Tag Archives: Tripura CM Manik Saha

Tripura: ত্রিপুরার স্বাস্থ্য পরিষেবার সার্বিক উন্নয়নে জোর, বার্তা মানিক সাহার

আগরতলা: স্বাস্থ্য পরিষেবার সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ জোড় দিয়েছে ত্রিপুরা সরকার। চিকিৎসার জন্য রোগীদের যাতে রাজ্যের বাইরে যেতে না হয় সেই জন্য় পড়শি রাজ্য়ের হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোড় দেওযা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে আগরতলা সরকারি মেডিক্য়াল কলেজে একাধিক সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে কলেজের ১৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন সমারোহে মানিক সাহা বলেন, ‘‘মানুষের জন্য কাজ করতে হবে চিকিৎসকদের।’’

আরও পড়ুন: পুজোর বাসনে কালচে ছোপ পড়ে যাচ্ছে? রইল মোক্ষম উপায়, নতুনের মতো ঝকঝকে হয়ে উঠবে

অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিভিন্ন পুরস্কার তুলে দেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী৷ পাশাপাশি ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের নবনির্মিত ওপেন জিম ও ব্যাডমিন্টন কোর্টের শুভ উদ্বোধন করেন তিনি। বন্যা দুর্গত মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমেরও প্রশংসা করেন।

আরও পড়ুন: বিদেশের মাটিতে সাইবার প্রতারণার শিকার, লাওসের মাটি থেকে থেকে উদ্ধার ৬৩৫ ভারতীয়

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে  তিনি ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের ভুয়ষী প্রশংসা করেছেন। তিনি ডাক্তারি পড়ুয়া এবং চিকিৎসকদের আর্থিক লাভের চেয়ে জনগণের সেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেন।

ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে কোনওরকম  সাংস্কৃতিক কর্মসূচি রাখা হয়নি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানিক সাহা চিরঞ্জিত দের আত্মত্যাগের কথাও স্মরণ করেছেন৷ সাম্প্রতিক বন্যার সময় অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে  তিনি প্রাণ হারান। ভূমিধ্বস এবং বাড়ি ধ্বসের কারণেই অধিক প্রাণহানি ঘটেছে।

মানিক সাহা জানিয়েছেন, তাঁরা সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মানিক সাহার কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন কেন্দ্র সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মোহন যাদবও সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতিতে ১০ কোটি টাকা এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ২০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা করেছেন।

বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে চিকিৎসকগণ বর্তমানে ত্রাণ শিবিরে আশ্রিত বিপন্ন মানুষের চিকিৎসা পরিষেবায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মানিক সাহা এই জন্য  চিকিৎসকদের প্রশংসা করেছেন৷  এই সময়ে বন্যা কবলিত মানুষদের চর্মরোগ, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নে আমরা সুপার স্পেশালিটি-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় সুবিধা প্রদান করছি। তবুও কিছু অংশ এখনও চিকিৎসার জন্য রাজ্যের বাইরে যাচ্ছেন। এতে প্রায়শই তাদের সম্পত্তি বিক্রি করতে হচ্ছে।’’

সেই জন্যই মেডিকেল পড়ুয়া ও চিকিৎসকদের সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার উপদেশ দেন মানিক সাহা। যাতে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরা এখানে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।

সেই জন্য হাসপাতালগুলোর পরিকাঠামোগত ও গুণগত উন্নয়নের জন্য জোড় দেওয়া হচ্ছে।  অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে৷ উপস্থিত ছিলেন কলেজের অন্যান্য সিনিয়র অধ্যাপক-সহ চিকিৎসক ও মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা।

এই অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের কর্মচারী সংঘের পক্ষ থেকে বন্যা ত্রাণে ৩০ হাজার টাকা এবং কলেজের ফ্যাকাল্টিদের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকার চেক মুখ্যমন্ত্রী ত্রান তহবিলে দান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এই আর্থিক সহায়তা তুলে দেওয়া হয়।

Manik Saha: রোজগার বন্ধ হওয়া নির্মাণ শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা 

