Tag Archives: Railgate

Bangla Video: খাকি পোশাকে রেলগেটে দাঁড়িয়ে সকলের প্রাণ রক্ষা করে চলেছেন বৃদ্ধ, বদলে জুটছে কটুক্তি

পশ্চিম মেদিনীপুর: ভাল করে মানুষটাকে দেখুন তো? ছোটখাট চেহারা। গায়ে খাকি পোশাক, জামার অর্ধেক বোতাম নেই। এক-দুটো বোতাম আর সেফটি পিন দিয়ে আটকানো। বয়সও প্রায় ৬০-৬৫ পেরিয়েছে। হাতে একটি মোটা লাঠি নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন রেলগেটের সামনে। অসচেতন হয়ে কেউ গেট পারাপার করলেই তাঁকে বাধা দিচ্ছেন। না মানলে ধমকও দিচ্ছেন।

নিঃস্বার্থভাবে এমন কর্মকাণ্ড যিনি করছেন সেই বৃদ্ধের নাম বাদল গিরি। তাঁর একটাই লক্ষ্য, অসাবধানতাবশত কোনও মানুষের যেন কোনওরূপ জীবনহানি না হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা? কেউ তাঁকে পাগল বলে, কেউ আবার আঙুল উঁচিয়ে ধমকানি দেয়। তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের কাছে তিনি পাগল!

আর‌ও পড়ুন: কলকাতা ময়দান কাঁপাচ্ছে শান্তিপুরের শুভঙ্কর, চার ম্যাচে সাত গোল!

বৃদ্ধ বাদল গিরির বাড়িতে তার কেউ নেই। বয়স্ক এই ব্যক্তির ছেলে মারা যাওয়ার পর কিছুটা মানসিক বিকৃতি ঘটেছে। তবে যেভাবে তিনি সন্তানহারা হয়েছেন, তিনি চান না, আর কারোর পরিবারের কোনও ক্ষতি হোক। বেশিরভাগ দিন সকাল থেকে তিনি পায়ে হেঁটে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার এসে রেলগেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন। ঠিক যেন ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করেন। রেলগেট পড়লে কাউকে গলে যেতে দেন না। তখনই তাঁর দিকে ধেয়ে আসে কটূক্তি। কেউ কেউ আবার তো মারতে উদ্ধত হন। কেউ কেউ আবার পাগল বলে তাঁকে এড়িয়ে চলেন। যদিও এই বয়স্ক মানুষটির তাতে বেশ কষ্ট হয়। তাঁর আক্ষেপ, তিনি নিজের জন্য করেন না। মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে তাঁকে নানান কু-কথা শুনতে হয়।

বাদল গিরির বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানার আসদা এলাকায়। প্রসঙ্গত, বাদল’বাবুর ছেলে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৪ বছর বয়সে মারা যায়। তারপর থেকেই পারিবারিক কারণে কিছুটা মানসিক বিকৃতি ঘটে তাঁর। সারাদিন কেউ সামান্য বিস্কুট-চা খাওয়ালেই তাঁর চলে যায়। কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলেই মানুষের মঙ্গল করার চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। আবার পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরে রাতে রান্না করে একবেলা খেয়েই তাঁর পেট চালান।

রঞ্জন চন্দ