Tag Archives: Sunil Chettri

সুনীলের ৮৫ তম গোল, কিরঘিজ রিপাবলিককে হারিয়ে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ভারত

ইম্ফল: ত্রিদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মায়ানমারের বিরুদ্ধে একটি মাত্র গলে জয় পেয়েছিল ভারত। সেদিন গোল করেছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা। আজ মঙ্গলবার ভারত নেমেছিল কিরঘিজ রিপাবলিকের বিরুদ্ধে। এমনিতে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে ভারতের আজকের ড্র করলেই হয়ে যেত। কিন্তু ভারতের কোচ ইগর স্তিম্যাচ কথা দিয়েছিলেন ড্র নয়, জয়ের লক্ষ্যে নামবে তার দল। মনিপুরের মাঠে কানায় কানায় ভর্তি ছিল দর্শক।

খুমান লুম্পাক স্টেডিয়ামে দর্শকরা প্রতিমুহূর্তে ভারতীয় দলকে মোটিভেশন দিয়ে গেল। প্রথম থেকেই দাপট ছিল ভারতের। ৩৪ মিনিটের মাথায় গোল করে ভারতকে এগিয়ে দেন সন্দেশ ঝিংহান। ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ একটা মাপা ফ্রিকিক তোলেন। বাঁদিক থেকে উঠে এসে ডিফেন্ডার সন্দেশ বা পায়ের ভলিতে জালে জড়িয়ে দেন। নিখুঁত সেট পিস মুভ যাকে বলে।

ভারতের ডান দিক থেকে চাংতে, বাঁদিক থেকে আকাশ বারবার গতি বাড়িয়ে সমস্যায় ফেলছিলেন কিরঘিজ ডিফেন্ডারদের। সুরেশ এবং জিকসন মাঝখানে প্রচুর পরিশ্রম করলেন। ডিফেন্সে প্রীতম, আনোয়ার ছিলেন দুর্ভেদ্য। সেকেন্ড হাফ শুরু হওয়ার পর চাপ বাড়ায় কিরঘিজ রিপাবলিক। বেশ কিছু আক্রমণ তুলে আনে তারা। বেশ কয়েকবার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে ফ্রিকিক আদায় করে নেয়।

এরপর ভারতের কোচ ব্র্যান্ডনকে তুলে নিয়ে নিয়ে আসেন মহেশ সিং কে। নিয়ে আসা হয় রোহিত কুমারকে। শেষ ১৫ মিনিটে নামে সাহল সামাদ। আবার খেলার কন্ট্রোল নিয়ে নেয় ভারত। পরপর আক্রমণ করতে থাকে তারা। নিঃসন্দেহে বলা যায় জানুয়ারিতে হতে চলা এশিয়ান কাপের প্রস্তুতিতে এই দুটি ম্যাচ কিছুটা হলেও সাহায্য করবে ভারতকে।

একটা কম্বিনেশন তৈরি করার ব্যাপারে ভারতীয় দল যত একসঙ্গে খেলবে, তত বোঝাপড়া বাড়বে নিজেদের মধ্যে। এটাই প্রয়োজন ফুটবলে। শেষ দিকে রোশন এবং মেহতাব সিং কে দেখে নিলেন ভারতের কোচ। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দুরন্ত গতিতে ফুটবল খেলে গেল ভারত। ফিটনেস নিয়ে কথা হবে না।

পাশাপাশি বলতেই হবে এই ভারতীয় দল সহজে হার মান আর মানসিকতার নয়। ৮৪ মিনিটে পেনাল্টি পেল ভারত। মহেশের গতির সঙ্গে পেরে না উঠে তাকে ফাউল করে বসেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। ভারতের জার্সিতে এই নিয়ে তার ৮৫ তম গোল হয়ে গেল।

আজ ভারতীয় ফুটবলের সামনে স্বপ্নের হাতছানি! ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন সুনীল, সন্দেশরা