ত্রিপুরাঃ বন্যা পরিস্থিতির সময়ে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া নির্মাণ শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এবার তাঁদের এককালীন সহায়তা হিসেবে ৪ (চার) হাজার টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় এই খবর দেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা।

আরও পড়ুনঃ পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের 

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘গত ১৯ অগাষ্ট ২০২৪ থেকে সমগ্র রাজ্যে অতিভারি বর্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যার কারণে অন্যান্য ত্রিপুরাবাসীর মতো রাজ্যের নির্মাণ শ্রমিকগণও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এতে প্রায় টানা ৮ দিন তাঁদের রুজি রোজগার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।’

তাঁদের এই শোচনীয় পরিস্থিতি থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ত্রিপুরা বিল্ডিং অ্যান্ড আদার কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড এর সেস ফান্ড থেকে যে সকল ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে নথিভুক্ত নির্মাণ শ্রমিক রয়েছেন তাদেরকে এককালীন ৪০০০/- টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

উল্লেখ্য, সারারাজ্যে নথিভুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা – ৪২,৯৮১ জন। তাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৭,১৯,২৪,০০০ টাকা। জেলা পর্যায়ে নথিভুক্ত নির্মাণ শ্রমিক রয়েছেন – পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা – ১৩, ১৪৮ জন, সিপাহীজলা জেলা – ৫,৮৯৯ জন, গোমতী জেলা – ৫,৬৯৮ জন, দক্ষিন ত্রিপুরা জেলা – ৪,১৩৩ জন, খোয়াই জেলা – ৪,৫২৯ জন, ধলাই জেলা – ৩,৫৯২ জন, উনকোটি জেলা – ৩,৮৬১ জন এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলা – ২,১২১ জন।

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থান থেকে জল নামতে শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত সেনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা কাজ করছেন নানা জায়গায়৷ এছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণ দেওয়া ও খাবার দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে৷ ত্রিপুরা রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, কেন্দ্রের তরফে তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। কেন্দ্র প্রয়োজনে আরও সাহায্য করবে। তবে পাহাড়ি এলাকায় পুনঃগঠনে সময় লাগবে।

Flood Control in Bengal: বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বদলীয় বৈঠকে সব দলের কাছে আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা: রাজ্যে বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণ করা সম্ভব হবে, এমনই প্রস্তাব ত্রিপুরা প্রশাসনের।

রেকর্ড পরিমাণ ভারী বৃষ্টির কারণে রাজ্যে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায়  রাজ্য অতিথিশালায় আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠকে এই আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রীর পৌরহিত্যে আয়োজিত এই বৈঠকের শুরুতেই সাম্প্রতিক বন্যায় মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়।

আরও পড়ুন- দেখলেও বিশ্বাস করতে পারবেন না! এই মুরগির সঙ্গে সেলফি তুলতে হাজির দূর-দূরান্তের মানুষ! কী আছে মুরগির?

 বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কাছে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং তাদের মূল্যবান পরামর্শ চেয়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সকলের কাছে সহযোগিতার আহ্বান রাখেন তিনি।

সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ১৯ আগস্ট থেকে সারা রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুধু দক্ষিণ জেলার অন্তর্গত বকাফায় ৪৯৩ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বন্যার দরুণ পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে যায়। ত্রিপুরার সব নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে কথা বলার সময় তিনি আমাকে হেলিকপ্টার এবং অতিরিক্ত এনডিআরএফ টিম পাঠানো সহ সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন। আমাদের প্রশাসন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে এবং উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন- খেতে ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো! হলুদ নয়, নীল এই কলা দেখলে কী করবেন?

