Tag Archives: burdwan news

Success Story: লকডাউনে কাজ হারিয়ে অনাহারে দিন কেটেছে, তাও হার মানেননি বৃদ্ধ দম্পতি, সংসার চালাতে দ্বিতীয় ইনিংসে পা

পূর্ব বর্ধমান: এই বয়সেও মনের জোরে, জীবনযুদ্ধ করছেন এই দম্পতি। ইচ্ছাশক্তির জোরে হাল ছাড়েননি বর্ধমান শহরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। বয়স যে কোনও বাধা নয়, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন বর্ধমান শহরের এই দম্পতি। একজনের বয়স প্রায় ৭০-এর কোঠায়, অপরজনের শরীরেও বয়সের ছাপ স্পষ্ট। তবুও এই বয়সে সংসার চালাতে সমান ভাবে পরিশ্রম করে চলেছেন তাঁরা। ব্যক্তির নাম চণ্ডী সরকার এবং স্ত্রীর নাম গীতা সরকার। আসল বাড়ি বরশুলে হলেও বর্তমানে তাঁরা বর্ধমান শহরের স্বস্তি পল্লী এলাকায় ভাড়া থাকেন।

গীতা দেবী ও তাঁর স্বামী বর্তমানে সংসার চালাতে বর্ধমান শহরের উল্লাস মোড় এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। তাঁদের জীবন সংগ্রামের কথা জানলে অবাক হবেন। চণ্ডীবাবু দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর বাস ও লরি চালানোর কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। লকডাউনের সময় কাজ চলে যায় তাঁর। করোনা অতিমারির সময় বেশ কিছুদিন অনাহারেও কাটে দিন। আর তারপরেই চণ্ডীবাবুর এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি শুরু করেন এই ঝালমুড়ির ব্যবসা।

আরও পড়ুন: শিক্ষারত্ন পেলেন বাঁকুড়া স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক, শিক্ষাক্ষেত্রে জয়জয়কার জেলার

চণ্ডীবাবু জানিয়েছেন, “প্রথম থেকেই সংসারের পরিস্থিতি খারাপ ছিল। এক বন্ধুর পাল্লায় পড়ে লরির ড্রাইভিং শিখে প্রায় ১৪ বছর বাস লরি চালিয়েছিলাম। কিন্তু লকডাউনের সময় কাজ চলে গিয়েছিল। লকডাউনের সময় এমন দিনও গিয়েছে খাবাপ জোটেনি আমাদের।”

জানা গিয়েছে ২০০০ টাকা এবং একটি ভাঙা সাইকেল দিয়ে এই ঝাল মুড়ির ব্যবসা প্রথম শুরু করেছিলেন তিনি। প্রথমে সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন। পরবর্তীতে বর্ধমান শহরের উল্লাস মোড়ের কাছে স্থায়ীভাবে ব্যবসা শুরু করেন দু’জনে। বর্তমানে ঝালমুড়ি বিক্রি করেই দিন যাপন করেন তাঁরা। সাইকেল ছেড়ে লোন নিয়ে এখন একটা টোটোও কিনেছেন তিনি। এখন টোটো নিয়েই চলে যাতায়াত এবং ব্যবসা।

এই ব্যবসা থেকেই মোটামুটি ভাবে সংসার চলে যায় তাঁদের। সন্ধ্যা হতেই তাদের ছোট্ট এই দোকানে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ে। ঝালমুড়ি ছাড়াও তাঁদের কাছে ঘুগনি চাট, আলু কাবলি, ইত্যাদি বিভিন্ন মুখরোচক খাবার পাওয়া যায়। বয়সের তোয়াক্কা না করে, জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে একসঙ্গে এই সমস্ত খাবার বিক্রি করেই দিন যাপন করছেন পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান শহরের এই দম্পতি।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী