স্থূলতা আজ প্রায় সকলেরই অন্যতম সমস্যা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই সমস্যার সম্মুখীন মানুষ। এর পিছনে বড় কারণ আমাদের লাইফস্টাইলের লুকিয়ে। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ, অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া ও শারীরিক পরিশ্রম কম, এই তিন কারণেই মূলত বাড়তে থাকে ওজন।কেউ তাই পুজোর আগে ওজন কমাতে ছুটছেন জিম তো কেউ মন দিচ্ছেন ডায়েটের কাট-ছাটে। তবে জানেন কী আমাদেরই আশেপাশে এমন কিছু জিনিস আছে যা চটপট ওজন কমানোর জন্য জিম-ডায়েটকে দশ গোল দেবে।এমনই একটি মহার্ঘ্য সবজি হল শসা! হ্যাঁ, সস্তার এই সবজি নিঃসন্দেহে জনপ্রিয় ও স্বল্পমেয়াদী একটি খাদ্য। তবে বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের মতে এই শসা দিয়েই কিন্তু আপনি অল্প সময়েই কমিয়ে ফেলতে পারেন বাড়তি মেদ।নিউজ 18 কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিখ্যাত ডায়েটিশিয়ান কামিনী কুমারী বলেন, “অনেক ব্যক্তি অতিরিক্ত ওজন কমানোকে একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ বলে মনে করেন কারণ তাঁরা সঠিক পদ্ধতি গ্রহণ করেন না। তাই তাঁদের চেষ্টা প্রায়ই ব্যর্থ প্রমাণিত হয়। কিন্তু বিশেষ পদ্ধতি নিলে খুব সহজে ও কম সময়ে ওজন কমানো সম্ভব।”পুষ্টিবিদ বলছেন, “আপনি যদি শসা দিয়ে এই প্রস্তাবিত ডায়েটটি খুব সঠিকভাবে অনুসরণ করেন তবে আপনি মাত্র ৭ দিনেই ৭ কেজি পর্যন্ত শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে পারেন সহজেই।”তবে এক্ষেত্রে বুঝতে হবে, শসার ডায়েট মানে শুধু শসা খাওয়া নয়। অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে শসা খাওয়া হয়। এই ডায়েটে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, চর্বিহীন মাংস, মুরগির মাংস, মাছ, বাদাম এবং পনির এবং শসা খাওয়ার উপর জোর দেওয়া হয়।একইভাবে এই ডায়েট পদ্ধতিটি বলে “যখনই খিদে পাবে তখনই একটি শসা খান”। পেটের চর্বি কমাতে এবং দ্রুত ওজন কমাতে অনেকেই এই ডায়েট ট্রাই করে থাকেন।তবে অনেকের মনে সন্দেহ জাগে যে এই ডায়েট পদ্ধতি তাঁরা অনুসরণ করবেন কিনা? কোন সমস্যা, পুষ্টির ঘাটতি ইত্যাদি হবে কি? এই বিষয়ে আগে বিশদে জেনে নেওয়া জরুরি।শসা সাধারণত পুষ্টিকর এবং ক্যালোরি কম একটি সবজি। কিন্তু শসায় প্রোটিন, চর্বি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব রয়েছে। তাই শসাকে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে রাখতে আমাদের অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে এটিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যেগুলি আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।শসার ডায়েট কি ওজন কমানোর জন্য কার্যকর? এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে শসা ডায়েটে রাখলে এটি গ্রহণের ফলে খুব কম ক্যালোরি খরচ হবে এবং সাময়িক ওজন হ্রাস হয় দ্রুত। প্রায় ৬ টি শসা, কয়েকটি মুরগির টুকরো, একটি ডিম এবং কিছু শাকসবজি প্রতিদিন শরীরকে মোট প্রায় ৮০০ ক্যালোরি দিতে পারে।শসা কোলেস্টেরল এবং সুগার নিয়ন্ত্রণ করে : ডাক্তার মতে, শসাতে ৯৫ শতাংশ জল থাকে, তাই এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতেও সহায়ক। শসা শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। শসাতে রয়েছে ইথানল যা রক্তের গ্লুকোজ কমায়। যেহেতু পেটের চর্বি সরাসরি রক্তে শর্করা এবং কোলেস্টেরলের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই শসা একইসঙ্গে এই দুটি রোগ কমিয়ে পেটের চর্বি কমায়।শসা প্রায় ক্যালোরি-মুক্ত। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় এগুলি যোগ করা স্বল্পমেয়াদী ওজন কমাতে অবশ্যই সাহায্য করবে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ওজন কমার পর স্বাভাবিকভাবে শসা খাওয়া শুরু করলে তা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।ফোলাভাব দূর করবে- পেটে চর্বি জমে থাকার কারণে গ্যাস ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যা বাড়ে। শসা শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। শসার বীজ শরীর থেকে অতিরিক্ত জল ও ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে খুবই সহায়ক। শসার বীজ পেটের মাংসপেশিকে শিথিল করে।কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য প্যানেসিয়া – পেটের আলসারও ফোলাভাব সৃষ্টি করে। যখন আপনার পরিপাকতন্ত্র দুর্বল থাকে, তখন আপনার শরীর অতিরিক্ত চর্বি দিয়ে ভরে যায়। শসায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার ও জল থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এতে পেটের মেদ কমবে।ডাক্তাররা সুপারিশ করেন যে ওজন কমাতে সফল হতে এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি চালিয়ে যেতে চাইলে শসার সঙ্গে গোটা শস্য, অন্যান্য আরও শাকসবজি, ফল, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং চর্বিযুক্ত মাংস সমৃদ্ধ সুষম খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করুন।ডিসক্লেইমার: এই খবরের সঙ্গে সম্পর্কিত তথ্য নিউজ 18 বাংলা নিশ্চিত করে না। বিশেষত আপনার সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধি করাই আমাদের এই প্রতিবেদনের মূল উদ্দেশ্য। আমরা বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট থেকে আপনার জন্য এই ধরনের তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। এই সংক্রান্ত চূড়ান্ত জ্ঞানের জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞের মত নেওয়া কাম্য।
