Tag Archives: vadimir putin

Modi And Putin Visit: মস্কো সফরে মোদি পেলেন সর্বোচ্চ বেসরকারি সম্মান, তালিকায় আছে আরও অনেক কিছু

মুম্বই: রাশিয়ার মাটিতে যুদ্ধরত ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনা নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে মোদি-পুতিনের মধ্যে৷ প্রধানমন্ত্রী মোদির মুকুটেও যোগ হল নতুন এক পালক৷ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘অর্ডার অফ সেন্ট অ্যান্ড্রু দ্য অ্যাপোস্টেল’ উপাধিতে ভূষিত করেন। মূলত রাশিয়া ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অভাবনীয় উন্নতির কারণেই এই সম্মান প্রদান করা হয়েছিল৷

আরও পড়ুন:মোদি-পুতিনের সাক্ষাৎ, প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফরে কোন কোন সুবিধা পাচ্ছে ভারত?

প্রধানমন্ত্রী মোদির দুই দিনের রাশিয়া সফর শেষ৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির যে বৈঠকটি হয়েছিল, তা দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও দুই দেশের যৌথ বৈঠক নিয়ে বেশ কয়েকটি দেশ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও মনে করা হচ্ছে এই সফরের পর দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে বন্ধন আরও শক্তিশালী হয়েছে।

এই সফরে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ছিল পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির বিস্তারিত আলোচনা৷ প্রসঙ্গত রাশিয়ার ইউক্রেনের উপর আগ্রাসনের পর প্রথমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ায় গেলেন৷ শোনা গিয়েছে মঙ্গলবার মস্কোতে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন৷ সেখানে ভারতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে দুই দেশের শান্তি পুনরুদ্ধার করতে তারা সবরকমভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত৷

আরও পড়ুন:পরাজিত ঋষি সুনক, বিদায়ী সম্ভাষণে কী বললেন প্রথম ভারতীয় বংশদ্ভূত ব্রিটিশ বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী?

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জানান, “শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য, ভারত সব উপায়ে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত৷ আমি সারা বিশ্বকে আশ্বস্ত করছি যে ভারত শান্তির পক্ষে৷”


যুদ্ধে ভয়াবহতার কথাও নিয়েও প্রধানমন্ত্রী তাঁর চিন্তা ব্যক্ত করেছেন৷ বিশেষ করে যুদ্ধে নিষ্পাপ শিশুদের মৃত্যু প্রসঙ্গে করে বললেন, “যুদ্ধ, সংঘাত হোক বা সন্ত্রাসী হামলা হোক – যখন প্রাণহানি হয় মানবতায় বিশ্বাসী সকল মানুষেরই তখন বেদনা হয়। কিন্তু যখন নিরপরাধ শিশুদের হত্যা করা হয় তখন তা হৃদয় বিদারক। সেই যন্ত্রণা অপরিসীম। এ নিয়ে আমি আপনার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনাও করেছি।”

এই সফরের ভারতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি – ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াইরত ভারতীয়দের মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ মেনে নিয়েছেন। সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি তাঁর বাসভবনে আয়োজিত এক ব্যক্তিগত নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত অনেকদিন ধরেই ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করা ভারতীয়দের দুর্দশা, নয়াদিল্লির জন্য উদ্বেগের বিষয় ছিল। খবর অনুযায়ী, যুদ্ধে চার ভারতীয়ের মৃত্যু হয়েছে৷ তারমধ্যে ১০ জন দেশে ফিরেছে। অনুমান করা হচ্ছে এখনও প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জন ভারতীয় রাশিয়ায় আটকে আছে।

এছাড়াও রাশিয়ার সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পেলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি৷ ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে ব্যতিক্রমী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘অর্ডার অফ সেন্ট অ্যান্ড্রু দ্য অ্যাপোস্টেল’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

Modi’s Moscow Visit: মোদি-পুতিনের সাক্ষাৎ, প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফরে কোন কোন সুবিধা পাচ্ছে ভারত?

