জঙ্গলমহলের তিন ছাত্রী

Child Marriage: ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়, জঙ্গলমহলের তিন কন্যার দাপটে রুখে গেল নাবালিকার বিয়ে

বাঁকুড়া: এক নাবালিকা স্কুল ছাত্রীর ‘বিয়ে রুখে’ দিয়ে সাহসিকতার পুরস্কার পেল দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের তিন ছাত্রী। অতি সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে ‘বিশ্ব কন্যাশ্রী দিবসে’ কলকাতার ‘ধনধান্য অডিটোরিয়ামে’ একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিভাগে রাজ্য স্তরের পুরস্কার পেল রাইপুরের পায়রাগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন ছাত্রী অনুপমা হেমব্রম, পারবী হেমব্রম ও অঞ্জলী মুর্ম্মু। শুক্রবার বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তরফে সংবর্ধনা জানানো হল ওই তিন কন্যাশ্রী ছাত্রীকে।

পায়রাগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘কন্যাশ্রী ক্লাবে’র তরফে নিয়মিত বাল্য বিবাহ বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচার হয়। আর তার সাফল্যও মিলতে শুরু করেছে। কন্যাশ্রী ক্লাবের তিন ছাত্রীর কাছে চলতি বছরের গত ফেব্রুয়ারি মাসে খবর আসে অভিভাবকদের তরফে এক নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন শুরু হয়েছে। কিন্তু বিয়েতে মত নেই ওই নাবালিকা ছাত্রীর।

আরও পড়ুন – RG Kar Rape and Murder Case: সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল হওয়ার উত্তর সপাটে দিলেন রচনা, ঋতুপর্ণা ও নিজেকে নিয়ে যা বললেন সাংসদ

বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষ ও কন্যাশ্রী ক্লাবকেও তা জানানো হয়। পরে ওই তিন কন্যাশ্রী ছাত্রী সংশ্লিষ্ট নাবালিকা ছাত্রীর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে। কম বয়সে বিয়ে দিলে কি সমস্যা হতে পারে তা জানায়, এমনকি আইনগত বাধার দিকটিও তাঁদের সামনে তুলে ধরে। এই অবস্থায় পিছু হঠতে বাধ্য হন ওই ছাত্রীর অভিভাবকেরা। ওই নাবালিকা ছাত্রী বিয়ে বন্ধ রেখে ফের পড়াশোনা শুরু করেছে বলেই জানা গিয়েছে।

এক নাবালিকার বিয়ে রুখতে পেরে খুশি ওই তিন কন্যাশ্রীও। বিয়ে নয়, ফের তাকে পড়াশোনার জগতে ফিরিয়ে আনাই তাদের কাছে ছিল মূল চ্যালেঞ্জ, আর তাতে তারা সফল বলেই জানিয়েছে। খুশি পায়রাগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পার্থসারথি সিনহা। তিনি বলেন, এই এলাকায় বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটেই। এই অবস্থায় তা বন্ধে যথেষ্ট উদ্যোগী কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যেরা। এই কাজ করে তিন ছাত্রীর পুরস্কার প্রাপ্তিতে তিনি গর্বিত বলেও জানান।

পায়রাগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের কন্যাশ্রীর নোডাল শিক্ষক সুব্রত পন্ডা বলেন, বিদ্যালয়ের কন্যাশ্রী ক্লাবে প্রতিমাসে একটি করে আলোচনাসভা ও সচেতনতামূলক প্রচার হয়ে থাকে। তার সুফল মিলেছে। ওই তিন কন্যাশ্রী নিজেদের উদ্যোগে বাল্যবিবাহ রুখে দিয়ে নজির গড়েছে। এই কাজ দেখে বিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা সচেতন হবে এবং এলাকার অভিভাবকদের সচেতন করতে ছাত্রছাত্রীরা উদ্যোগী হবে বলে তিনি মনে করেন।