কাটল শপথ জট৷

টানাপোড়েনে ইতি, দুই বিধায়ককে শপথ পাঠ করিয়ে কী বললেন বিধানসভার স্পিকার?

কলকাতা: শেষ পর্যন্ত বিধানসভাতেই নতুন দুই বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করালেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ফলে, গত প্রায় এক মাস ধরে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ নিয়ে চলা বিতর্কেও ইতি পড়ল৷

এ দিন দুই বিধায়কের শপথগ্রহণের জন্য বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়৷ যদিও এই অধিবেশন বয়কট করেন বিজেপি বিধায়করা৷ ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস৷ যদিও তিনি শপথ বাক্য পাঠ করাবেন না বলে গতকালই জানিয়ে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার৷ এ দিন অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ডেপুটি স্পিকার শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য স্পিকারের নাম প্রস্তাব করেন৷ তার পরই দুই তৃণমূল বিধায়কক শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার৷

আরও পড়ুন: হাথরস পদপিষ্ট কাণ্ডে স্বজনহারাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ রাহুলের, দোষীকে ধরিয়ে দিতে লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা

রাজ্যপালের সঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষের টানাপোড়েনে গত প্রায় এক মাস ধরে আটকে ছিল বরানগর এবং ভগবানগোলার দুই বিধায়কের শপথ৷ রাজ্যপাল চেয়েছিল দুই বিধায়ক রাজ ভবনে গিয়ে শপথ নিন৷ কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি অধ্যক্ষ৷ রাজ ভবনে যেতে রাজি হননি দুই বিধায়কও৷ উল্টে শপথ বাক্য পাঠ করাতে রাজ্যপাল যাতে বিধানসভায় আসেন, সেই দাবি তুলে বিধানসভা চত্বরেই ধর্নায় বসেন দুই নবনির্বাচিত বিধায়ক৷

এ দিন দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার অফিস গতকাল রাজভবন থেকে একটি চিঠি পায় রাত ৯.২২ মিনিটে, যেখানে উপাধ্যক্ষ কে শপথ পাঠ করানোর জন্য মনোনীত করা হয় রাজ্যপালের পক্ষ থেকে। সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে বলা হয়েছিলো যে বিধানসভা বা সংসদে সাংবিধানিক রীতি হিসাবে যদি কিছু মেনে চলা হয়, তাহলে সেটা আইনে থাক বা না থাক, তা রীতি অনুযায়ী মেনে নেওয়া যেতে পারে।

আমি জানতে পারি যে উপ নির্বাচনে জয়ী দুই বিধায়ক রাজ্যপালকে বিধানসভায় এসে শপথ বাক্য পাঠ করানোর জন্য অনুরোধ জানান। এই চিঠি আমাকেও তাঁরা পাঠিয়েছিলেন। পরিষদীয় মন্ত্রী আমার কাছে আবেদন করেন যাতে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে এই দুই বিধায়কের শপথ অনুষ্ঠান করা যায়। আমি সবকিছু বিবেচনা করে এই বিশেষ অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্ত নি‌ই। দুই বিধায়ক নির্বাচনে জয়ী হ‌ওয়ার পরেও বিধানসভার সদস্য হিসাবে শপথ নিতে না পারার কারণে, তাঁরা বিধানসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য হতে পারছেন না।

শপথগ্রহণের পর বরানগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল বিধানসভায় অধ্যক্ষ আমার শপথ বাক্য পাঠ করান। শেষ পর্যন্ত সেটাই হল। খুব ভালো লাগছে।’ ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার নাম না করে রাজ্যপালকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘জয় পরাজয়ের বিষয় নয়, বিষয়টা হচ্ছে মানসিকতার৷’