ইম্ফল: আজ রাতটা ভারতীয় ফুটবলের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে। ফুটবলের ত্রিদেশীয় কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আছে সুনীল ছেত্রীদের। কিন্তু হেরে গেলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে কিরঘিজস্তান। মায়ানমারের বিরুদ্ধে অনিরুদ্ধ থাপার একমাত্র গোলে জিতেছিল ভারত। তবে ফুটবলারদের সুযোগ নষ্ট চিন্তায় রেখেছে কোচ ইগর স্টিমাচকে।

মঙ্গলবার কিরঘিজস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে তাই এই সমস্যা কাটাতে মরিয়া তিনি। এই ম্যাচ ড্র করলেই ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হবে ভারতীয় দল। তবে কিরঘিজস্তানের বিরুদ্ধে জিতেই মাঠ ছাড়তে চান কোচ স্টিমাচ। তিনি বলেন, মায়ানমারের চেয়ে ধারেভারে অনেকটাই এগিয়ে কিরঘিজস্তান। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থানই তা বলে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন – CSK: এবারের আইপিএলে কতটা শক্তিশালী চেন্নাই এক্সপ্রেস? দেখে নেওয়া যাক এক নজরে

ফলে মঙ্গলবার ছেলেদের লড়াই সহজ নয়। গত ম্যাচে একাধিক সুযোগ তৈরি করেও আমরা তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ। এই ম্যাচে তার পুনরাবৃত্তি ঘটলে চলবে না। নিখুঁত ফুটবল মেলে ধরতে হবে। উল্লেখ্য, ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০৬তম স্থানে রয়েছে ভারত। আর কিরঘিজস্তানের অবস্থান ৯৪-এ। আইএসএলে ফাইনালে খেলা ফুটবলারদের বাইরে রেখেই মায়ানমারের বিরুদ্ধে দল সাজিয়েছিলেন স্টিমাচ।

একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন সুনীল ছেত্রী। ৯০ মিনিটই মাঠে ছিলেন ভারত অধিনায়ক। ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেয়েও স্কোরশিটে নাম তুলতে ব্যর্থ তিনি। সুনীল অবশ্য তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন। জানালেন, প্রতি ম্যাচেই গোল করার লক্ষ্যে মাঠে নামি। কিরঘিজস্তানের বিরুদ্ধেও তার কোনও পরিবর্তন ঘটবে না।

অফ-সাইড কিংবা পেনাল্টি না পাওয়া ম্যাচের অঙ্গ। তা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। ভুল শুধরে আগামী ম্যাচে আরও ভাল পারফরম্যান্স মেলে ধরাই আমার লক্ষ্য। সঙ্গে জুড়লেন, আমার মতো গোলের খিদে খুব কম ফুটবলারের রয়েছে। অতিশয়োক্তি নয়, এটা ব্যক্তিগত ধারণা। কেরিয়ারের শেষ দিন পর্যন্ত তা বজায় রাখতে চাই।

এদিকে চোট পেয়েছেন মনবীর সিং। তার জায়গায় ভারত নিয়ে এসেছে সাহাল আব্দুল সামাদকে। শেষ দুবারের সাক্ষাৎকারে কিরঘিজস্তানের বিপক্ষে একবার পরাজয় এবং একবার জয় আছে ভারতীয় দলের।

কোচ ইগরের চাকরি বাঁচাতে মরিয়া ভারতের ফুটবলাররা, নতুন শপথ সুনীলদের

#হানই: অবশেষে চিন্তা কমল ভারতীয় ফুটবল দলের। পাসপোর্ট সমস্যায় কলকাতায় আটকে পড়া সন্দেশ জিঙ্ঘন ও চিংলেনসানা সিংহের শুক্রবার ভিয়েতনামে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে ভারতীয় দলের ডিফেন্সর শক্তি বেড়ে গেল সন্দেহ নেই।

