৃষ্টির সময়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে এ বছর একবার, দুবার নয়, তিনবার বানভাসি হয়েছে ঘাটালের মানুষ। বর্ষার মরশুম, দুর্গাপুজোর প্রাক মুহূর্তে এমনকি কালীপুজোর মুখেও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি ঘাটালে। যে রাস্তায় সাইকেল, বাইক কিংবা গাড়ি যাতায়াত করত সেই রাস্তায় চালাতে হচ্ছে নৌকো। ঘরের সামনেই প্রায় হাঁটু সমান জল। চারিদিকে জল থৈ থৈ অবস্থা। সাধারণ মানুষের দিনযাপনের ভরসা ডিঙি, নৌকো।
আরও পড়ুন: হার মানছে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব! সময়ে প্রতিমা ডেলিভারি দিতে মোক্ষম পথ বাছলেন ঘাটালের মৃৎশিল্পীরা
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, চন্দ্রকোনা এলাকায় জল নামতে শুরু করলেও সেই জল বাড়ছে ঘাটালে। সাধারণ মানুষের তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও, চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে বেশ কিছু এলাকায় জল ঢুকে যাওয়ার কারণে বেশকিছু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাধারণ জনজীবনও ব্যাহত। শুধু তাই নয়, মাত্র একদিন পরেই কালীপুজো। এই পুজোতে আশার আলো দেখেছিলেন ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। সামান্য আয়োজনে কালীপুজোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। তবে ফের বন্যা পরিস্থিতিতে সব শেষ।
আরও পড়ুন: মোটা মাইনে, খড়গপুরে চাকরির বিরাট সুযোগ! ৫ নভেম্বর আবেদনের শেষ দিন
ঘাটালে বন্যা যেন ডেইলি রুটিন। প্রতি বছর বন্যায় ডুবে থাকতে হয় ঘাটালের মানুষকে। বন্যা এলেই আসে মাস্টার প্ল্যানের প্রসঙ্গ। তবে এই বন্যা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি রেখেছে মহকুমা প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসন। ঘন্টায় ঘন্টায় মাপা হচ্ছে জলস্তর। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার দিকে সচেষ্ট রয়েছেন আধিকারিকেরা।
রঞ্জন চন্দ