ট্রাফিক সঞ্জয়

Rathtala Accident: ‘ভালবাসার’ ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণই কেড়েছে তাঁর প্রাণ! ব্যস্ত রথতলায় আর দেখা মিলবে না সঞ্জয়ের!

উত্তর ২৪ পরগনা: অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক রথতলা এলাকায় যান চলাচলের ছবি থাকলেও, নেই সেই চেনা মুখ। ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরাও যেন কিছুটা ভারাক্রান্ত। প্রিয়জন হারানর ব্যথা যেন এখনও ভুলতে পারছেন না তারা। কামারহাটি রথতলা এলাকায় ট্রাফিক সঞ্জয়কে চিনত না এমন লোক নেই বললেই চলে। রোদ ঝড় জল বৃষ্টিতে ট্রাফিক সামলানোই নেশা ছিল এই সঞ্জয় দাস ওরফে প্রিয়দশ সরকারের। কিছুটা পাগলাটে গোছের হলেও রথতলার ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে কোনও খামতি রাখত না সে। সবাই তাকে সঞ্জয় পাগলা বলেই চেনে।

বুধবার রাতে মদ্যপ বাস চালকের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ যায় এই সঞ্জয়ের। আর তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এই সঞ্জয়কে ঘিরে নানা পোস্ট চোখে পড়েছে নেটাগরিকদের। আর তারপরেই এবার প্রকাশ্যে আসল ঘটনার মুহূর্তের সিসিটিভি ফুটেজ। বেপরোয়া বাস চালক কিভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সঞ্জয়ের উপরে চড়িয়ে দিলেন বাস তার হার হিম করা দৃশ্য দেখে অনেকেই শিউরে উঠছেন। জানা গিয়েছে মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন ওই বাস চালক। এরপরেই এলাকাবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন সঞ্জয় কে হারিয়ে। চোখের জল ট্র্যাফিকের দায়িত্ব সামলানো কর্মীদেরও।

আরও পড়ুন:রাতের স্টেশনে এ কী কাণ্ড, ট্রেন এসে দাঁড়াতেই যুবক সোজা চলে গেলেন ট্রেনের নীচে!…তারপর যা হল 

কারণ সঞ্জয় যে তাদের নিত্য সঙ্গী ছিল। গুরুত্বপূর্ণ এই রথতলা এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে নিঃস্বার্থভাবে বিটি রোডে ট্র্যাফিকের দায়িত্ব সামলাতে দেখা যেত সঞ্জয় কে। কামারহাটি পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লীর বাসিন্দা সঞ্জয় এর বাড়িতে রয়েছে অসুস্থতার কারণে শয্যাশায়ী মা। কিছুদিন আগেই মারা গিয়েছে ভাই। এই পরিস্থিতিতে সঞ্জয় চলে যাওয়ায় কী হবে ওই বৃদ্ধা মায়ের ভবিষ্যৎ তা নিয়েই এখন উদগ্রীব স্থানীয় এলাকাবাসীরা। পুলিশ প্রশাসন কে সঞ্জয়ের মায়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন বেলঘরিয়া এলাকার মানুষজন। তার ট্র্যাফিক সামলানো নেশা দেখেই পৌরসভার তরফ থেকে তাকে সামান্য কিছু অর্থ সাহায্য করা হত বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন:দেওয়াল লিখনে ‘তু তু ম্যায় ম্যায়’! ভোটের বাজারে ফিরল সুপারহিট ছড়া-ব্যঙ্গচিত্র-টিপ্পনি, দেখুন

পুলিশের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় কোথাও থেকে সিভিক এর ড্রেস জোগাড় করেছিল এই ট্রাফিক সামলানোর কাজ করার জন্য। সেই ড্রেস পড়েই কর্মরত অবস্থায় প্রাণ গেল তার। এদিন তার শেষকৃত্তে উপস্থিত ছিলেন রথতলা এলাকার ট্রাফিকের দায়িত্ব সামলানো কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশ আধিকারিকেরাও। মদ্যপ বাস চালক শিব হালদার কে ইতিমধ্যেই পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ৩০৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চোখের জলে বেলঘড়িয়া বিদায় দিল প্রিয় “ট্র্যাফিক সঞ্জয়” কে। তবে সঞ্জয়ের মৃত্যু প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল বেপরোয়া মদ্যপ চালকদের ক্ষেত্রে আরও কত কড়া হতে হবে প্রশাসনকে!
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

Rudra Narayan Roy