নয়াদিল্লি: অবশেষে সব জল্পনার অবসান৷ নাহ! নতুন দল গড়ছেন না ‘ঝাড়খণ্ডের বাঘ’ চম্পাই সোরেন৷ বরং পূর্ববর্তী জল্পনা সত্যি করে যোগ দিচ্ছেন মোদি-শাহের দলেই৷ বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা জ্ঞাপন করে মঙ্গলবার ঘোষণা করলেন ঝাড়খণ্ডের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷
ঝাড়খণ্ডের ৬৭ বছর বয়সি আদিবাসী নেতা চম্পাই সোরেন মঙ্গলবার জানান, চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বের উপরে তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে৷
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা গত সোমবারই জানিয়েছিলেন, চম্পাই সোরেন অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন৷ তারপরে, আজ এল সেই ঘোষণা৷
চলতি বছরের শুরুর দিকে জমি কেলেঙ্কারি কাণ্ডে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন শিবু সোরেন পুত্র তথা জেএমএম প্রধান হেমন্ত সোরেন৷ পরে ইডির হাতে গ্রেফতার হতে হয় তাঁকে৷ সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসানো হয় দলের অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা চম্পাই সোরেনকে৷ কিন্তু, হেমন্ত সোরেনের মুক্তি নিশ্চিত হতেই ফের সরিয়ে দেওয়া হয় চম্পাইকে৷ মুখ্যমন্ত্রী পদে ফিরে আসেন হেমন্ত৷
চম্পাই সোরেনের দাবি, এই দ্বিতীয় দফার ক্ষমতা হস্তান্তরকালে দলের শীর্ষনেতৃত্বের তরফে তাঁর সরকারের প্রতি অনৈতিক আচরণ করা হয়৷ তাঁকে না জানিয়েই বাতিল করে দেওয়া হয় তাঁর সরকারের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের সমস্ত কর্মসূচি৷ এতে যারপরনাই অপমানিত বোধ করেছিলেন চম্পাই৷ তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত লাগে৷ তখনই দল থেকে বাড়ে দূরত্ব৷
আরও পড়ুন: ‘ওদের টার্গেট ছিল কোনও বডি পড়ে যায়,’ নবান্ন অভিযানকে দুষ্কৃতী আন্দোলন আখ্যা দিল পুলিশ
সিংভূম তথা বর্তমান ঝাড়খণ্ডে ‘ঝাড়খণ্ডের বাঘ’ নামে পরিচিত জনজাতির এই নেতা৷ ম্যাট্রিক পাশ করার পরেই যিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পৃথক রাজ্যের দাবিতে করা শিবু সোরেনের আন্দোলনে৷ দক্ষিণ ঝাড়খণ্ডে চম্পাই সোরেনের প্রভাব এককথায় অনস্বীকার্য৷ ১৯৯১ সালে প্রথম তিনি নির্দল প্রার্থী হিসাবে অবিভক্ত বিহারের সরাইকেলা আসন থেকে উপ নির্বাচনে জয়ী হন৷ চার বছর পরে ওই একই কেন্দ্র থেকে শিবু সোরেনের দল জেএমএম-এর টিকিটে ভোটে জেতেন৷ হারিয়ে দেন বিজেপির পঞ্চু টুডুকে৷ তবে ২০০০ সালে ঝাড়খণ্ডের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অনন্ত রাম টুডুর কাছে হেরে যান তিনি৷ ২০০৫ সালে অবশ্য তিনি ফের আসনটি পুনরুদ্ধার করেন৷
শিবু সোরেনের বিজেপির এনডিএর জোটে থাকাকালীন অর্জুন মুণ্ডা সরকারের মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন চম্পাই সোরেন৷ সময়টা সেপ্টেম্বর ২০১০ থেকে জানুয়ারি ২০১৩৷
পরে হেমন্ত সোরেন যখন ২০১৯ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ঝাড়খণ্ডে সরকার গঠন করেন, তখনও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন চম্পাই৷ সেই সময় খাদ্য ও পরিবহণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