Tag Archives: Rashid Khan

Rashid Khan’s wife Joyeeta Basu Khan: প্রেমে বাধা হয়নি বেড়াজাল, রাশিদের ছন্দের দোসর স্ত্রী জয়িতাই, তাঁদের আনন্দ মুহূর্ত এখন স্মৃতির জলছবি

তখনও তিনি সঙ্গীতসাধক। তবে লব্ধ প্রতিষ্ঠিত হননি। অন্যদিকে হবু স্ত্রী এমবিএ পাঠরতা। এমনই এক মাহেন্দ্রক্ষণে ১৯৯০ সালে প্রথম আলাপ হয়েছিল রাশিদ খান এবং জয়িতার।
তখনও তিনি সঙ্গীতসাধক। তবে লব্ধ প্রতিষ্ঠিত হননি। অন্যদিকে হবু স্ত্রী এমবিএ পাঠরতা। এমনই এক মাহেন্দ্রক্ষণে ১৯৯০ সালে প্রথম আলাপ হয়েছিল রাশিদ খান এবং জয়িতার।

 

জন্মস্থান উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ থেকে কলকাতায় এসে মনেপ্রাণে বাঙালি হয়ে গিয়েছিলেন রাশিদ। মনও দিয়েছিলেন বাঙালিনীকেই। প্রেম থেকে দাম্পত্যের চৌকাঠে পা রাখতে বেশি সময় নেননি।
জন্মস্থান উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ থেকে কলকাতায় এসে মনেপ্রাণে বাঙালি হয়ে গিয়েছিলেন রাশিদ। মনও দিয়েছিলেন বাঙালিনীকেই। প্রেম থেকে দাম্পত্যের চৌকাঠে পা রাখতে বেশি সময় নেননি।

 

তাঁদের প্রেমে, ভালবাসায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বিভেদের বেড়াজাল। মাত্র ২৩ বছর বয়সে প্রেমিকা জয়িতাকে বিয়ে করেন রাশিদ। জীবনভর একে অন্যের হাত ধরে ছিলেন শক্ত করে।
তাঁদের প্রেমে, ভালবাসায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বিভেদের বেড়াজাল। মাত্র ২৩ বছর বয়সে প্রেমিকা জয়িতাকে বিয়ে করেন রাশিদ। জীবনভর একে অন্যের হাত ধরে ছিলেন শক্ত করে।

 

পরবর্তীতে এক আলাপচারিতায় রাশিদ বলেছিলেন স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়াই তাঁর জীবনের সেরা মুহূর্ত। অর্ধাঙ্গিনী জয়িতা তথা সোমা তাঁর জীবন পাল্টে দিয়েছে। তিনি ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।
পরবর্তীতে এক আলাপচারিতায় রাশিদ বলেছিলেন স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়াই তাঁর জীবনের সেরা মুহূর্ত। অর্ধাঙ্গিনী জয়িতা তথা সোমা তাঁর জীবন পাল্টে দিয়েছে। তিনি ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

 

বিবাহোত্তর জীবনে সোমা পরিচিত জয়িতা বসু খান পরিচয়ে। উস্তাদ রাশিদ খান অ্যাকাডেমি-র বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর তিনিই।
বিবাহোত্তর জীবনে সোমা পরিচিত জয়িতা বসু খান পরিচয়ে। উস্তাদ রাশিদ খান অ্যাকাডেমি-র বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর তিনিই।

 

গুয়াহাটি কটন কলেজের প্রাক্তনী, আদতে গুয়াহাটির মেয়ে সোমা তথা জয়িতা সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সক্রিয়।
গুয়াহাটি কটন কলেজের প্রাক্তনী, আদতে গুয়াহাটির মেয়ে সোমা তথা জয়িতা সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সক্রিয়।

 

রাশিদ এবং জয়িতার তিন সন্তান। সুহা, শাওনা এবং আরমান। তিন ভাইবোনই পা রেখেছেন তাঁদের বাবার দেখানো পথে।
রাশিদ এবং জয়িতার তিন সন্তান। সুহা, শাওনা এবং আরমান। তিন ভাইবোনই পা রেখেছেন তাঁদের বাবার দেখানো পথে।

 

