জলপাইগুড়ি: মহালয়া শুনতে আজও ভরসা সেই গম্ভীর সুর!মহালয়া আসতেই স্মার্টফোনের যুগেও হারিয়ে যেতে বসা রেডিও এর নস্টালজিয়ায় ভাসছে আম বাঙালি।
রেডিও সারাইয়ের দোকানের ভিড়ই বুঝিয়ে দেয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় চণ্ডীপাঠ ছাড়া মহালয়া অসম্পূর্ণ। হাতে গোনা ক’টা দিন পর মহালয়া। বাঙালি নস্টালজিক হয়ে পড়ে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়ার চন্ডী পাঠে।
আরও পড়ুন:ইঁদুরের যম, মাত্র ১০ টাকা খরচ করলেই ঘরের ত্রি সীমানায় থাকবে না, রইল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
বহু বছর ধরে একই চণ্ডীপাঠ শুনলেও আজও তার গুরুত্ব বা মাধুর্য এতটুকুও কমেনি। মহালয়ার আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি।
“বাজল তোমার আলোর বেনু” গান কিংবা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গম্ভীর গলায় বলা “আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর” লাইনটি শুনলেই যেন গায়ে কাঁটা দেয়। মা’এর আগমনের সুরের দোলায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
বতর্মানে ইউটিউব, এমপি থ্রি ফাইল , সিডি যাতেই সেই প্রোগ্রামের রেকর্ডিং থাকুক না কেন , মহালয়ার ভোরে আকাশবাণীর বিশেষ প্রভাতী অনুষ্ঠান শোনার মধ্যে হয়তো লুকিয়ে বাঙালির স্মৃতি -সত্তা। তাই আজও জলপাইগুড়িতে মহালয়ার ঠিক আগে রেডিয়োসেট সারানোর এত ব্যাকুলতা!
মহালয়ার সকালে রেডিওতে “চন্ডীশ্লোক” শোনার অভ্যেস অনেকেরই রয়েছে। তবে পুরোনো ঐতিহ্যকে আঁকড়ে রয়েছে এখনও বহু মানুষ।
সারা বছর এই সব দোকানে হাতেগোনা মানুষের আনাগোনা। কিন্তু, মহালয়ার টানে এই সময়টা চূড়ান্ত ব্যস্ততায় কাটায় জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা এলাকার রেডিও রিপেয়ারিং মাস্টার গৌতম দাস। এবছরের ছবিটাও একই।
মধ্য বয়স্ক থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব কম বেশি সকলেরই আনাগোনা এখন চোখে পড়ছে।এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি শহরে পুরোনা রেডিও রিপেয়ার গৌতম দাস জানান, ‘‘দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। সময় আধুনিক হয়েছে বটে.. কিন্তু, এখনও বহু মানুষ রেডিওর উপরেই ভরসা রাখেন।’’ সময় এগোলেও এখন পারিশ্রমিক কম৷ তাও তিনি আনন্দিত। তবে কিছুটা হলেও এখনও রেডিও চল রয়েছে বলেই তিনি জানান।
অন্যদিকে ক্রেতাদের বক্তব্য, বতর্মান যুগে মোবাইল – টিভি থাকলেও রেডিওতে মহালয়া শোনার পিছনে এক বিশেষ আমেজ রয়েছে। তাই মহালয়ার আগেই যেন রেডিওর কথা মনে পড়ে যায়। সেই রেডিও-ই সময়সরণী বেয়ে মহালয়ার আগে ফিরে আসে হারানো স্মৃতি নিয়ে৷ যে স্মৃতিতেই লুকিয়ে হয়তো আপন সত্তা। সব মিলিয়ে নস্টালজিয়া বোধহয় একেই বলে!
সুরজিৎ দে