নয়াদিল্লি: এক বছরও হয়নি জাঁকজমক অনুষ্ঠানে উদ্বোধন হয়েছিল নতুন সংসদ ভবন। কিন্তু, বছরও ঘুরলও না। দিল্লির বর্ষার ছোবল সামলাতে পারল না ১২০০ কোটির এই ভবন। প্রথমে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়া দিয়ে শুরু হয়েছিল, তাতেই শুরু হয়েছিল শোরগোল। দিল্লিতে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়তে দেখা গেল সংসদ ভবনের মেঝেতে জল থইথই। কার্যত সেই ধারাস্রোতের ভিডিওই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিও পোস্ট করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন।
View this post on Instagram
যদিও কোনও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি নিউজ১৮ বাংলা।
কিন্তু, কেন এই অবস্থা অত্যাধুনিক ভবনের? লোকসভা সচিবালয়ের তরফ থেকে শুক্রবার এর এক অদ্ভুত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, নতুন সংসদ ভবনে কাচের গম্বুজ বা ডোম থেকেই এই বিপত্তি। গম্বুজের কাচ জোড়া লাগানোর জন্য যে আঠালো পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই ব্যবহৃত আঠার ফাঁক থেকে জল ছুঁইয়েই এই বিপত্তি ঘটে। কিন্তু, প্রশ্ন যদি তাই হয় তবে ওই সুক্ষ সুক্ষ ফাঁক দিয়ে এত বিপুল জলরাশি সংসদ ভবনের মেঝে ভাসিয়ে দিতে পারে? বিরোধীরা লোকসভার সচিবালয়ের এই দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি শুধু লোক দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু আদতে, কিছুই হয়নি। ফলে, এই বেহাল অবস্থা হয়েছে নতুন সংসদ ভবন।
একটি ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে হিন্দিতে বলতে শোনা যায়, “এই দেখুন আমাদের নতুন সংসদ ভবনের অবস্থা”। ভিডিও দেখে অনুমান করা যায় এই জলমগ্ন অবস্থা সংসদ ভবনের উচ্চ কক্ষের রাজ্যসভার দৃশ্য।
এইরকমই আরও একটি ভিডিও গত বৃহস্পতিবার সমাজমাধম্যে পোস্ট করেন তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ মণিকম ঠাকুর। তাতে দেখা যায়, সংসদ ভবনের লবির ছাদ থেকে চুঁইয়ে জল পড়ছে।
Dekho Bhai Aaap Kuch Bhi Kaho Lekin Maan Naa Padega Modi Ji Ko.
Modi ji has made such a beautiful Rajya Sabha that people can do swimming also. pic.twitter.com/fIiEztb51I— KRK (@kamaalrkhan) August 2, 2024
মেঝেতে জল থইথই অবস্থা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনও মতে বালতি দিয়ে জল ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এরপরে আরও ভিডিও সামনে আসতে থাকে যেখানে দেখা যায় সংসদ ভবন চত্বরে নদীর মতন জল বইছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথম অধিবেশন বসেছিল ওই বছরের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দিল্লির বর্ষার দাপটে বিপাকে পড়ল বহুমুল্য ব্যয়ে নির্মিত এই সংসদ ভবন।
আরও পড়ুন: শমীকের উপরে চটলেন খাড়গে! বিজেপি সাংসদকে রাজ্যসভা থেকে বহিষ্কারের দাবি
ঠিক যেমন বর্ষায় প্রবল বিপাকে পড়েছিল অয্যোধ্যায় নির্মিত রামমন্দির। প্রথম বৃষ্টিতেই সেখানেও রামলালার গর্ভগৃহের ছাদ থেকে বৃষ্টির জল পড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছিলেন সেখানকার প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস। সে বিষয়ে অবশ্য কেন্দ্রের গড়া “শ্রীরামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের” তরফ থেকে নৃপ্রেন্দ্র মিশ্র জানিয়েছিলেন, রামমন্দিরের নির্মাণের কোনও ত্রুটি নেই। বিদ্যুতের লাইন বেয়েই জল রামলালার গর্ভগৃহে ঢুকেছে।
এরপর থেকেই বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। আর বছর ঘুরতেই নতুন সংসদ ভবনের এই বেহাল চিত্র আবারও বিতর্কের সৃষ্টি করল।