সুহা এবং শাওনা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন উস্তাদ রাশিদ খান অ্যাকাডেমিতে। বাবার সঙ্গে পারফর্মও করেছেন তাঁরা। আরমান ইনস্টাগ্রাম সেনসেশন। তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত চর্চা করেন।
সুহা এবং শাওনা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন উস্তাদ রাশিদ খান অ্যাকাডেমিতে। বাবার সঙ্গে পারফর্মও করেছেন তাঁরা। আরমান ইনস্টাগ্রাম সেনসেশন। তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত চর্চা করেন।

 

রাশিদ এবং জয়িতার বিয়ের তারিখ ২ ডিসেম্বর। ৩২ বছরের দাম্পত্যজীবন কাটানোর পর রাশিদ পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে। কিন্তু তাঁর উপস্থিতি প্রতি মুহূর্তে আছে জয়িতারই পাশে। সুর, তাল, ছন্দের দোসর হয়ে। (সব ছবি: জয়িতা বসু খানের ফেসবুক পেজ থেকে)
রাশিদ এবং জয়িতার বিয়ের তারিখ ২ ডিসেম্বর। ৩২ বছরের দাম্পত্যজীবন কাটানোর পর রাশিদ পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে। কিন্তু তাঁর উপস্থিতি প্রতি মুহূর্তে আছে জয়িতারই পাশে। সুর, তাল, ছন্দের দোসর হয়ে। (সব ছবি: জয়িতা বসু খানের ফেসবুক পেজ থেকে)

Rashid Khan: রাশিদ খানের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত

Rashid Khan : রশিদ খানের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন Swagatalakshmi Dasgupta, দেখে নিন বাংলা নিউজ ভিডিও (Watch bangla news video)৷

Rashid Khan Passes Away : প্রয়াত উস্তাদ রাশিদ খান, সঙ্গীত জগতে ইন্দ্রপতন

সঙ্গীতের জগতে আরও এক ইন্দ্রপতন। পৃথিবী ছেড়ে অন্য সুরলোকে চলে গেলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান। মঙ্গলবার দুপুর ৩টে ৪৫ নাগাদ মাত্র ৫৫-তেই থেমে গেল তাঁর পথ চলা। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন গায়ক।

উস্তাদ রাশিদ খানের মৃত‍্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শিল্পী স্বাগতালক্ষী দাশগুপ্ত

উস্তাদ রাশিদ খানের মৃত‍্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শিল্পী স্বাগতালক্ষী দাশগুপ্ত

Ustad Rashid Khan Demise : শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ঘরানা থেকে বলিউড! ছক ভাঙতেন উস্তাদ রাশিদ খান, সুরে সুরেই অমলিন থাকবে তাঁর ম্যাজিক