কোচ ইগর স্টিম্যাচের কাছে শর্ত রেখে দেওয়া হয়েছে এশিয়ান কাপে প্রথম ৮ দলের মধ্যে থাকতে হবে। বিদায় নিতে হবে ব্যর্থ হলে। সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ভারত খেলবে আগামী শনিবার। তিন দিন পরে মঙ্গলবার ভিয়েতনামের সঙ্গে খেলা। ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়ার মতে ২০২৩ সালের এএফসি এশিয়ান কাপের প্রস্তুতি হিসেবে এই দু’টি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ভিয়েতনাম দারুণ দল। সিঙ্গাপুরও ভাল। অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এই দু’টি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের কাছে। এর আগে জাতীয় দল শেষ খেলেছিল কলকাতার যুবভারতীতে।

আফগানিস্তান, হংকং, কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছিল ব্লু টাইগাররা। এবার দেখার ভিয়েতনাম এবং সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে এই দুটি ম্যাচে নিজেদের কতটা মেলে ধরতে পারে ভারত। নজর থাকবে দুই তরুন ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি এবং রওশন সিং এর ওপর। ঈশান পন্ডিতাকেও এবার বেশি সময় দিতে চাইবেন ক্রোয়েশিয়ান কোচ।

তালিকায় ভারতের থেকে ভিয়েতনাম কিছুটা এগিয়ে আছে। যদিও সেটা মাথায় রেখে লড়াই করতে নামবে না ভারতীয় ফুটবল দল। বিপক্ষের মাঠে নিজেদের সেরা খেলা তুলে ধরতে চায় ব্লু টাইগার বাহিনী।

ডুরান্ড ফাইনালে বাজিমাত বেঙ্গালুরুর, মুম্বইকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন সুনীলরা

বেঙ্গালুরু – ২

মুম্বই সিটি – ১

#কলকাতা: তিনি ভারতীয় ফুটবলের পোস্টার বয়। তার জায়গা নেওয়ার মতো ফুটবলার এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি ভারতে। ক্যাবিনেটে ঝলমল করছে ক্লাব ও দেশীয় ফুটবলের একাধিক ট্রফি ও পদক। সেখানে নেই ডুরান্ড কাপ! অধরা সেই ট্রফির স্বাদ পাওয়ার জন্য রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে নেমেছিলেন বেঙ্গালুরু এফসি অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী।

ডুরান্ড ফাইনালের দু’টি দলই অতীতে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের বাইরে সর্বভারতীয় কোনও টুর্নামেন্টে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে মরিয়া ছিল বেঙ্গালুরু ও মুম্বই। মহমেডান স্পোর্টিংকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে আসা মুম্বই কোচ ডেস বাকিংহাম জানিয়েছিলেন, ওদের আক্রমণভাগে সুনীল, রয় কৃষ্ণা ও শিবা শক্তি ভালো ফর্মে রয়েছে। তবে আমরা আক্রমণাত্মক খেলেই জিততে চাই।

বেঙ্গালুরু এফসি’র কোচ সাইমন গ্রেসন জানিয়েছিলেন, মুম্বই সিটি খুবই শক্তিশালী টিম। ওরা অনেক পাস খেলে। সেটা থামাতে হবে। আমরা যে কোনও মূল্যে জিততে চাই। ম্যাচের ১১ মিনিটে দুর্দান্ত গোল করে বেঙ্গালুরুকে এগিয়ে দিয়েছিলেন তরুণ স্ট্রাইকার শিবশক্তি। মিডফিল্ড বলের লড়াইয়ে এগিয়েছিল বেঙ্গালুরু।

কিন্তু মুহূর্তের ভুলে ৩০ মিনিটের মাথায় সমতা ফিরিয়ে আনে মুম্বই। গোল করেন আপুইয়া। দ্বিতীয়ারদের শুরু থেকে চাপ বাড়াতে থাকে বেঙ্গালুরু। সুনীল ছেত্রী নেতৃত্বে রয় কৃষ্ণ, ব্রুনো রামিরেজ, জয়েশ, প্রবীর দাসরা লিড নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে মুম্বই ডিফেন্সের ওপর। অবশেষে ৬১ মিনিটে সুনীলের কর্নার থেকে হেডে বেঙ্গালুরুকে এগিয়ে দেন আল্যান কোস্তা। কিছুই করতে পারেননি মুম্বইয়ের গোলরক্ষক।

