নয়াদিল্লি: নিট কাণ্ডে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ৷ সুপ্রিম কোর্টে আজ আবার এই মামলার শুনানি শুরু হয়েছে৷ যদিও সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দাবি করলেন, নিট কাণ্ডের প্রশ্ন ফাঁসের কোনও কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি৷
যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে সংসদে দাঁড়িয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি৷ কটাক্ষের সুরে তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেই জানেন না তিনি কী বলছেন!
আরও পড়ুন: রাজনীতির লড়াই ছেড়ে দেশের জন্য এক হওয়ার ডাক, মোদির পরামর্শ শুনবেন বিরোধীরা?
বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এ দিন বলেন, ‘আমি পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে বলছি, গত সাত বছরে নিট পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে৷ প্রধান বিচারপতি নিজে এই মামলার বিচার করছেন৷ সুপ্রিম কোর্টের সামনে সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে৷ এনটিএ গঠনের পর ২৪০টি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখনও কোনও বেনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি৷’
#WATCH | Congress MP and LoP in Lok Sabha Rahul Gandhi says “As this (NEET) is a systematic issue, what exactly are you doing to fix this issue?
Education Minister Dharmendra Pradhan says “…A lie will not become truth just by shouting. The fact that the Leader of Opposition… pic.twitter.com/gbTXVoqytk
— ANI (@ANI) July 22, 2024
#WATCH | Congress MP and LoP in Lok Sabha Rahul Gandhi says “It is obvious to the whole country that there is a very serious problem in our examination system, not just in NEET but in all the major examinations. The minister (Dharmendra Pradhan) has blamed everybody except… pic.twitter.com/ccclExwRTI
— ANI (@ANI) July 22, 2024
শিক্ষামন্ত্রীর এই দাবি শুনেই বিরোধী শিবির থেকে তুমুল হই হট্টগোল শুরু হয়৷ পাল্টা শিক্ষামন্ত্রীর ইস্তফার দাবি তোলেন তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ বি মণিকম টেগোর শিক্ষামন্ত্রীর ইস্তফার দাবি তোলেন৷ তখন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখানে আমার প্রধানমন্ত্রীর অনুগ্রহে রয়েছে৷ যদি দায়িত্ব নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে, তাহলে গোটা সরকারই জবাবদিহি করতে বাধ্য৷ একমাত্র বিহারের পটনার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে৷ সিবিআই এবং বিহার পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে সেই অভিযোগের বিচার করছেন৷’
এর পরই রাহুল গান্ধি বলেন, ‘যা চলছে তা নিয়ে গোটা দেশের লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া উদ্বিগ্ন এবং তারা বুঝে গিয়েছেন যে ভারতীয় পরীক্ষা ব্যবস্থা আসলে এক ধরনের প্রতারণা৷ মানুষ এটাও বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে আপনি যদি ধনী হন এবং আপনার কাছে টাকা থাকে, তাহলে আপনি ভারতীয় পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কিনে নিতে পারেন৷ আমরা বিরোধীরাও তাই বিশ্বাস করি৷ এটা যদি পরীক্ষা ব্যবস্থারই গলদ হয় তাহলে এই সমস্যা দূর করতে পরীক্ষা ব্যবস্থায় আপনারা কী বদল আনছেন?’
এর জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ‘চিৎকার করলেই মিথ্যেটা সত্যি হয় না৷ বিরোধী দলনেতা গোটা দেশের পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁর এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক৷’ ২০১০ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে কেন শিক্ষা ব্যবস্থায় সংশোধন সংক্রান্ত বিল এনেও কংগ্রেস তা প্রত্যাহার করেছিল, সেই প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী৷
ধর্মেন্দ্র প্রধানের এই জবাব শুনে রাহুল পাল্টা বলেন, গোটা দেশের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় গলদ রয়েছে৷ শুধু নিট নয়, সব বড় পরীক্ষার ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য৷ শিক্ষামন্ত্রী এর জন্য নিজেকে বাদ দিয়ে সবাইকে দায়ী করেছেন৷ আমার মনে হয়, এখানে কী নিয়ে আলোচনা চলছে সেটাই উনি বুঝতে পারছেন না৷
একা রাহুল গান্ধি নন, শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও৷ কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, এমন উদাহরণও রয়েছে যেখানে নিট পরীক্ষার একটি কেন্দ্র থেকেই দু হাজার পরীক্ষার্থী পাস করেছেন৷ যতদিন এই শিক্ষামন্ত্রী পদে থাকবেন, ছাত্রছাত্রীরা বিচার পাবেন না৷