কোনওভাবেই আর শেষরক্ষা হল না৷ পরিবার-প্রিয়জন হাজারো ভক্তদের প্রার্থনার পর তিনি আর ফিরলেন না৷ মাত্র ৫৫ বছরেই থেমে গেল সুরেলা কন্ঠ৷ প্রয়াত হলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান৷
কোনওভাবেই আর শেষরক্ষা হল না৷ পরিবার-প্রিয়জন হাজারো ভক্তদের প্রার্থনার পর তিনি আর ফিরলেন না৷ মাত্র ৫৫ বছরেই থেমে গেল সুরেলা কন্ঠ৷ প্রয়াত হলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান৷
মঙ্গলবার দুপুর ৩.৪৫ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান৷ বেশ কয়েকদিন ধরেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল৷ শিল্পীর প্রয়ানের খবর পেয়েই শোকস্তব্ধ দেশের সঙ্গীতমহল।
মঙ্গলবার দুপুর ৩.৪৫ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান৷ বেশ কয়েকদিন ধরেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল৷ শিল্পীর প্রয়ানের খবর পেয়েই শোকস্তব্ধ দেশের সঙ্গীতমহল।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত নিয়ে বিস্তর চর্চা থাকলেও বলিউড ও টলিউডের একাধিক সিনেমায় জনপ্রিয় গান গেয়েছেন উস্তাদ রাশিদ খান। প্রতিটি গান সকলের হৃদয়ে অমলিন হয়ে গেঁথে থাকবে আজীবন৷
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত নিয়ে বিস্তর চর্চা থাকলেও বলিউড ও টলিউডের একাধিক সিনেমায় জনপ্রিয় গান গেয়েছেন উস্তাদ রাশিদ খান। প্রতিটি গান সকলের হৃদয়ে অমলিন হয়ে গেঁথে থাকবে আজীবন৷
২০০৭ সালে ইমতিয়াজ আলি পরিচালিত 'জব উই মেট' ছবির 'আওগে জব তুম সাঁজনা'-গান গেয়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে বলিউডের বিশ্বদরবারে রাতারাতি পৌঁছে গিয়েছিলেন উস্তাদ রাশিদ খান৷ এই গানের মধ্যেই তিনি সকলের হৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন৷ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের দিকপাল উস্তাদ রাশিদের খানের কন্ঠে এই গান যেন সৃষ্টি করেছিল ভক্তদের মনে৷
২০০৭ সালে ইমতিয়াজ আলি পরিচালিত ‘জব উই মেট’ ছবির ‘আওগে জব তুম সাঁজনা’-গান গেয়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে বলিউডের বিশ্বদরবারে রাতারাতি পৌঁছে গিয়েছিলেন উস্তাদ রাশিদ খান৷ এই গানের মধ্যেই তিনি সকলের হৃদয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন৷ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের দিকপাল উস্তাদ রাশিদের খানের কন্ঠে এই গান যেন সৃষ্টি করেছিল ভক্তদের মনে৷
তারপর থেকে যেন বলিউডে নিজের একটি আলাদা জগৎ তৈরি করে নিয়েছিলেন ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান৷ ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'মর্নিং ওয়াক ' ছবিতে 'ভোর ভয়োঁ' গানটিও ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল৷ ছবি ফ্লপ করলেও শ্রেয়া ঘোষাল ও রাশিদ খানের এই গান আজও সকলের মনের খুব কাছের৷
তারপর থেকে যেন বলিউডে নিজের একটি আলাদা জগৎ তৈরি করে নিয়েছিলেন ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান৷ ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘মর্নিং ওয়াক ‘ ছবিতে ‘ভোর ভয়োঁ’ গানটিও ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল৷ ছবি ফ্লপ করলেও শ্রেয়া ঘোষাল ও রাশিদ খানের এই গান আজও সকলের মনের খুব কাছের৷
শাহরুখ খানের 'মাই নেম ইজ খান' ছবির ' আল্লা হি রহেম' গানটিও তাঁর গাওয়া৷ শঙ্কর-এহসান-লয়ের কম্পোজ করা গানটি তাঁর কন্ঠে অন্য এক ম্যাজিক সৃষ্টি করেছিল৷ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে বলিউডে তিনি কতটা সাবলীল, তা গানের মধ্য দিয়েই সকল শ্রোতাদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন৷
শাহরুখ খানের ‘মাই নেম ইজ খান’ ছবির ‘ আল্লা হি রহেম’ গানটিও তাঁর গাওয়া৷ শঙ্কর-এহসান-লয়ের কম্পোজ করা গানটি তাঁর কন্ঠে অন্য এক ম্যাজিক সৃষ্টি করেছিল৷ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে বলিউডে তিনি কতটা সাবলীল, তা গানের মধ্য দিয়েই সকল শ্রোতাদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন৷
গান মানে যে শুধু সুর-তাল-লয়ের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক, সেকথা চিরাচরিত ছক ভেঙেও একাধিকবার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ধ্রুপদী সঙ্গীতের দিকপাল৷ শুধু তাই নয়, রবীন্দ্রসঙ্গীতে তিনি কতটা দক্ষ ছিলেন, তা 'রাখো রাখো রে জীবনে'- দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন৷
গান মানে যে শুধু সুর-তাল-লয়ের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক, সেকথা চিরাচরিত ছক ভেঙেও একাধিকবার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ধ্রুপদী সঙ্গীতের দিকপাল৷ শুধু তাই নয়, রবীন্দ্রসঙ্গীতে তিনি কতটা দক্ষ ছিলেন, তা ‘রাখো রাখো রে জীবনে’- দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন৷
গান ছিল তাঁর সাধনা৷ অবশেষে সেই সাধনায় ছন্দপতন৷ ছক ভাঙতে গিয়ে নিজেক বারেবারে আবিস্কার করেছেন রাশিদ খান৷ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে বলিউড হয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতে তার অবাধ আনাগোনা সুরের মাধ্যমে আজীবন অমর হয়ে থাকবে দর্শকমনে৷
গান ছিল তাঁর সাধনা৷ অবশেষে সেই সাধনায় ছন্দপতন৷ ছক ভাঙতে গিয়ে নিজেক বারেবারে আবিস্কার করেছেন রাশিদ খান৷ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে বলিউড হয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতে তার অবাধ আনাগোনা সুরের মাধ্যমে আজীবন অমর হয়ে থাকবে দর্শকমনে৷