দু মিনিট পরেই ডিফেন্ডার ফলকে তুলে নিয়ে স্প্যানিশ নোগুরেকে নামান বাকিংহাম। নিয়ে আসা হয় মেহতাব সিং কে। ৭৭ মিনিটে নোগুরের শট পোস্টে লেগে প্রতিহত না হলে আবার সমতা ফেরাতে পারত মুম্বই। ডিফেন্স শক্ত করার জন্য বেঙ্গালুরু নামিয়ে দেয় রোহিত এবং হীরা মন্ডলকে। মুম্বই নিয়ে আসে গুরকিরতকে। বেঙ্গালুরু ডিফেন্স সজাগ থাকায় আর বিপদ ঘটেনি।

অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছিল ৬ মিনিট। মুম্বাই শেষ পর্যন্ত লড়াই করল। স্টুয়ার্ট দুর্দান্ত একটা প্রচেষ্টা করেছিলেন শেষ মুহূর্তে। কিন্তু দিনটা ছিল বেঙ্গালুরুর। ক্যারিয়ারের প্রথম না জেতা ট্রফি জিতলেন সুনীল।

Sunil Chhetri : ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে হারিয়েই কলকাতা থেকে ডুরান্ড নিয়ে যেতে চান সুনীল ছেত্রী

#বেঙ্গালুরু: সঠিক সময়ে নির্বাচন না হলে এআইএফএফ’কে নির্বাসনের হুমকি দিয়েছে ফিফা। এমনকী অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্বও হারাতে পারে ভারত। এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। বেঙ্গালুরু এফসি’র হয়ে ডুরান্ড কাপ খেলতে কলকাতায় পৌঁছনোর আগে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে আমরা মাথা ঘামাতে চাই না। বরং নিজেদের পারফরম্যান্সের দিকেই ফোকাস করতে হবে।

কারণ এসব ব্যাপার ফুটবলারদের নিয়ন্ত্রণে নেই। যারা বিষয়টি দেখছেন, তাঁদের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়াই ভালো। তাঁরা নিশ্চয়ই ভারতীয় ফুটবলের উন্নয়নের স্বার্থেই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেবেন। জাতীয় দলে খেলা ফুটবলারদের আমি সাফ বলেছি, প্রতিনিয়ত নিজের উন্নতির দিকে লক্ষ্য রাখো! অন্যকিছু নিয়ে ভাবার দরকার নেই। মাঠে সেরাটা দেওয়াই আমাদের কাজ।

আরও পড়ুন – Hasin Jahan : মেয়ের জন্মদিনে নাকি ফুটপাতের জামা দিয়েছেন শামি! নতুন অভিযোগ হাসিন জাহানের

আপাতত বেঙ্গালুরু এফসি’র জার্সি গায়ে ডুরান্ড কাপই জয়ই পাখির চোখ সুনীল ছেত্রীর। ভারতীয় ফুটবলের আইকন বলেন, ডুরান্ড খুবই পুরোনো প্রতিযোগিতা। এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দারুণ সম্মানের বিষয়। দীর্ঘ ফুটবল কেরিয়ারে অনেক নামী-দামি ট্রফিই জিতেছি। কিন্তু কখনও ডুরান্ড কাপ জেতার সৌভাগ্য হয়নি। এবার এই প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়ার লক্ষ্যে নিজেকে উজাড় করে দেব।

২০১৩ সালে ভারতীয় ফুটবলে আত্মপ্রকাশ বেঙ্গালুরু এফসি’র। তারপর আই লিগ, আইএসএল জিতলেও ডুরান্ড কাপের স্বাদ পায়নি তারা। এবার নিজেদের দল নিয়ে আশাবাদী সুনীল। দেশের জার্সিতে সর্বাধিক গোলের মালিক বলেন, আমাদের দল বেশ শক্তিশালী হয়েছে। ম্যানেজমেন্ট সবরকমের সহযোগিতা করছে। ভাল ফল না হওয়ার কোনও কারণ নেই।

