নয়াদিল্লি: চাঁদিফাটা রোদ! বাইরে বেরোনোর উপায় নেই৷ গরমের ছুটিও লম্বা হচ্ছে৷ এদিকে ঘরে বসেও গরমে সেদ্ধ হতে হচ্ছে খুদেদের৷ তাদের যে কিছুই করার নেই৷ এত এত হোমওয়ার্ক দিয়েছেন দিদিমণিরা, সে সবে দাঁত ফোটানো যায় না। এত কঠিন যে, বাবা-মাকেই করে দিতে হয়। অগত্যা গরমের ছুটিতে সারাদিন ঘ্যানঘ্যান, নয়তো মোবাইল নিয়েই পড়ে আছে খুদে পড়ুয়ারা। সামার ভ্যাকেশনের প্রজেক্ট নিয়ে এদিকে খেটে মরছেন অভিভাবকরা। এতে লাভ কী হচ্ছে? শিশুরা কি আদৌ কিছু শিখছে? সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন দিল্লী নিবাসী এক অভিভাবিকা৷
পোস্ট করা মাত্রই নিমেষে ভাইরাল সেই ভিডিও। দেখা যায়, সামনে খোলা প্রজেক্টের খাতা। কিছুটা কাজ শেষ করেছেন, অনেকটাই বাকি। সেই অবস্থায় ক্ষুব্ধ অভিভাবিকা প্রশ্ন তুলছেন, এত কঠিন হোমটাস্ক হলে বাচ্চারা কী ভাবে করবে? স্কুলের শিক্ষকরা কি জানেন না যে এগুলো বাবা-মাকেই করে দিতে হয়? জেনেবুঝেও কেন এ ধরনের হোমওয়ার্ক দেন তাঁরা? বাচ্চাদের উপযোগী এবং পছন্দমতো বাড়ির কাজ কেন দেওয়া হয় না স্কুল থেকে— এ নিয়ে সোচ্চার হয়ে ভিডিয়ো রেকর্ড করেন তিনি। সেই ভিডিয়ো নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে গলা মেলালেন আরও অনেক অভিভাবক। জানান, তাঁরাও ভুক্তোভোগী। স্কুলের এই অত্যাচার আর যেন সহ্য হয় না! সমাজমাধ্যমের বহু মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করেন৷
Education system is doing this to parents ❌ pic.twitter.com/0UthwtwHyN
— Eminent Woke (@WokePandemic) June 30, 2024
সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করা সেই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল- ‘শিক্ষাব্যবস্থার কল্যাণে অভিভাকদের যে দুর্দশা হচ্ছে’৷ অভিভাবিকাকে ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, “হোমওয়ার্কগুলো তো বাড়ির লোককেই করতে হয়৷ স্কুলের শিক্ষকরা কি জানেন না? সব জানেন৷ কেন সামার ভ্যাকেশনে এমন হোমওয়ার্ক দেওয়া হবে, যা শিশুরা নিজেরা করতে পারে না? বাচ্চাদের উপযুক্ত হোমটাস্ক কেন দেয় না স্কুল?”
ভিডিওটির প্রায় ৭ লক্ষ ভিউ হয়। মন্তব্য উপচে পড়ে কমেন্টবক্সে। এক মন্তব্যকারী লেখেন, ‘এটি একমাত্র জগৎ যেখানে উৎপাদন খারাপ হলে উৎপাদকের বদলে গ্রাহককে দোষারোপ করা হয়৷’ কেউ আবার লেখেন, ‘আমি শিক্ষামন্ত্রী হলে ক্লাস এইট অবধি হোমওয়ার্ক তুলে দিতাম৷’ এমন নানা ধরনের সমর্থন পেলেন সেই অভিভাবিকা৷ কেউ লিখলেন, ‘‘আসলে স্কুলগুলো এভাবেই নিজেদের সেরা প্রমাণ করতে চায়৷ অভিভাবকরা কঠিন হোমটাস্ক দিতে দেখলে নিজেরাও ভাবেন সন্তানকে ভাল স্কুলে দিয়েছেন৷ সবটাই ব্যবসা!’’ মন্তব্যের ভিড়ে অভিভাবকরা নিজ নিজ ভোগান্তি ও হোমটাস্ক বিভ্রাটের করুণ কাহিনি ভাগ করে এ সবের মধ্যে প্রশ্নের তির সেই স্কুলের দিকেই৷ পড়াশোনার মান উচুঁ দেখাতে গিয়ে অভিভাবকদেরই বোকা বানানো হচ্ছে না তো?