Ustad Rashid Khan Demise: ‘তিনি থাকবেন, সারাজীবনের মতো’ রাশিদ খানকে নিয়ে বললেন সৌরেন্দ্র-সৌমজিৎ

কলকাতা: মঙ্গলবার দুপুরে প্রয়াত হন কালজয়ী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী রাশিদ খান৷ তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন কাজে বারংবার তাক লাগিয়ে দিয়েছেন যে শিল্পীদ্বয়, সেই সৌরেন্দ্র-সৌমজিৎ এখন রয়েছেন রায়পুরে৷ মঞ্চে, গান গাইতে ওঠার আগে, রাশির খানের স্মৃতিতে ভাসলেন দুই শিল্পী৷

সৌরেন্দ্র বললেন, ‘‘দেখুন, আমরা মিউজিক্যালি এত ছোট যে ওঁর মতো একজন শিল্পীর মূল্যায়ন আমরা কী করব? ওঁর সম্পর্কে আমাদের সম্পর্ক বোধহয় ১৫ বছরের৷ উনি আমাদের অভিভাবক ছিলেন৷ আমাদের এত প্রশ্রয় দিতেন, আমাদের মিউজিককে এত ভালবাসতেন, আশীর্বাদ করতেন৷ আমারা যখন, যে রকম আবদার করেছি, কোনওদিন না বলেননি৷ আমরা ওঁকে বলেছি যে, খাঁ সাহেব আপনি অন স্টেজ আমাদের সঙ্গে কিশোর কুমারের গান করুন৷ সেটা আমরা রিহার্সাল করেছি, তিনি গেয়েছেন৷ বলেছি রবীন্দ্রনাথের গান করুন, অন স্টেজ, লাইভ৷ একমাস ধরে রিহার্সাল করে গেয়েছেন৷ আমরা ফৈয়জ আহমেদ ফৈয়জ গাইয়েছি৷ আর তিনিও ওঁর স্কুলের জন্য আমাদের বলেছেন, ওখানে একটা ওয়ার্কশপ করতে৷ এই আদানপ্রদানের মধ্যে দিয়ে আমরা যে কত কী শিখেছি, তার শেষ নেই৷’’

আরও পড়ুন – Ustad Rashid Khan Demise: সঙ্গীত জগতে ইন্দ্রপতন! পৃথিবী ছেড়ে অন্য সুরলোকে উস্তাদ রাশিদ খান, ৫৫-তেই সব শেষ

তাঁরা এখন কলকাতা থেকে অনেক দূরে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সৌরেন্দ্র বললেন, ‘‘আমরা এই মুহূর্তে রায়পুরে, একটা অনুষ্ঠানে এসেছি৷ আপনারা জানেন, এই যে দু’টি জগতের তারতম্য, একটা স্বাভাবিক জীবন আর একটা মঞ্চের জগত৷ আমরা প্রতিদিন সেই মঞ্চের জগতে প্রবেশের আগে, পণ্ডিত রাশিদ খাঁ সাহেবের গান ইয়ারফোনে শুনে তবে স্টেজে উঠি৷ এটা আমাদের একটা প্রথা বলতে পারেন৷ কোথাও একটা মনে হয়, এটা করলে বোধহয় আমাদের অনুষ্ঠানটাও ভাল হবে৷ আর কোথাও এই যে একটা অন্তরের সুর তাঁর গানে আছে, সেটা সবসময় বেঁধে দেন আমাদের৷ ফলে রাশিদ খাঁ সাহেব শুধু একজন ফেলো মিউজিশিয়্যান যাঁর সঙ্গে আমরা কাজ করেছি, তেমনটা নন৷ আমরা বিশ্বাস করি এটা অন্তর থেকে যে তিনি যতবার গান করেছেন, তত বার আমরা বুঝতে শিখেছি যে ঈশ্বর আছেন৷ ওঁর সুর, ঈশ্বরের সুর ছিল৷’’