সতীর্থদের বলেছি, পেশাদারি মানসিকতা নিয়ে যে কোনও টুর্নামেন্টে জয়ের জন্য ঝাঁপাতে হবে।’ উল্লেখ্য, এটিকে মোহন বাগানের চার প্রাক্তন ফুটবলার রয় কৃষ্ণা, সন্দেশ ঝিঙ্গান, প্রবীর দাস ও জাভির সঙ্গে এবার চুক্তি করেছে বিএফসি। ফলে অনেকটাই বেড়েছে তাদের শক্তি ও ভারসাম্য।

Sunil Chhetri, FIFA documentary : ভারতের গর্ব সুনীল ছেত্রীকে নিয়ে এবার বিশেষ তথ্যচিত্র বানাচ্ছে ফিফা!

#কলকাতা: তিনি ভারতের গর্ব, বাংলার গর্ব এবং এশিয়ার গর্ব। সুনীল ছেত্রীর নাম কি শুনেছেন লিওনেল মেসি? কোন গ্রহের মানুষ সুনীল সেটা কি জানেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো? না জানাটাই স্বাভাবিক। এবার সেই সুনীল ছেত্রীর ওপর বিশেষ তথ্যচিত্র বানাতে চলেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফা। কলকাতায় এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারস খেলতে আসার আগে এই কাজ শুরু হয়েছিল।

আরও পড়ুন – Lionel Messi : খবর ভাইরাল! বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হলে আর্জেন্টিনার সব ফুটবলারদের গাড়ি উপহার দেবেন মেসি

বেঙ্গালুরুর বাড়িতে সুইজারল্যান্ড থেকে চার সদস্যের বিশেষ দল এসে শুটিং করেছে সুনীলকে নিয়ে। সাধারণত ফিফা সে সব ফুটবলারদের নিয়ে তথ্যচিত্র বানায়, যারা বিশ্বকাপ জিতেছে, অথবা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে বিশ্বকাপে। কিন্তু সেখানে বিশ্বকাপ দুরস্ত, নিয়ম করে এশিয়ান কাপ কোয়ালিফাই করতে পারে না ভারত।

ফুটবলে পিছিয়ে থাকা দেশ ভারত থেকে সুনীলের মত একজন ফুটবলারকে নিয়ে ফিফা তথ্যচিত্র বানাবে, নিজেই অবাক হয়েছিলেন সুনীল। ফিফার দল সুনীলের প্রথম স্কুল, ফুটবলে হাতে খড়ি, কলকাতার দুই বড় ক্লাবে খেলা, সুনীলের প্রেম এবং বিয়ে এবং কিভাবে এত বছর ভারতের সেরা ফুটবলার হয়ে রয়েছেন, সবকিছু নিয়েই তথ্যচিত্র বানাবে।

তবে ফিফার নিয়ম অনুযায়ী যতক্ষণ পর্যন্ত তথ্যচিত্র প্রকাশ না পাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই নিয়ে কথা বলা যাবে না। তাই সুনীল নিজে তথ্যচিত্রের ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। আসলে ফুটবলে ভারতবর্ষকে ঘুমন্ত দৈত্য বলা হয়। ১৯৫০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলে খেলার আহবান পেয়েছিল ভারত। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলাররা তখন খালি পায়ে খেলতেন। তাই বুট পড়ে খেলতে না পারার কারণে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে যেতে পারেনি ভারত।

কিন্তু নতুন করে জেগে উঠছে ভারতীয় ফুটবল। ১৩০ কোটির দেশ ভারত। এদেশে ক্রিকেটের মত জনপ্রিয় নয় ফুটবল। বাংলা, কেরল, গোয়া, পঞ্জাব, মনিপুর এবং মিজোরাম বাদে বেশিরভাগ রাজ্য ফুটবল নিয়ে চর্চা করে না। কিন্তু আইএসএল শুরু হওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে।

