আমাদের আশেপাশে গ্রাম বাংলার পথে ঘাটে ঝোপেঝারে বেড়ে ওঠা শাক-পাতাকে অবহেলা করছেন? জানেন কী পরিমান উপকারী হতে পারে আপনার চেনা এই শাক-সবজি?আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়মিত ঠিক নিয়মে খেলে ওষুধের থেকে কোনও অংশে কম যায় না আমাদের এই চেনা শাক-সবজি।আজ এই প্রতিবেদনে চলুন জেনে নেওয়া যাক বর্ষায় বেড়ে ওঠা এই একটি শাকের উপকারিতা। রক্তশূন্যতা ও ডায়াবেটিস নিরাময়ে দুর্ধর্ষ কার্যকর ভূমিকা নেয় সস্তার এই ‘কলমি শাক’ বা ‘ওয়াটার স্পিনাচ’।বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান, তাহলে নিয়মিত সবুজ শাকসবজি এবং ভেষজ খান। গ্রীষ্মের মরশুমে বাজারে অনেক ধরনের সবুজ শাক-সবজি পাওয়া যায়।এ ছাড়া বর্ষা আসতেই বাজারে নামমাত্র দামেই পাওয়া যাছে আঁটি আঁটি কলমি শাক। এই শাককে জলের শাকও বলা হয়। অনেক ধরনের পুষ্টি ও ভিটামিনে ভরপুর এই সাদামাটা শাকটি।ডাঃ বিদ্যা গুপ্তা জানান, কলমি শেক প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া যায়। এছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। এটি রক্তশূন্যতার সমস্যা দূর করে এবং পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এটি দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি ঘটায়।গত ২০ বছর ধরে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র নিয়ামতপুরে কর্মরত গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ডঃ বিদ্যা গুপ্ত তাঁর পরামর্শে বলেন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এই শাক।এটি রক্তাল্পতার চিকিৎসায়, পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে, খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে, দৃষ্টিশক্তির উন্নতির পাশাপাশি ত্বক সংক্রান্ত অনেক রোগের নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা নেয়।কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। আয়রন থাকায় এটি রক্তের সমস্যা দূর করে। এই শাক মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী। এতে মহিলাদের রক্তের ঘাটতি দূর হয়।ভিটামিন এ এবং ক্যারোটিনয়েড প্রচুর পরিমাণে এই সবুজ শাকে পাওয়া যায়। এটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করলে রাতকানার সমস্যায় নিরাময় হয়।সবুজ এই শাক মহিলাদের পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়। এছাড়াও এই ফাইবার মেটাবলিক রেট বাড়ায়। যার কারণে পরিপাকতন্ত্র মজবুত থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এই শাক খুবই কার্যকরী প্রমাণিত হয়।কলমি শাক লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এর অর্থ হল এই সবুজ শাক আপনার লিভার থেকে ময়লা দূর করতে সহায়ক। কলমি শাকে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লিভারের এনজাইমকে সক্রিয় করে। যার ফলে আপনার লিভার সুস্থ থাকে।কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকালের কারণে সৃষ্ট সমস্যা দূর করে রোদে পোড়া এবং বলিরেখা থেকে শরীরকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত এটি খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি খুবই উপকারী।শর্তত্যাগ: শুধুমাত্র আপনাদের সচেতনতার উদ্দেশ্যেই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে। আমরা এই লেখায় সাধারণ জ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবনের কিছু সাধারণ তথ্য শেয়ার করেছি মাত্র। আপনি যদি কোথাও আপনার স্বাস্থ্য, জীবন ও বিজ্ঞানের যোগ সম্পর্কিত কিছু পড়েন তবে তা গ্রহণ করার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