সৌমজিৎ বলেন, ‘‘মানুষ হিসাবে ভীষণ প্রগতিশীল ছিলেন তিনি৷ যদি তিনি একজন শাস্ত্রীয় শিল্পী, তবুও তাঁর চিন্তার ভিতরে এ যুগের আধুনিকতা ছিল৷ বারবার বাঁধ ভাঙার দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ ওঁর সাম্প্রতিক কালেও উনি সাউন্ডস্কেপ নিয়ে এতটা ভাবনা চিন্তা করেছেন, যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কনসার্টেও নিজের মতো করে ভেঙে নতুন কিছু করার চিন্তা তিনি করেছেন৷ যে আমাদেরকে খুব উৎসাহ দিয়েছে৷’’

সৌরেন্দ্র বলেন, ‘‘আজকেও আমরা গান করব৷ উস্তাদজি নেই, শুধু মাত্র এই তাৎক্ষণিক সত্যিটা হয়ত আমাদের তাড়া করবে দীর্ঘদিন, কিন্তু, তিনি তাঁর গানের মধ্যে দিয়ে, সুরের মধ্যে আমাদের কাছে থেকে যাবেন আজীবনের মতো৷ উস্তাদজিও থাকবেন আমাদের সঙ্গে৷’’

Ustad Rashid Khan Obituary: শৈশবে অপছন্দ গানবাজনা, অজান্তেই সুরলোকের বরপুত্র মিয়াঁ তানসেনের এই উত্তরসাধক

পূর্বপুরুষদের উপাসনার ফসলই তাঁর কণ্ঠ। মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন রাশিদ খান। আলাপচারিতায় সব সময় অকুণ্ঠে বলতেন, শৈশবে সঙ্গীতচর্চায় কোনও আকর্ষণই বোধ করতেন না। উস্তাদ নিসার হুসেন খান এবং উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খান যাঁর পরিবারের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, সেই রাশিদ খান ছোটবেলায় পাড়াশোনার মতোই মুখ ঘুরিয়ে থাকতেন গানবাজনা থেকেও।

কিন্তু বেশিদিন পারেননি সঙ্গীতের অমোঘ টানকে উপেক্ষা করে থাকতে। যে বাড়িতে ব্রহ্ম মুহূর্ত থেকে রেওয়াজ শুরু হয়, সেই বাড়ির সন্তান রাশিদের কণ্ঠে একদিন যেন তাঁর নিজের অজান্তেই উঠে এল আলাপ। ধীরে ধীরে সঙ্গীতে সম্পৃক্ত হলেন তিনি। সপ্তসুরের অ‍ঞ্চলছায়া ঘিরে রেখেছিল এই মিয়াঁ তানসেনের ৩১ তম প্রজন্মের এই উত্তরসাধককে।

তাঁর জন্ম ১৯৬৮ সালের ১ জুলাই, উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁতে। কয়েক বছর পর চলে যান বম্বে, আজকের মুম্বই-এ। সেখানেই প্রাথমিক গানের তালিম শুরু কাকা উস্তাদ নিসার হুসেন খানের কাছে৷ ভর্তি হয়েছিলেন স্কুলেও৷ কিন্তু ভাল লাগত না স্কুলের পাঠ৷ এভাবে পথ চলত চলতেই ১৯৭৮-এ মাত্র ১০ বছর বয়সে দিল্লিতে প্রথম কনসার্টে পারফর্ম করেন তিনি। আটের দশকের চলে আসেন কলকাতায়। তাঁর কাকা উস্তাদ নিসার হুসেন খান সে সময় সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমিতে যুক্ত হন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন রাশিদ খানও। ১৯৯৪ সালে অ্যাকাডেমি-র সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে খ্যাত হন তিনি।

