বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের শেষ রেলওয়ে স্টেশন সিঙ্গাবাদ। এখন সেটি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়। রেল যেন এই স্টেশন থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে।

Railway News: ভারতীয় রেলের বড় পদক্ষেপ! ভারী বর্ষার আগে যাত্রীদের সুবিধার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, ট্রেনে চাপার আগেই জানুন

ট্রেনের অবিরতভাবে পরিচালন এবং বাধাহীন পরিষেবা নিশ্চিত করতে বিশেষত বর্ষাকালে নিজেদের যাত্রীদের সুগম ভ্রমণ প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে। স্থায়ী প্রচেষ্টা ও পরিকাঠামোর আপগ্রেডেশনের জন্য বিগত কয়েক বছরে বর্ষার সময় ট্রেন পরিচালনায় সুবিধা হয়েছে। এর ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও ন্যূনতম বাধা সহ প্রত্যেকটি ডিভিশনে মসৃণ ও স্বাভাবিকভাবে ট্রেন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের সাহায্য হয়েছে।

এক্ষেত্রে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে সিভিল, মেকানিক্যাল, সিগনালিং, ইলেক্ট্রিক্যাল সম্পদ ও সরঞ্জাম ইত্যাদির উপযুক্ত সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি মিশন মোডে বর্ষাকালের জন্য বেশ কয়েকটি প্রস্তুতিমূলক কাজ গ্রহণ করা হয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধিক্ষেত্রের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে থাকা সমগ্র উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধিক্ষেত্রের অধীনে বিস্তৃত ৬৪০০ কিলোমিটারেরও বেশি রেলওয়ে ট্র্যাকে বিগত কয়েক মাস ধরে বর্ষাকালের সাথে মোকাবিলা করার জন্য উপকরণ আনা-নেওয়া করা হচ্ছে।  এই রেলপথে বর্ষাকাল বিশাল এক প্রত্যাহ্বান।

প্রতি বছর প্রায় ৭০০০ এমএম প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়া তথা নিম্ন হিমালয়ান রেঞ্জের পাদদেশের কাছে জটিল ভূখণ্ডের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলে এই রেলওয়ে পরিষেবা দিয়ে চলেছে। দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষার স্বাভাবিক সময় হলো প্রত্যেক বছর মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত, অন্যদিকে লামডিং ডিভিশনে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয় বর্ষা। প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও ভূমি ধসের জন্য বাঁধ খণ্ড বিখণ্ড হওয়া, ব্রিজের উপর দিয়ে জলের প্রবাহ বয়ে যাওয়া ইত্যাদি ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ট্র্যাকের সুরক্ষিত ও ভালো অবস্থা নিশ্চিত করতে একটি বিস্তারিত কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপোস না করা হয়।এই জন্য, রেলওয়ে ট্র্যাকের নিরাপত্তার লক্ষ্যে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে একটি বিস্তারিত কৌশল প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে স্পর্শকাতর স্থানগুলিতে বিভিন্ন উপকরণের বর্ষাকালীন সংগ্রহের পূর্বে নিষ্কাশন ব্যবস্থা পরিষ্কার করা, ব্রিজের ওয়াটার ওয়ের পরিষ্কার করা, ব্রিজে বিপদস্তর চিহ্নিত করা ইত্যাদি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। সমস্ত ধরনের প্রতিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে নিজের অধিক্ষেত্রের অধীনে বৃষ্টিপাতের ফলে কোনও ধরনের বিপদজনক পরিস্থিতি যাতে না ঘটে তার জন্য ৬৪০০ কিমি-এরও অধিক ট্র্যাক ক্রমাগত পরিদর্শনের জন্য পেট্রোলিং টিম নিয়োজিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-  বলুন তো, পৃথিবীর কোন দেশে Jeans পরা নিষেধ? ৯০% মানুষই জানেন না সঠিক উত্তর, নাম শুনলে চমকে যাবেন গ্যারান্টি!

এই টিমটি আবহাওয়া দফতরের জারি করা বৃষ্টিপাতের সতর্কতার উপর ভিত্তি করে টহলদারি করে। টহলদারি করার জন্য নিয়োজিত কর্মীরা জিপিএস ট্র্যাকার, লুমিনাস জ্যাকেট, রেনকোট ও পৃথক ওয়াটারপ্রুফ ট্রাউজার, সুরক্ষামূলক হেলমেট, সুরক্ষামূলক জুতো, শক্তিশালী সার্চ/ফ্ল্যাসলাইট ইত্যাদির মতো সর্বশেষ ও অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত। এই টিমিট দিনরাত চব্বিশঘণ্টা ট্র্যাকে টহলদারি করে। ট্রেনের স্বাভাবিক চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে এমন যে কোনও পরিস্থিতি সম্পর্কে নিকটতম স্টেশনে যাতে খবর দেওয়া যায় তার জন্য প্রত্যেকটি টহলদারি দলের জন্য মোবাইল ফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-  গরমে গোলাপ গাছ শুকিয়ে কাঠ হচ্ছে? এই ৬ জিনিস ‘ধন্বন্তরি’! গোড়ায় দিলেই থোকা থোকা ফুলে ভরবে গাছ, গ্যারান্টি!

টহলের পাশাপাশি ভূমিধস প্রবণ অঞ্চল, বিপদসীমার উপর দিয়ে জল প্রবাহিত হওয়া ব্রিজ ইত্যাদিতে অনড় ওয়াচম্যানও নিয়োগ করা হয়েছে।সতর্কতা সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে ব্রিজ ভেসে যায়, বাঁধ ভেঙে যায় ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে এবং সম্ভাব্য ন্যূনতম সময়ের মধ্যে পুনরুদ্ধার করতে বোল্ডার, বালু, বালুর বস্তা, ব্রিজ ইত্যাদির বিভিন্ন প্রি-ফেব্রিকেটেড উপাদান ওয়াগনে লোড করা হয়েছে এবং কৌশলগত স্থানগুলিতে সেগুলি রাখা হয়েছে। এছাড়াও, প্রায় ৩০৯৯০৯ কিউবিক মিটার বোল্ডার, ১৭৪২৬ কিউবিক মিটার কোয়ারি ডাস্ট, ২২০০০ কিউবিক মিটার সিল্ট, ৪৫০০০ টি বালু ভর্তি ব্যাগ এবং ২৮৯৮০০টি ও খালি সিমেন্টের ব্যাগ বর্ষাকালীন সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে।যে কোনও ধরনের আবহাওয়ায় সংযোগ ব্যবস্থা ও আমাদের সম্মানীয় যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে ক্রমাগতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং বাধাহীন ভ্রমণ বজায় রাখতে সমস্ত প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে।