![মোরব্বা ভালবাসেন না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। বাজারচলতি যে কোনও জ্যাম বা জেলির চেয়ে মোরব্বা পুষ্টিগুণে অনেক বেশি সমৃদ্ধ। বানাতে তেমন কিছু ঝঞ্ঝাটও পোহাতে হয় না। এ কারণে মোরব্বা তৈরির প্রচলন এখন নানা জায়গায় বাড়ছে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/murabba-2024-07-87d650ad9840b9d89e01ad230c272289.jpg)
![উত্তরপ্রদেশের মথুরার সরকারি ফল সংরক্ষণ কেন্দ্রেও মানুষ মোরব্বা তৈরির পদ্ধতি শিখছে। এখানে মানুষকে অনেক ধরনের মোরব্বা তৈরি করা শেখানো হচ্ছে। সাধারণত লোকেরা আমলকির মোরব্বা বেশি পছন্দ করে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/images-2-2024-07-49874bbcce43628b233d7f9e233d6238.jpeg)
![তবে এখানে আমলকি নয়, বেলের মোরব্বার কথা বলা হচ্ছে। যা এখন মানুষের নতুন পছন্দের মধ্যে উঠে আসছে। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও প্রমাণিত হচ্ছে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/murabba-1-2024-07-f3c91dee7e1b621f120ed97dddc6f4f4.jpg)
![আসলে এই বেলের মোরব্বা স্বাস্থ্যের জন্য বড়ই উপকারী। এতে আছে অনেক গুণ। সরকারি ফল সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রাঙ্গণে অবস্থিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই বিশেষ মোরব্বা তৈরি করা হচ্ছে। এই মোরব্বা কীভাবে তৈরি হয়, সেটাও আমরা তাদের কাছ থেকেই জেনে নেব।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/bael-2024-07-464e5391fd18ed8bc3c7556bf10b6eae.jpg)
![প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মিরচিলাল শর্মা লোকাল 18-কে বলেন, ‘‘মোরব্বা তৈরি করতে কাঁচা বেল লাগে। প্রথমে কাঁচা বেলের খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। মোরব্বা তৈরি করতে যে পরিমাণ বেল লাগবে, চিনিও ঠিক ততটাই দিতে হবে।’’](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/bael-2-2024-07-bc3eb4879c1deadd06006cda1fc0f25e.jpg)
![এরপর এর বীজ বের করা হয়। বেলগুলো গোল টুকরো করে কেটে জলে সেদ্ধ করতে হবে। এর পর চিনির সিরাপ তৈরি করতে হবে। সিরাপ তৈরি করার সময় সাইট্রিক অ্যাসিড দিতে হবে। অ্যাসিড যোগ করা সিরাপ জমাট বেঁধে যায় না।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/bael-3-2024-07-1818ba5a2e52bb43457f4a7ff8ce1b27.jpg)
![মিরচিলাল জানান, এরপর বেল চিনির রসে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া প্রায় তিন দিন চলে। এক সপ্তাহের মধ্যে বেলের মোরব্বা প্রস্তুত। মোরব্বাকে নষ্ট হতে না দিতে এতে সোডিয়াম বেনজয়েট যোগ করা হয়।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/bael-1-2024-07-c16f353b7a69270b659d67c4eb36d0cf.jpg)
![এই কারণে, বেলের মোরব্বা অনেক বছর ধরে নিরাপদ থাকে। তিনি জানান, এটি পেটের জন্য খুবই উপকারী। পেটের অসুখ, দুর্বলতা এবং ক্লান্তি দূর করে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/bael-4-2024-07-71448eff085168383e5f6f57d0c3c648.jpg)
বীরভূম: বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ি। সেই সিউড়িকে আজকে রাজ্য তথা দেশবাসীর সিংহভাগই চিনেছেন মোরব্বার দৌলতে।যেমন শক্তিগড়ের ল্যাংচা, বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানা, গুপ্তিপাড়ার কাঁচাগোল্লা বা কৃষ্ণনগরের সরভাজা ঠিক তেমনি সিউড়ির সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে মোরব্বার নাম।সিউড়ির মোরব্বা প্রেমীদের তালিকায় আছেন স্বয়ং উত্তম কুমার থেকে অনিল চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য থেকে লালু প্রসাদ যাদব, আছেন পিসি সরকার ও পিসি সরকার জুনিয়র।
প্রত্যেকে একবার হলেও চেখে গিয়েছেন সিউড়ির মোরব্বা।আবার অনেকে নিয়েও গিয়েছেন প্রিয়জনের জন্য।কিন্তু জানেন কি সিউড়ির এই মোরব্বার ইতিহাস? সালটা ছিল ১৭১৮। শোনা যায়, বীরভূমের রাজনগরের নবাব ছিলেন বদির উদজ্জামাল গিয়েছিলেন উত্তর ভারত ভ্রমণে। সেখানে গিয়েই মোরব্বার প্রেমে পড়েছিলেন নবাব। ভ্রমণ শেষে ফিরে আসার সময় সেখান থেকে মোরব্বা তৈরির কারিগর নিয়ে আসেন সঙ্গে করে। সিউড়িতে মোরব্বা তৈরির সেই শুরু।
আরও পড়ুনOld Temple History: হাজার বছরের পুরানো মন্দির, এলে ভক্তি বাড়বে, স্বাদ মিলবে ইতিহাসের, বাংলার কোথায়
স্বাধীনতার বহু আগে নবাবের সঙ্গে এসে প্রথম মোরব্বার ব্যবসা শুরু করেছিলেন সজনীকান্ত দে। সিউড়ির মালিপাড়ায় কুঞ্জবিহারী মিষ্টান্ন ভান্ডার এর নামে শুরু হয় প্রথম মোরব্বার দোকান।পরবর্তীকালে তার ছেলে দিগম্বর প্রসাদ দে সিউড়ির তিন বাজারে তৈরি করেন মোরব্বা মিষ্টান্ন মন্দির । ১৯৭৪ সালে তাদেরই বংশধর নন্দদুলাল দে সিউড়ির বাসস্ট্যান্ডে মোরব্বার দোকান করেন। নাম রাখা হয় ‘মোরব্বা’।
তারপর থেকেই এই দোকান ঐতিহ্য বহন করে চলেছে নবাবের প্রিয় মিষ্টির।বংশ পরম্পরায় চলছে এই দোকান। তবে একসময় শুধুই পাওয়া যেত চাল কুমড়োর মোরব্বা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই তালিকায় যোগ হয় যথাক্রমে বেল, শতমূলী, ন্যাশপাতি, আম, গাজর, পটল, লাল লঙ্কা, আরও কত কী।
সৌভিক রায়