বর্তমানে গোমতী নদী ছাড়া সব নদীই বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, ২ জন নিখোঁজ এবং ২ জন আহত হয়েছেন। এই ২৪ জনের মধ্যে ১৮ জন ভূমিধসে মারা গিয়েছেন, ৫ জন জলে ডুবে মারা যান এবং ১ জনের বাড়ি ধ্বসে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন,  “সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেপির প্রতিনিধি সহ বিরোধী দল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নিয়েছেন। আমরা বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছি। আমি তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছি। বৈঠকে উপস্থিত সকল দলের প্রতিনিধিরা তাঁদের পরামর্শ শেয়ার করেন এবং এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। সর্বদলীয় প্রতিনিধিরা মহকুমা স্তরেও সর্বদলীয় বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়েছেন। যা একটি খুবই ভাল পরামর্শ ছিল। এই বৈঠকে আমরা কোনো রাজনৈতিক আলোচনা করিনি। শুধু এই সংকট থেকে দ্রুত উত্তরণে সকলের ঐক্যের উপর গুরুত্ব দিয়েছি। এই বন্যায় রাজ্যে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা। যে পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এই বৈঠকে আমি ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছি। বন্যায় যে ছেলেমেয়েরা তাদের বইপত্র হারিয়েছে তারা শিক্ষা দফতর থেকে নতুন বই পাবে।”

এছাড়াও মানিক জানান, রোগ ব্যাধি এড়াতে সমস্ত শৌচালয়গুলির জন্যও ব্লিচিং পাউডার বিতরণ করা হচ্ছে।  তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, সারা রাজ্যে এখন ৫৫৭টি ত্রাণ শিবির রয়েছে, যেখানে ১.২৮ লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতর কাজ করছে।

ভারী বর্ষণে প্রায় ১,৬০৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গিয়েছে, ৫০১টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে এবং ২টি সাবস্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৈঠকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। আমরা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছি। বৈঠকের সার্বিক আলোচনা সন্তোষজনক বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী।

জানা গিয়েছে, প্রায় ২০০ জন ইঞ্জিনিয়ার মাঠে নেমে কাজ করছেন। তাছাড়া,  খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং এ পর্যন্ত গোমতী ও দক্ষিণ জেলায় ২০,০০০ খাবারের প্যাকেট এয়ার লিফটিং করা হয়েছে। এই দুর্যোগে মৃতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ২.৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানো যায় কিনা সেটা বিবেচনা করার জন্য বৈঠকে পরামর্শ দেওয়া হয়। এই আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।                     সর্বদলীয় বৈঠকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সহ রাজ্য সরকারের সচিব পি কে চক্রবর্তী, রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডে সহ পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Tripura Flood Update: ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী, ত্রিপুরায় আজ ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস?

আগরতলাঃ আকাশ পথে গোমতী ও দক্ষিণ জেলার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পর্যালোচনা মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহার। বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় সর্বক্ষণের জন্য কাজ করছে রাজ্য সরকার, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করছে এবং বন্যায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রাজ্য সরকারকে যা যা সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন সেটা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ত্রিপুরা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সেরাজ্যে ফুঁসে উঠেছে বহু নদী। যদিও ধীরে ধীরে কিছু নদীর জল নামছে। সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়ায় গোমতী বাদে সব নদীর জল বিপদসীমার নিচে চলে গিয়েছে। এদিকে, গত কয়েকদিনের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির জেরে ত্রিপুরায় মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ ২ জন। ১.২৮ জন মানুষ এখনও ঘর ছাড়া বন্যার জেরে।

গোমতী ও দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আগরতলার এমবিবি বিমানবন্দরে একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে চেপে বন্যা কবলিত অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করতে গোমতী জেলা এবং দক্ষিণ ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। উদয়পুরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা খিলপাড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও খিলপাড়া মার্কেট শেডে থাকা অস্থায়ী ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেন। কথা বলেন বিপন্ন বাসিন্দাদের সঙ্গে।

আরও পড়ুনঃ দিঘার এ কী সাংঘাতিক অবস্থা! লং উইকেন্ডে পৌঁছে চমকে গেলেন পর্যটকরা, জানলে আশঙ্কায় সিঁটিয়ে যাবেন আপনিও

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বন্যা কবলিত এলাকার পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরগুলি পরিদর্শন করছেন। পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মন্ত্রী এবং বিধায়করা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। আমরা সম্ভাব্য যা যা করার সবকিছু করছি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার একটানা কাজ করে চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারও আমাদের ব্যাপক সহায়তা করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। বন্যার ত্রাণ এবং উদ্ধার কাজে সহায়তা-সহ আমরা যা যা চেয়েছিলাম তারা আমাদের সবই দিয়েছেন।”