মস্কো: ৮ এবং ৯ জুলাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর মস্কো সফরে সাক্ষাৎ করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে৷ পুতিনের আমন্ত্রণে ২২তম ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের জন্যই মোদির এই সফর। পাঁচ বছর পর মোদি সরকারি সফরে আবার রাশিয়া গেলেন৷ উল্লেখযোগ্য ভাবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর এটিই হল নরেন্দ্র মোদির প্রথম রাশিয়া সফর৷ এর আগে তার শেষ সফরটি হয়েছিল ২০১৯ সালে৷ তখন তিনি রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক শহরে একটা অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।

ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই সফর রাশিয়া ও ভারতের চিরাচরিত মৈত্রী সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷ আরও জানানো হয়েছে পুতিন ও মোদি উভয়ই এই দুই দেশের এই বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে তোলার লক্ষে কাজ করার জন্য একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন৷ এছাড়াও রাশিয়ান বার্তা সংস্থা TASS রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমান আন্তর্জাতিক সমস্যা ও নানা আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে৷

মনে করা হচ্ছে ভারত রাশিয়ার এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাশিয়া ও ভারতের উভয়ের জন্যই খুবই জরুরি৷ বিশেষ করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বিদেশের উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য ভারত তার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক পরিকাঠামোয় ব্যাপক বদল এনেছে৷ এই অবস্থায় রাশিয়া প্রতিরক্ষা এবং এনার্জির মতো নানা ক্ষেত্রে ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার প্রমাণিত হয়েছে। ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক অগ্রসরের গতিকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে অন্যদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ককে উন্নত করার দরকার৷

রাশিয়ার সহযোগিতায়, ভারতের কী কী সুবিধা পেতে পারে?

মধ্য এশিয়া থেকে নর্থ-সাউথ যোগাযোগ করিডর

রাশিয়ার বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ানের বাণিজ্য চুক্তির অ্যাকসেস পেতে পারে৷ (EU)

আফ্রিকায় যেখানে রাশিয়া তার উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, সেই সকল জায়গাতেও ভারত তার বাণিজ্যের বিস্তার ঘটাতে পারে৷

ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের আরও উন্নতি চায়৷ তবে ভারতের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র রাশিয়ার উপর নির্ভর না করে ভারত সমস্ত সুযোগ ব্যবহার করবে। শোনা যাচ্ছে, এনএসএ অজিত ডোভালও এই নিয়ে গ্রাউন্ড ওয়ার্কও শুরু করে দিয়েছেন৷

তবে এই মুহূর্তে ইউক্রেনের উপর আগ্রাসনের ঘটনায় রাশিয়া অনেকটাই কোণঠাসা৷ ফলে এই মুহূর্তে পুতিনের আরও বেশি করে ভারতের সাহায্য ও বন্ধুত্ব প্রয়োজন৷

আরও পড়ুন: প্রচারের শেষলগ্নে আত্মবিশ্বাসী ঋষি সুনক! সমীক্ষা কী একই কথা বলছে?

বর্তমানের আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতকে নিরপেক্ষভাবে পা ফেলতে যথেষ্ট কৌশল নিতে হচ্ছে৷ তবে ভারত-চিন সীমান্তে (LAC) উত্তেজনা কমানোর জন্য রাশিয়ার সাহায্য চাইবে৷

রাশিয়ার ভারত ভ্রমণ কোন কোন জায়গায় উল্লেখযোগ্য

ইরানের চাবাহার বন্দরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ইরানের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে বাইপাস করার জন্য।

ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যাপারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং পশ্চিমের অস্ত্র ও প্রযুক্তি অর্জন নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ রয়েছে৷ সেই নিয়েও রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলা দরকার

রাশিয়া থেকে ব্রেন ড্রেন, যা ভারতকে রাশিয়ান সরকারের অনুমতি ছাড়াই ভারত রাশিয়ান প্রযুক্তি কর্মীদের নিয়োগ করতে পারবে।

রাজস্ব এবং প্রভাবের ক্ষতি এড়াতে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার চুক্তি প্রস্তাব করার সম্ভাবনা রয়েছে৷

ইউক্রেনের যুদ্ধ, আফ্রিকার অর্থনৈতিক উদ্বেগ এবং গাজা সংঘাতের সমাধান সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিকে নিয়ে  আলোচনা করা হতে পারে।

আরও পড়ুন:পরাজিত ঋষি সুনক, বিদায়ী সম্ভাষণে কী বললেন প্রথম ভারতীয় বংশদ্ভূত ব্রিটিশ বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী?

বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সোমবার মন্তব্য করেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফরের ফলে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক অসাধারণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সংবাদ সংস্থা ANI এর রিপোর্ট অনুযায়ী “এই সফরে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি হল, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ব্যাপকভাবে বেড়েছে৷ শীর্ষনেতৃত্বের স্তরে, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি পুতিনের সরাসরি কথোপকথনের ফলে এই সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পেয়েছে৷”