ডাক্তারি পড়ুয়া

Alipurduar News: চিকিৎসক হতে আর জি করে আর কি আসবেন মেয়েরা? প্রশ্ন তুলে দিল চা বস্তির এই পড়ুয়ার সিদ্ধান্ত

আলিপুরদুয়ার: সপ্তাহে একদিন শুধু ট্রেনে চেপে শিলিগুড়ি গিয়ে নিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিত রিয়া বিশ্বকর্মা। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ আসলেও, সেই তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর আর সেখানে পড়তে যেতে যথেষ্ট ভয়ে রিয়া।

এমবিবিএস পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে। নিট প্রস্তুতি চার বছর ধরে নিচ্ছেন রিয়া। যেদিন ভোরের ট্রেনে চেপে শিলিগুড়ি যেতেন সেদিন রাতের ট্রেনে চেপে আবার বাড়ি ফিরতেন।পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে যাতে আলাদা টাকা খরচ না হয়ে যায়। পাশাপাশি, অনলাইন কোচিং নিয়ে নিট পরীক্ষায় সফল দলসিংপাড়া গোপালবাহাদুর বস্তি এলাকার বাসিন্দা রিয়া বিশ্বকর্মা। বন্ধ দলসিংপাড়া চা বাগানের গোপালবাহাদুর এলাকার বাসিন্দা রাজু বিশ্বকর্মা ও রোমা বিশ্বকর্মার সন্তান রিয়া বিশ্বকর্মা।

আরও পড়ুন: আরজি করে ধর্ষণ নাকি গণধর্ষণ? সঞ্জয়ের বয়ানে অসঙ্গতি, কী লুকোচ্ছে ধৃত? ফের জেরা CBI-এর

এবছর নিট পরীক্ষায় সফল হয়েছে সে। প্রত্যন্ত বনবস্তি এলাকার মেয়ে দীর্ঘ চার বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করার পর এবছর সাফল্য পেয়েছে। তার সর্বভারতীয় র‍্যাঙ্ক এক লক্ষ ২৯ হাজার। নিটে বসে সফল হওয়ার পর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ এসেছিল। এত কিছু ঘটে যাওয়ার পর তিনি রাজি ছিলেন। কিন্তু তরুণীর মা যেতে দিতে রাজি নন। তার জন্য কোচবিহারে পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তার।

আরও পড়ুন: ফের আলোচনা চেয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের চিঠি নবান্নের, হবে না লাইভ! থাকতে পারবেন ১৫ জন

এই এলাকায় নেই কোনও নিটের কোচিং সেন্টার এমনকি নিট প্রস্তুতি জন্য নেই কোনও সুবিধা। ইউটিউবে অনলাইন ক্লাস করে রিয়া এই সাফল্য পেয়েছে। রিয়ার বাবা রাজু পেশায় ছোট ব্যবসায়ী মা অঙ্গনয়াড়ি কর্মী। রিয়া বিশ্বকর্মা জানান, “ইউটিউবে অনলাইন ক্লাস করেছি। বেশিরভাগ সময় ঘরে বসেই প্রস্তুতি নিয়েছি। অনেক সময় নেটওয়ার্ক সমস্যা হত, মাঠে বসে পড়তাম সে সময়। কঠোর পরিশ্রম করলে আমাদের মতো প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীরাও নিট পাশ করতে পারবে। আমি এই এলাকার চিকিৎসক হয়ে আসতে চাই।”

নিটে রিয়ার প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৬। কোচবিহার এম জে এন মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে সে। ইতিমধ্যে রিয়া ভর্তি হয়ে গিয়েছে। রিয়ার এই সাফল্যে খুশি এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে সকলে। এই খবর শোনার পর এলাকার বাসিন্দারা, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রিয়ার ঘরে এসে তাকে সম্বর্ধনা প্রদান করেছে। রিয়ার বাবা রাজু বিশ্বকর্মা জানান, “ছোট থেকেই চিকিৎসক হতে চাইত। খুব একাগ্রতা ছিল ওর পড়াশুনোর প্রতি। আমরা তো অতটা জানি না নিট পরীক্ষার বিষয়ে। ও যেভাবে পড়তে চেয়েছে, পাশে ছিলাম। ও এলাকার চিকিৎসক হয়ে চা বাগানের বাসিন্দাদের সেবা করুক, আমিও এটাই চাই।”

Annanya Dey