ঘুম আমাদের দৈনন্দিন কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ও সঠিক নিয়মে ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু সামান্য কিছু ভুলেই মাশুল চোকাতে হতে পারে বড় রকমের।কারণ ঘুম যদি সঠিকভাবে না করা হয় তবে এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর। কিন্তু কী কী ভুল ডেকে আনতে পারে বিপদ?ঘুমের ভুল: রাতে ভাল ঘুম আমাদের শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভাল ঘুম শুধু আমাদের সারাদিন উদ্দীপ্ত রাখে না, আমাদের মানসিক ভারসাম্য এবং শারীরিক স্বাস্থ্যও ভাল রাখে ঘুম।কিন্তু অনেক সময় আমরা জেনে বা না জেনে এমন ভুল করে ফেলি যা আমাদের ঘুমের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আজ এই প্রতিবেদনে আমরা জেনে নেব একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া বিশিষ্ট চিকিৎসক ডঃ পায়োজ পাণ্ডের বিশেষ পরামর্শ।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী সেই ভুল যা আমাদের রাতের ঘুমানোর সময় এড়িয়ে চলা উচিত, যাতে কোনওভাবে ঘুম নষ্ট না হয়।ঘুমানোর সময় যে ভুলগুলো অনেকেই প্রায় করে থাকেন : ১. ভারী ডিনার: রাতে ঘুমানোর ঠিক আগে ভারী ডিনার এড়িয়ে চলা উচিত। ভারী এবং ভাজা খাবার খেলে পেটে অস্বস্তি হতে পারে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।এক্ষেত্রে আমাদের পরিপাকতন্ত্র রাতে বিশ্রামের পরিবর্তে খাবার হজম করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। তাই রাতের খাবার হালকা হওয়া উচিত এবং ঘুমানোর অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে খাবার খাওয়া উচিত।২. ক্যাফেইন বা নিকোটিন সেবন: ক্যাফেইন এবং নিকোটিনের মতো পদার্থ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ক্যাফেইন আমাদের শরীরকে জাগ্রত ও সজাগ রাখে, যা ঘুম নষ্ট করতে পারে। একইভাবে, নিকোটিনও একটি উদ্দীপক যা ঘুমের চক্রকে প্রভাবিত করে। তাই রাতে চা-কফি পান না করা এবং সিগারেট চিরতরে পরিহার করাই উচিত।৩. ঘুমানোর আগে মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার বন্ধ করুন: রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা ঘুমের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। এসব ডিভাইসের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিন নামক হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়, যা ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয়।মেলাটোনিন কম নিগ্রত হওয়া ঘুমের গুণমানকে প্রভাবিত করে এবং এর প্রভাবে ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে। ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করা ভাল।৪. ভুল ঘুমের রুটিন: ঘুমের জন্য সঠিক রুটিন থাকাটা খুবই জরুরি। আপনি যদি প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে ঘুমান তবে এটি শরীরের জৈবিক ঘড়িকে বিপর্যস্ত করতে পারে, যা ঘুমের মানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ঘুমের নিয়ম বজায় থাকবে।৫. অস্বস্তিকর ঘুম: যদি আপনার বিছানা বা বালিশ অস্বস্তিকর হয়, তবে এটি আপনার ঘুমের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও, ঘুমানোর ভুল ভঙ্গি ঘাড় এবং পিঠে ব্যথার কারণ হতে পারে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।তাই সবার আগে নিশ্চিত করুন যে আপনার বিছানা এবং বালিশ আরামদায়ক এবং আপনার ঘুমানোর অবস্থান সঠিক। নতুবা কিন্তু তার মাশুল গুনতে হবে অন্য বড় ক্ষতি দিয়ে।শর্তত্যাগ: শুধুমাত্র আপনাদের সচেতনতার উদ্দেশ্যেই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে। আমরা এই লেখায় সাধারণ জ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবনের কিছু সাধারণ তথ্য শেয়ার করেছি মাত্র। আপনি যদি কোথাও আপনার স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞানের যোগ সম্পর্কিত কিছু পড়েন তবে তা গ্রহণ করার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
