হুগলি: পান্ডুয়া মণ্ডলাই গ্রামে সঠিক কবে পুজো শুরু হয়েছিল তা সকলেরই অজানা। তবে মনে করা হয় আনুমানিক প্রায় ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছে ‘পথের মা’। দীপান্বিতা অমাবস্যায় সাজিয়ে তোলা হয় মাকে। ১০০ ভরি সোনা ও ৫-৭ কেজি রুপোর অলংকারে ভূষিত হন দেবী।
পান্ডুয়া মণ্ডলাই গ্রাম-সহ আশেপাশে মানুষের কাছে এই মা খুব জাগ্রত। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসে মায়ের কাছে পুজো দিতে। জানা যায়, পান্ডুয়ার মণ্ডলাই একদা ছিল জনশূন্য এলাকা। এই গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যেত কঙ্ক নামে নদী। সেই নদী তীরেই ছিল শ্মশান। কথিত আছে সেই শ্মশান ছিল তন্ত্রসাধকদের পীঠস্থান। সেখানেই এক তন্ত্র সাধকের হাত ধরে এই কালী পুজোর শুরু হয় বলে লোকশ্রুতি রয়েছে। ওই কাপালিক এক রাতের মধ্যে কালীমূর্তি তৈরি করে পুজো করতেন এবং সেই রাতেই বিসর্জন দিতেন। সবটাই করতেন লোক চক্ষুর আড়ালে। তবে হঠাৎ এক বছর এক গৃহী লোক কাপালিকের এই ক্রিয়াকলাপ দেখে ফেলে। তারপরে তার হাতে পুজো সমস্ত কিছু সমর্পণ করে চলে যান কাপালিক। সেই সময় থেকে তিনি পুজো করতেন। কালক্রমে সেই কঙ্কনদীর পাড়ের শ্মশানে জনবসতি তৈরি হয়েছে। হয়েছে পাকা রাস্তা। আর সেই রাস্তার ধারে পুজো হয় পথের মায়ের।
আরও পড়ুন: কালীপুজোর সন্ধেয় ফের রেল দুর্ঘটনা! বাতিল রাজ্যের বহু ট্রেন, যাত্রীদের প্রবল ভোগান্তি
জনশ্রুতি আছে গ্রামের সর্বস্ব বিপদ মা মাথায় করে রক্ষা করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাই মায়ের নেই কোন মন্দির। বর্তমানে এই পুজো মন্ডলাই বারোয়ারি পথের কালীমাতা পুজো কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়। পুজায় বলিপ্রথা চল আছে। প্রত্যেক বছর দীপান্বিতা অমাবস্যা হয় মায়ের পুজো, মানসিক করা বহু মানুষ দণ্ডি কাটেন। মণ্ডলাই-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বহু মানুষ এখানে আসেন পুজো দিতে। পরদিন অন্নকূটে অংশ নেন কয়েক হাজার মানুষ।সেদিনই হয় মায়ের বিসর্জন।
পুজো কমিটির সভাপতি শুভঙ্কর নন্দী জানান, এই মা খুব জাগ্রত। মায়ের মাথার উপরে কোন মন্দিরে ছাদ নেই। ফাঁকা জায়গাতেই থাকেন মা কালী। আমাকে পাঁচ থেকে সাত কেজির উপর ও ১০০ কোটি সোনার অলংকার পড়ানো হয়।