সেই যে কৈশোর থেকে তিলোত্তমায় নাড়া বেঁধেছিলেন রাশিদ, সেই গাঁটছড়া অবিচ্ছেদ্য। কলকাতার দিনযাপনে জড়িয়ে আছে রাশিদের সরগম।১৯৯৭ সালে কলকাতার এক বিখ্যাত সঙ্গীত সম্মেলনে মঞ্চের পাশে বসে পণ্ডিত ভীমসেন জোশীর গান শুনতে চেয়েছিলেন রাশিদ৷ কিন্তু অনুমতি দেননি উদ্যোক্তারা৷ ঘটনার অভিঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল হৃদয়৷ ঠিক করেছিলেন একদিন তিনিও প্রত্যাখ্যান করবেন৷ করেছিলেন৷ প্যারিসে কনসার্টের জন্য ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ওই বিশেষ সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের৷

তবে শুধু এই প্রত্যাখ্যানে নয়৷ পরবর্তীতে অন্য খাতে প্রশমিত হয়েছে সেই আঘাত৷ পণ্ডিত ভীমসেন জোশীর সামনে দীর্ঘ ঘরোয়া মজলিশে একের পর এক গান শুনিয়েছেন রাশিদ খান৷ ‘নজরানা’ পেয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা৷ শিখেছিলেন, কখনও বিনা পারিশ্রমিকে গান শোনাবে না কাউকে৷ উস্তাদ নিসার হুসেন খানের পাশাপাশি পণ্ডিত ভীমসেন জোশীকে নিজের গুরু বলে মেনে এসেছেন জীবনভর৷ নিজের স্বীকৃতির নেপথ্যে বার বার কুর্নিশ জানিয়েছেন উস্তাদ বিলায়েৎ খান, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, উস্তাদ আলি আকবর খাঁ, সেতারবিদ নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে পাওয়া আশীর্বাদকে৷ তাঁদের সকলের পরামর্শ ছিল, রেওয়াজ করে যাওয়া৷ জীবনভর সেই শিক্ষা লালনপালন করেছেন তিনি৷ ঐতিহ্যর বুনোটে রামপুর সহসওয়ান ঘরানার খিলানে যোগ করেছেন নিত্যনতুন অলঙ্কার৷

অগণিত অলঙ্কারে ভূষিত রাশিদ খান পরম নিষ্ঠায় আগলে রেখেছিলেন শিল্পীজীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বিনয়কে৷ জীবনের পড়ন্ত বেলাতেও বলেছেন ‘‘কী করে শিল্পী হয়ে গেলাম, নিজেই জানি না৷ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের করুণা এবং গুরুজনদের আশীর্বাদ ছাড়া সম্ভব হত না৷’’

আরও পড়ুন : সঙ্গীত জগতে ইন্দ্রপতন! পৃথিবী ছেড়ে অন্য সুরলোকে উস্তাদ রাশিদ খান, ৫৫-তেই সব শেষ

ধ্রুপদী সঙ্গীতের সাধক হলেও কোনও ছুঁতমার্গ ছিল না৷ সুরের সব অলিন্দে ছিল অনায়াস গতি৷ তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে ‘আওগে জব তুম সজনা’, ‘আল্লাহ কী রহেম’, ‘কাঁহে উজাড়ি মোরি নিদঁ’, ‘দীওয়ানা কর রহা হ্যায়ঁ’-এর মতো গান৷ উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতসাধক রাশিদ বলিউডি সিনেমার গানের জগতেও নিজের জঁরে ছিলেন অন্যতম একচ্ছত্র৷ রাশিদ খানের গাওয়া ছায়ানট রাগের ‘ঝনক ঝনক ঝন নন নন নন বাজে বিছুয়া’ বন্দিশটির গম্ভীর মন্দ্রতা সূচনায় এক সতেজ সুরদীপ্তি দেয়৷ চিরস্মরণীয় হয়ে আছে উস্তাদ শাহিদ পারভেজের সেতারের সঙ্গে তাঁর যুগলবন্দির রেকর্ড৷ তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত বহুলপ্রচলিত না হলেও এক কথায় অনন্য৷ সুরকৌশল ও অলঙ্করণ প্রয়োগ ছাড়া, কোনও অতিরিক্ত স্বরপ্রয়োগ না করেই কবির বাণীতে অবগাহন করে তাঁর কণ্ঠশৈলী৷