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার লক্ষ্যে অতিরিক্ত এনডিআরএফ টিম, হেলিকপ্টার এবং বোট মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যা-দুর্গত মানুষের মধ্যে খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যার দরুণ বিপন্ন মানুষের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করছে।” তিনি জানান, বন্যার কারণে অনেক লোক তাদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হারিয়েছেন। এতে চিন্তার কোনও কারণ নেই। ইতিমধ্যে প্রশাসনের আধিকারিকদের এই বিষয়ে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি।

পরিদর্শন কালে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান শীতল চন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলাশাসক রাভেল হেমেন্দ্র কুমার সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ। আকাশপথে উদয়পুর, করবুক, অমরপুর, শান্তিরবাজার, বিলোনীয়া, মাতাবাড়ি, মেলাঘর, চড়িলাম, বিশালগড় ও আগরতলা সহ বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গায় সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন।

সূত্রের খবএর, প্রায় ৫ হাজার কোটির মতো ক্ষতি হয়েছে ত্রিপুরায় বন্যার জেরে। তবে, সূত্রের খবর, গত কয়েক ঘণ্টায় ধীরে ধীরে পরিস্থিতি খানিকটা উন্নতির দিকে গিয়েছে। উল্লেখ্য, শুধু ১৯ অগাস্ট ২৮৮.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ত্রিপুরার ৮ বন্যা বিধ্বস্ত জেলায়। যা সর্বাধিক বর্ষণ বলে মনে করা হয়। এদিকে, ত্রাণের জন্য ইতিমধ্যে ৪০ কোটি টাকার প্যাকেজ কেন্দ্রের তরফে তুলে দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরাকে।

আবীর ঘোষাল 

North East Council Meeting: নর্থ ইস্ট কাউন্সিলের এ বারের বৈঠকের আয়োজন করতে চলেছে ত্রিপুরা

আগরতলা: আগামী ৩১ অগাস্ট থেকে ত্রিপুরায় এনইসি বৈঠকের আয়োজন হতে যাচ্ছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বৈঠক সম্পর্কিত বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা৷ রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের (এনইসি – নর্থ ইস্ট কাউন্সিল) গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। যা আগামী ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।  আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

এ বিষয়ে উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা সত্যিই একটি আনন্দের দিন যে এনইসি বৈঠক ত্রিপুরায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এর আগে আমরা নর্থ ইস্ট কাউন্সিলের বৈঠকে যোগ দিতে অসম এবং মেঘালয়ে যেতাম। সেই জায়গায় এবার ত্রিপুরার বুকে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং  মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া-সহ আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর,নাগাল্যান্ড, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপাল এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন। এই বৈঠকে আমরা ত্রিপুরা সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা, সীমান্ত এবং উন্নয়ন সংক্রান্ত একাধিক বিষয়াদি নিয়ে বিশদ আলোচনা করব। এর পাশাপাশি আমরা ত্রিপুরায় উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ড তুলে ধরব এবং অন্যান্য উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গেও নানা বিষয়ে আলোচনা করা হবে।’’

মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা জানান, ‘‘এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের যাবতীয় ব্যবস্থাদি খতিয়ে দেখার জন্য একটি পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন যা আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ’’ আর ত্রিপুরায় অনুষ্ঠিত হতে চলা এনইসি সভায় প্রচুর সংখ্যায় প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন : নতুন ক্লিনিক! ঢেলে সাজছে ভারতীয় রেলের তরফে চিকিৎসা পরিষেবা

প্রসঙ্গত উত্তর পূর্ব পরিষদের এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর পূর্ব ভারতের পরিকাঠামো বিকাশের পাশাপাশি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এর মধ্যে সংযুক্ত হয়ে থাকে। বিশেষ করে দেখার আন্তঃসীমানা বিষয়ে একাধিক রাজ্যের সম্পর্ক। এছাড়া রেল,  সড়ক ও বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণের কাজ চলছে নানা রাজ্যে। আগামী দিনে সেই কাজ যাতে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারা যায় তা নিয়েও আলোচনা হবে।