ফিফা জানে ভারত বিশাল ফুটবল বাজার হতে পারে। হয়তো দুটো বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই করবে ভারত। তখন থাকবেন না সুনীল ছেত্রী। কিন্তু তার হাত ধরেই যে অসম্ভবকে সম্ভব করার স্বপ্ন দেখছে ভারত সেটা জানে ফিফা।

Sunil Chhetri breaks Pele record : পেলের রেকর্ড ভাঙলেন, মেসির ঠিক পেছনেই সুনীল

#মেল: যে গতিতে তিনি এগিয়ে চলেছিলেন তাতে একদিন না একদিন পেলের রেকর্ড ভেঙে দেবেন সেটা জানা ছিল। ভারতীয় ফুটবলের জন্য বিশাল গর্বের খবর। আইএসএল করে ভারতীয় ফুটবল কতটা এগিয়েছে তার উত্তর নির্দিষ্টভাবে দেওয়া না গেলেও, সুনীল ছেত্রী ভারতীয় ফুটবলের হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা তাতে সন্দেহ নেই। বুধবার মালদ্বীপের মাঠে তাদের দর্শকদের সামনে তাদের দলকে ৩-১ গোলে হারানো সহজ ছিল না। কিন্তু সেই সুনীল ছেত্রী উদ্ধার করলেন ভারতীয় ফুটবলকে।

আরও পড়ুন – Dale Steyn IPL final : আইপিএল ফাইনালে ধোনির চেন্নাইকে এগিয়ে রাখলেন স্টেইন

পেলের রেকর্ড ভেঙে নাম তুললেন বিদেশি সংবাদমাধ্যমে। স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা খবর করেছে ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ককে নিয়ে। তবে সুনীল এসব নিয়ে অতিরিক্ত ভাবতে নারাজ। তার একমাত্র লক্ষ্য নেপালকে ফাইনালে হারিয়ে সাফ কাপ জয়। ৩৭ বছরেও যেন নিজেকে মেলে ধরার রাস্তাটা খুব ভাল করে চেনেন। নেপালের বিরুদ্ধে সাফ কাপে কেরিয়ারের ৭৭তম আন্তর্জাতিক গোল করেছিলেন তিনদিন আগে। ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলের গোলের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছিলেন ভারতীয় স্ট্রাইকার।

গোলের পর সুনীল বলেন ‘আমি সব সময় ধারাবাহিকতা খুঁজি। ঘটনাচক্রে সেটার উত্তরও পেলাম। কিন্তু সত্যি কথা বললে, সাফল্যের কোনও নীলনকশা হয় না। প্রতিটা দিন সেরা দিতে দিতেই হয়তো ধারাবাহিক হওয়া যায়। এটা ভেবে ভাল লাগছে যে, গোলের খরার মধ্যে পড়িনি।’ আর্জেন্টিনার হয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে গোল করেন মেসি দুদিন আগেই। আর্জেন্টাইন মহানায়কের আন্তর্জাতিক গোল সংখ্যা ৮০। সুনীল ছেত্রীর ৭৯।

হয়তো ফুটবলার হিসেবে তুলনা টানা উচিত নয়। প্রতিপক্ষ সমান নয়। কিন্তু তাও আন্তর্জাতিক গোল সংখ্যা সব ক্ষেত্রেই বিরাট সাফল্য। আন্তর্জাতিক গোল সংখ্যার ক্ষেত্রে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো সবার আগে (১১৫ গোল)। দ্বিতীয় স্থানে ইরানের আলি দায়ি। জাম্বিয়ার বিখ্যাত স্ট্রাইকার গডফ্রে চিতালুর সঙ্গে ৭৯ গোল করে যৌথভাবে ষষ্ঠ স্থানে ভারত অধিনায়ক।

