মুর্শিদাবাদ: মিষ্টি বিভিন্ন রকমের হয়। পুর ভরা পোস্তো বা রসকদম্ব হতে পারে, বা বিভিন্ন রকমের সন্দেশ হতে পারে। মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যান্য মিষ্টির মতোই বিখ্যাত এই রসকদম্ব মিষ্টি। সুলতানি আমলের এই মিষ্টির দাম ৭ থেকে ১০ টাকা। ভেতরে রস থাকে, তার ওপরে চাঁছির গোল আকৃতির মিষ্টি তৈরি করে পোস্তোর প্রলেপ দেওয়া হয়। যার নাম রসকদম্ব বা পোস্তোর মিষ্টি।
এই মিষ্টির জয়যাত্রার শুরুটা কিন্তু খুব একটা সুন্দর হয়নি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মিষ্টি ভিসা পেয়েছে। অনেক মিষ্টি ঠাকুর, ভক্তির হাতে ধরেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে রসকদম্ব জনপ্রিয়তায় এখনও অনেক এগিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন জেলাগুলির পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের এই রসকদম্ব পাড়ি দিচ্ছে বাংলাদেশেও। কদম ফুলের মতো দেখতে এই মিষ্টির ভিতরে থাকে ছোট রসগোল্লা। তার উপরে থাকে ক্ষীরের মোটা প্রলেপ। সারা গায়ে জড়ানো থাকে পোস্ত মাখানো চিনি।
মিষ্টি বিক্রেতারা জানান, রসকদম্ব নামের মিষ্টিটি তার অমৃত সমতূল্য স্বাদের জন্য প্রায় মুর্শিদাবাদ জেলার সমার্থক হয়ে গিয়েছে। দুই বঙ্গে তার সমান জনপ্রিয়তা। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং পূর্ববঙ্গের রাজশাহী জেলা রসকদম্বের জন্য বিখ্যাত।
জনশ্রুতি রয়েছে, সুলতান হুসেন শাহের আমলে মালদহ যখন গৌড় নামে পরিচিত ছিল সেই সময়ে এই গৌড়ে আসেন চৈতন্য মহাপ্রভু। কেলিকদম্ব বৃক্ষের নীচে তিনি রূপ অর্থাৎ রূপ গোস্বামী এবং সনাতন অর্থাৎ সনাতন গোস্বামীকে দীক্ষা দান করেন। এই কেলিকদম্ব বৃক্ষের নাম থেকেই মিষ্টিটির নাম হয় রসকদম্ব। রসকদম্ব দেখতে অনেকটাই কদম ফুলের মতো এবং ভিতরে মিষ্টি রসে ভরপুর। বৈষ্ণবরা এই ঘটনাকে সত্য মনে করেন এবং রসকদম্ব তাঁদের কাছে অমৃতের মতো। যদিও ঐতিহাসিকেরা এই ঘটনাকে সত্য বলে মনে করেন না।
কৌশিক অধিকারী