উত্তর ২৪ পরগনা: সীমান্ত শহর বনগাঁয় এবার লোকসভা নির্বাচনে তিন বিশ্বজিৎ দাসের লড়াই দেখবে মানুষ। ভাবছেন এ আবার কী ভাবে সম্ভব? বাগদার বিধায়ক তথা বর্তমানে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীর নামই তো বিশ্বজিৎ দাস। তাহলে কী ভাবে হবে তিনজনের লড়াই!
পশ্চিমবঙ্গ লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ চতুর্থ দফা লাইভ
নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বনগাঁয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস হলেও, শুধু তিনি একা নন, এবার বিশ্বজিৎ দাস নামে আরও দু জন প্রার্থী হয়েছেন বনগাঁ লোকসভা থেকে। তাঁরা ইতিমধ্যে প্রতীকও পেয়ে গিয়েছেন। আর তাই স্বাভাবিকভাবে বনগাঁ লোকসভায় এবার তিন বিশ্বজিৎ দাসের লড়াই দেখার অপেক্ষায় মানুষ। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এটা ভোট কাটাকুটির নয়া ‘ছক’ হতে পারে মতুয়াগড়ে। মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ লোকসভায় গত লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। সেই সময় বিজেপির ‘তাস’ ছিল নাগরিকত্ব। এবারের লোকসভা নির্বাচনেও মতুয়া মন জয় করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কিন্তু এ নিয়ে রাজনৈতিক কচকচানি চলছে। জেলা নির্বাচন দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে ২১ জন প্রার্থী নমিনেশন জমা করেছেন। প্রত্যেকের নমিনেশন গৃহীত হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী ছাড়া অন্য যে দুজন বিশ্বজিৎ দাস নমিনেশন জমা করেছেন তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি হরিণঘাটায়। আর অন্যজনের বাড়ি গাইঘাটাতে।
হরিণঘাটার বিশ্বজিৎ দাস পেশায় ডেকোরেটারসের ব্যবসা করেন। নির্বাচনের কমিশনের তরফ থেকে তিনি নির্বাচনী প্রতীক পেয়েছেন ‘এসি’। সেই মতো তিনি ভোটের প্রচারের কাজ শুরু করেও দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। অপরদিকে, গাইঘাটার বিশ্বজিৎ দাস অবশ্য দীর্ঘদিনের সিপিএমের পার্টি সদস্য ছিলেন। সম্প্রতি, তিনি পার্টির সদস্য পদ ত্যাগ করেছেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল একবার অন্তত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ লোকসভা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ভাগ্যে জোটেনি, কিন্তু এবার সরাসরি তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ভোট ময়দানে নেমে পড়েছেন। নির্দল প্রার্থী হিসাবে তিনি লড়াই করছেন। ‘আলমারি’ চিহ্ন নিয়ে এবার তিনিও ভোট ময়দানে।
বিষয়টি নিয়ে বনগাঁর দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “আসলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে বিজেপি এই ধরনের ষড়যন্ত্র করেছে। শুনলাম এর মধ্যে একজন সিপিএমের নেতা নাকি রয়েছে। সত্যি এবার স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে রাম-বাম তত্ত্ব। তবে, বিজেপি যত চক্রান্ত করুক, কাজ হবে না এটা লিখে রাখুন। এবার বনগাঁয় পদ্মফুল নয়, জোড়া ফুল ফুটবে তা নিশ্চিত।”
যদিও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, “সবেতেই তৃণমূল বিজেপির দোষ দেখে। তৃণমূল দেখুক এটা ওঁদের কারও প্রার্থী কি না। বিজেপি এই ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। যদিও এই সব কিছুকে ছাপিয়ে এখন বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের মানুষ তিন বিশ্বজিৎ এর লড়াই দেখতে বেশ কৌতুহলী। শেষ হাসি কে হাসবেন তা অবশ্য সময় বলবে।”
রুদ্র নারায়ণ রায়