এক হাঁসেই বাজিমাত! দু’হাজার হাঁস তৈরির  বরাত জোটে বিপ্লবের

South Dinajpur News: সামাজিক মাধ্যমেই বাজিমাত! বিপ্লবের তৈরি কাঠের সুদৃশ্য হাঁস পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে

দক্ষিণ দিনাজপুর: এক হাঁসেই বাজিমাত! পাইন কাঠের হাঁস পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে। যার ফলে ক্রমশ স্বাবলম্বী হচ্ছেন বিস্তীর্ণ এলাকার মহিলারা। বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে নলতাহার গ্রামে তৈরি হচ্ছে সুদৃশ্য হাঁস। পাইন গাছের টুকরো কেটে হাঁস তৈরি করছেন নবান সরকার ও তাঁর ছেলে বিপ্লব সরকার। ঘটনার সূত্রপাত সোশ্যাল মাধ্যমে। জানা যায়,কলকাতা থেকে তাদের ২০০০ টি কাঠের হাঁস তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় মহিলারা এই হাঁস তৈরিতে নিযুক্ত হয়েছেন। অর্থ উপার্জনের ফলে মুখে হাসি ফুটেছে ওই এলাকার মহিলাদের।

আরও পড়ুনঃ ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার থেকে মিউজিক ভিডিও- এই অভিনেত্রীর জীবনের গল্প হার মানাবে সিনেমাকেও! এখন তিনি সকলের পচ্ছন্দের

শিল্পী নবান সরকার বলেন, “এমন কাজ আগে কখনও করিনি। তবে তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী হাঁস তৈরির জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। তারপরে সঠিক আকার ও আয়তনের হাঁস তৈরি আয়ত্তে এনেছি। অনেক মহিলারা এই কাজ করে ক্রমশ স্বাবলম্বী হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই হাঁসগুলি তৈরি করে প্যাকেটজাত করা হয়েছে। সেগুলি কলকাতা থেকে গাড়ি পাঠানোর পরে চলে যাবে।” কলকাতার একটি সংস্থা একটি বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি ও নির্দিষ্ট আকার, আয়তনের হাঁস তৈরির কথা লিখেছিল সোশ্যাল মাধ্যমে। সেটি নজরে পড়ে সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা বালুরঘাটের বিপ্লবের। তিনি এই হাঁস তৈরি করতে পারবেন বলে তাঁদের জানান। তাঁর মতই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সকলের মত বিপ্লবও চাহিদা অনুযায়ী হাঁস তৈরি করে নমুনা তাদের পাঠিয়েছিল। সেই হাঁস পছন্দ হয় ওই সংস্থার। তারপর সেই সংস্থা থেকে সবুজ সংকেত পায় এই কারিগর।

শিল্পী বিপ্লব সরকার জানান, “উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করেছি। এখন কলেজে ভর্তি হব। আগে থেকেই খুঁটিনাটি জিনিস তৈরি করতাম। তারপরে সোশ্যাল মাধ্যমে এরকম পোস্ট দেখে উৎসাহী হই। আমার পাঠানো নমুনা তাদের পছন্দ হওয়ায় তাঁরা ২০০০টি হাঁসের বরাত দিয়েছেন। সেগুলি তারা আবার বাইরে রফতানি করবে। দিনে প্রায় ১০ টি হাঁস তৈরি করতে পারি। স্থানীয় মহিলাদের আরও বেশি করে কাজে নিযুক্ত করে তাদের স্বাবলম্বী করে তোলার ইচ্ছে আছে।” ইতিমধ্যেই প্রথম দফায় দুই হাজারটি হাঁস তৈরির বরাত পেয়েছেন তিনি। যেখানে প্রতি হাঁস পিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। রাজধানী শহর থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে পাইন কাঠ এসে পৌঁছাচ্ছে বালুরঘাটে। তারপর সেই কাঠ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে নির্দিষ্ট আকারে নিয়ে এসে হাঁস তৈরি করছেন পিতা ও পুত্র। শুধু হাঁস তৈরি করা নয়, তারপরে রয়েছে মসৃণ পলিশও। এই হাঁস কেউ এই ক্ষুদ্র কারখানা থেকে কিনতে চাইলে প্রতি হাঁস পিছু হাজার থেকে বারোশো টাকা দিতে হবে। এই হাঁস কলকাতা থেকে সৌখিন গ্রাহকদের জন্য বিদেশেও পাড়ি দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

সুস্মিতা গোস্বামী