তাঁর কণ্ঠজাদুর অনুরণন অবিরল৷ ফুরায় যা তা ফুরায় শুধু চোখে৷ অন্ধকার পেরিয়ে যে আলোকে দুয়ার যায়, সেখানে জীবনকে জীবনবল্লভে রাখে রাশিদ খানের বন্দিশ৷ সেই আলিঙ্গন প্রাণমনে, নিবিড় আনন্দবন্ধনে৷

Ustad Rashid Khan Demise: আমি মর্মাহত, আমায় ভালবাসতেন, স্নেহ করতেন: রূপম ইসলাম

কলকাতা: মাত্র ৫৫ বছর বয়সেই প্রয়াত ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান ।  গত ২২ নভেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে শিল্পী প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে সম্প্রতি তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয়। সেখান থেকেই অবস্থার অবনতি। শিল্পীকে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই মঙ্গলবার বিকেল ৩টে ৪৫ মিনিটে প্রয়াত হন তিনি।

রাশিদ খানের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রূপম ইসলাম। জানালেন, ” আমি মর্মাহত। খুব ভালবাসতাম তাঁর গান। তিনিও আমায় ভালবাসতেন। স্নেহ করতেন। তাঁর স্মৃতির প্রতি আমার শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।”

১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রাশিদ খানের। তিনি রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। যে ঘরানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিব। রাশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে, যিনি ছিলেন রাশিদের দাদু। রাশিদের মামা গোয়ালিয়র ঘরানার উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ-সাহিবের থেকেও তালিম নিয়েছেন রাশিদ। মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাইলেও ফিউশন বা বলিউড এবং টলিউডের ছবিতে বহু জনপ্রিয় গান গেয়েছেন তিনি।

Rashid Khan Passes Away: ‘বাবা-ছেলের মতোই সম্পর্ক ছিল’! রাশিদ খানের প্রয়াণে শোকাহত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

কলকাতা: পৃথিবী ছেড়ে অন্য সুরলোকে পাড়ি দিলেন উস্তাদ রাশিদ খান। কঠিন রোগের সঙ্গে থামল লড়াই। মাত্র ৫৫-তেই থামল পথ চলা। ছাত্র রাশিদের চলে যেন অবিশ্বাস্য। দীর্ঘ দিন ধরে লড়ছিলেন হাসপাতালে। এক শীতের দুপুরে সেই পথচলা থামল।

ভাল হয়ে উঠবেন রাশিদ খান। ফিরে আসবেন সুস্থ হয়ে। সকলের মতো এমনটাই বিশ্বাস করেছিলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। নিউজ18 বাংলাকে তিনি বলেন, “গত একমাস ধরে যখন খবর নিয়েছিলাম, শুনেছিলাম খুব ভাল আছে। কিছু ক্ষণ আগে মুখ্যমন্ত্রী যখন ঘোষণা করলেন, তখন দুঃসংবাদটা জানতে পারলাম।”

তাঁরা দু’জনেই গানের মানুষ। সঙ্গীতের সঙ্গেই তাঁদের বাস। দুই শিল্পীর সমীকরণ সম্পর্কেও সকলেই অবগত। অনুজ রাশিদের কথা মনে করে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী বলেন, “রাশিদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কেমন, তা সকলেই জানেন। আমার নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। প্রায় বাবা-ছেলের মতোই সম্পর্ক ছিল আমাদের।”

আরও পড়ুন: ‘ভাইফোঁটা দিতাম ওকে, শেষবার দেখাটুকু হল না!’ রাশিদের চলে যাওয়ায় বিধ্বস্ত হৈমন্তী

আরও পড়ুন: সঙ্গীত জগতে ইন্দ্রপতন! পৃথিবী ছেড়ে অন্য সুরলোকে উস্তাদ রাশিদ খান, ৫৫-তেই সব

মঙ্গলবার বেলা ৩টে ৪৫ নাগাদ প্রয়াত হন উস্তাদ রাশিদ খান। বিগত বেশ কিছু দিন ধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন উস্তাদ রাশিদ খান। গত কয়েক বছর ধরেই প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি৷ মঙ্গলবার তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হয়। তখনই তড়িঘড়ি ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় তাঁকে৷ অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। রাশিদ চলে গেলেন। রয়ে গেল তাঁর সৃষ্টি, সুর, কণ্ঠ।