আবেগপ্রবণ পোস্টের মাধ্যমে নিজের বাবার কেরিয়ারকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি

Viral: ৩ দশকের মুদির দোকান থেকে ‘অবসর’ বাবার, স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ছেলের পোস্টে নেটিজেনদের চোখে জল

ঔরঙ্গাবাদ: চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা তো শোনা যায়ই। কিন্তু নিজের ব্যবসা থেকে অবসর নেওয়ার কথা কি কেউ শুনেছেন কখনও? বিষয়টা বেশ অন্য রকম না? আসলে এই অনন্য পন্থা অবলম্বন করেছেন ঔরঙ্গাবাদের এক ব্যক্তি। আবেগপ্রবণ পোস্টের মাধ্যমে নিজের বাবার কেরিয়ারকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি পারিবারিক মুদির দোকান থেকে অবসর নিয়েছেন ওই ব্যক্তির বাবা।

প্রায় তিন দশক ধরে মন-প্রাণ দিয়ে পরিশ্রম করে পারিবারিক মুদির দোকানটিকে তিলে তিলে বড় করে তুলেছিলেন। আর সেই প্রসঙ্গেই কলম ধরেছেন পুত্র ওয়াহিদ মোমিন। ফেসবুকে নিজের বাবার এই যাত্রার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। গর্বের সঙ্গে জানিয়েছেন যে, “আজ আব্বা নিজের কিরানার দোকান থেকে  অবসর নিলেন। যদিও এর জন্য তিনি একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। প্রায় ৩৩ বছর আগে তিনি মুদির ব্যবসায় আসেন। তার আগে অবশ্য তিনি একটি পানের দোকান চালাতেন। এরপর একটি দোকান ভাড়া নিয়ে মুদির দোকান শুরু করেছিলেন।”

কীভাবে বাবার এই মুদির দোকান তাঁদের পরিবারকে বাঁচার রসদ জুগিয়েছে, সেটাও তুলে ধরেছিলেন ডা. ওয়াহিদ। জানান যে, বছরের প্রায় ৩৬৫ দিনই দোকান খোলা থাকত। তবে শুধু ইদ উপলক্ষে ২ দিন বন্ধ থাকত। এই দোকানই তাঁদের পরিবারকে আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল রেখেছিল এবং তাঁদের শিক্ষার পিছনেও রয়েছে এই দোকানের অবদান। মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওয়াহিদ উল্লেখ করেন যে, “আনন্দ-দুঃখ দুই-ই হচ্ছে। আমি অবশ্যই এই ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারতাম এবং আধুনিক উপায়ে তা সুন্দর ভাবে সম্প্রসারণও করতাম, যদি আমার বাবা-মা আমাকে সঠিক শিক্ষা না দিতেন।”

আরও পড়ুন : পরের সপ্তাহেই বৈশাখী অমাবস্যার পুণ্যতিথি! জীবনে সৌভাগ্য, ধনসম্পদের পাহাড়ে উঠতে করুন এই কাজগুলি

পেশায় চিকিৎসক ওয়াহিদ এখন কনসালট্যান্ট নিউরোলজিস্ট। তিনি জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের কথা ভাগ করে নিয়ে জানান যে, “বাবা কাজ শেষ করছেন এটা দেখে সত্যিই কষ্ট হচ্ছে। আসলে এটা তাঁর সবথেকে পছন্দের কাজ ছিল। আশা করি, উনি নিজের অবসরজীবন ভাল করেই উপভোগ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে নিজের স্বাস্থ্যেরও যত্ন নেবেন। যেটা তিনি আমাদের জন্য সব সময় অবহেলা করে গিয়েছেন।”

 

ওয়াহিদের এই পোস্ট হু হু করে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁর এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনরা। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, “খুবই ভাল কথা, প্রিয় ওয়াহিদ মোমিন। আমি প্রতিটা শব্দের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। আমরাও একটি দোকান চালাতাম। আপনার বাবার অবসরজীবনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।” আর একজন আবার মন্তব্য করেন, “আপনার বাবার সত্যিই কুর্নিশ প্রাপ্য। আর সবথেকে বড় কথা হল, আপনি আপনার শিকড় এখনও ভোলেননি।”