এই টুর্নামেন্টের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি ভারতীয় দলের জন্য। প্রথম দুটো ম্যাচে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ড্র, তৃতীয় ম্যাচে নেপালের বিরুদ্ধে কোনমতে জয়, চতুর্থ ম্যাচে নিজেদের সেরা ফুটবল খেলেছে ভারত। চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে এই যাত্রায় চাকরি বেঁচে যাবে কোচ ইগর স্টিম্যাচের। আর বাঁচাবেন কে? ওই একজনই। সুনীল ছেত্রী।

SAFF India vs Nepal : আজ নেপালের বিরুদ্ধে অগ্নিপরীক্ষা সুনীলদের

 

#মেল: ক্রোয়েশিয়ান কোচ বলছেন আমি তো মাঠে নেমে গোল করতে পারব না। ওটা ফুটবলারদের করতে হবে। এত সুযোগ হাতছাড়া হলে জেতা সম্ভব নয়। খুব ভুল কথা বলেননি। কিন্তু এটাও ঠিক তার আমলে ১৯ ম্যাচের মধ্যে ভারতীয় দল জয় পেয়েছে মাত্র তিন ম্যাচে। কোচ হিসেবে এমন খারাপ রেকর্ড কেন তা তিনিই বলতে পারবেন। প্রতিযোগিতার শুরুটা খারাপ হলে তা কাটিয়ে ওঠা কঠিন। ফিফা ক্রমতালিকায় বাংলাদেশ ১৮৯ নম্বরে। শ্রীলঙ্কা ২০৫ নম্বরে। অথচ এই দুই দেশকেও হারাতে পারেনি ভারত।

কোথায় সমস্যা ? ফের ফুটবলারদের উদ্দেশে তোপ দেগে ইগরের ব্যাখ্যা, ‘‘মাঝমাঠের ফুটবলাররা সুনীলকে ভাল পাস দিতেই পারছে না। তা সত্ত্বেও হেডে দু’বার গোল করার সুযোগ ও পেয়েছিল। যদিও সফল হয়নি। সাধারণত সুনীল এরকম ভাবে গোল নষ্ট করে না। আমার মনে হয়, ম্যাচ জিততে না পারার হতাশা থেকেই এটা হয়েছে।’’ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে ভারতীয় দলের অন্দরমহলে অশান্তির আবহ!

শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কোচ ইগর স্তিমাচ বলে দিলেন, ‘‘মাঝমাঠ ও রক্ষণের ফুটবলারেরা খুব বেশি বল ধরতেই পারছে না। ওদের আরও দায়বদ্ধতা দেখাতে হবে। সুনীল ছেত্রীকে গোল করার জন্য পাস দিতে হবে।’’ এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, শেষ দু’টি ম্যাচে জিততেই হবে সুনীলদের। আজ, রবিবার মলদ্বীপে ভারতের সামনে দু’ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবলের শীর্ষ স্থানে থাকা নেপাল। যাদের বিরুদ্ধে এক মাস আগেই দু’টি ম্যাচ খেলেছিলেন সুনীলরা।

কাঠমান্ডুতে প্রথম ম্যাচে কোনও মতে হার বাঁচিয়েছিল ভারত। শেষ ম্যাচে ২-১ জিতেছিল। নেপালকে হারাতে না পারলে খেতাবি দৌড় থেকে ভারতের ছিটকে যাওয়া যেমন নিশ্চিত, তেমনই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে ইগরের ভবিষ্যৎ! সুনীল ছেত্রী ছাড়া গোল করার লোক নেই ভারতীয় দলে।

গোলের সামনে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন লিস্টন, মনবীর সিং – রা। প্রচুর পাস খেলা, বলের দখল রেখেও কাজের কাজ হচ্ছে না। এটাই চিন্তা বাড়িয়েছে কোচ ইগর স্টিম্যাচের। আজ বেঁচে থাকার লড়াইয়ে যাবতীয় ব্যর্থতা পেছনে ফেলে রেখে ভারতীয় দল কামব্যাক করতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
ভারত বনাম নেপাল (রাত ৯.৩০, ইউরোস্পোর্ট চ্যানেলে)।