পুরুলিয়া: “বিপিন বাবুর কারণ সুধা মেটায় জ্বালা মেটায় ক্ষুধা। মরা মানুষ বাঁচিয়ে তোলে এমনি যে তার যাদু”… সুরা প্রেমী মানুষদের কাছে আদর্শ মহানায়ক উত্তম কুমারেরসিনেমার এই গান। কারণ তাদের সুরা ছাড়া একদমই চলে না। সকাল , দুপুর, রাত সুরা পানেই মত্ত থাকেন তারা। তবে আপনি যতই সুরা প্রেমী হন না কেন জেলা পুরুলিয়ার এই গ্রামে মদ্যপ অবস্থায় প্রবেশ করতে পারবেন না আপনি। যদি কোনও কারণে মদ খেয়ে চলেও গিয়েছে, তাহলেও একটা মারও মাটিতে পড়বে না। তার উপর তো রয়েছে জরিমানা। পাশাপাশি তুলে দেওয়া হবে পুলিশের হাতে।
কী…! শুনেই কেমন যেন অবাক লাগছে তো? না এমনই ঘটনা ঘটছে পুরুলিয়ার ঝালদা দু-নম্বর ব্লকের হিরাপুর-আদ্রাডি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুয়ারসিনিতে। একেবারে ব্যানার টাঙিয়ে মদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করল গ্রামবাসীরা। সেই সঙ্গে জুয়া, ঝান্ডির বিরুদ্ধেও করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। দুয়ারসিনি মহিলা সমিতির সঙ্গে সাধারণ মানুষের এই আন্দোলনের ফলে ৩-৪ দিন আগে থেকে গ্রামে দুটি মদের ঠেক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবুও থেমে থামেননি গ্রামবাসীরা। ইতিমধ্যেই কোটশিলা থানায় বেআইনি মদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ধনতেরাসে কী গয়না কেনা শুভ? কোন গয়নার কোন ডিজাইন ট্রেন্ডিং? কেনার আগে জানুন
গ্ৰামের মহিলাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলা বিজ্ঞান মঞ্চ। এ প্রসঙ্গে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির জেলা সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো বলেন, নেশার দ্রব্য বন্ধ করতে দুয়াসিনি গ্রামের মহিলারা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা খুবই ভাল উদ্যোগ। ফলে আগামীদিনে এই ধরনের উদ্যোগ অন্যান্য গ্ৰামের মহিলারাও নিতে আগ্রহী হবেন। এ প্রসঙ্গে গ্রামবাসীরা বলেন, গ্রামে দুটি মদের ঠেক রয়েছে।
মদের নেশায় পুরুষরা কার্যত নিঃস্ব হচ্ছিলেন। হাতে পয়সা না থাকায় সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছিল। এছাড়া মদ খাওয়ার কারণে পারিবারিক অশান্তি লেগে থাকত। পুলিশ ও আবগারি দফতরকে বলেও সুরাহা হয়নি। তাই তারা এভাবে পথে নেমেছেন। এই গ্রামের মহিলারা পুলিশকে সাফ জানিয়েছেন, এভাবেও যদি বেআইনি মদ বিক্রি বন্ধ না তাহলে আগামী দিনে তারা আন্দোলনের পথে হাঁটবেন।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি