ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: চব্বিশের লোকসভা ভোটে ‘ধরাশায়ী’ বিজেপি। এতে কি পদ্ম শিবির দিশাহারা? অনেকেই এই প্রশ্ন তুলছেন কারণ বঙ্গ বিজেপির এক এক নেতার এক এক রকম মন্তব্য।
একুশের পর চব্বিশেও বঙ্গে ‘ধরাশায়ী’ বিজেপি। আগের থেকে লোকসভায় আসন সংখ্যা কমেছে। হেরে গিয়েছেন একের পর এক হেভিওয়েট পদ্ম প্রার্থী। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, আসন সংখ্যা কমলেও ভোট বেড়েছে বিজেপির। চব্বিশের লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর বুধবার ছিল রাজ্য বিজেপির কর্মসমিতির বর্ধিত কমিটির প্রথম বৈঠক। সেই বৈঠকে এক এক জন নেতার এক এক রকম বার্তা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘‘রাজ্যে আমাদের একটা স্টপেজ হয়েছে। এখনও গন্তব্যে পৌঁছইনি। শুধুমাত্র একটা স্টপেজ হয়েছে। ছাব্বিশের বিধানসভাকে সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যেখানে আমাদের ক্ষত বা রক্তক্ষরণ হয়েছে সেই জায়গাতে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সঙ্ঘবদ্ধ রয়েছি।’’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘‘আগে ভোট করাতে হবে।উপদ্রুত এলাকা আইন লাগু করে ভোট করতে হবে। রাষ্ট্রপতি শাসন চাই না। নবান্ন চাই না। যেদিন ভোটে জিতব সেদিন ঢুকব।’’ বিজেপির বাহুবলি নেতা হিসেবে পরিচিত অর্জুন সিং বলছেন, ‘‘আপনি ভোট করাবেন কি করে। সাংগঠনিক দুর্বলতা আছে। তাই তো ভোট করাতে পারা যাচ্ছে না। আগে সাংগঠনিক দুর্বলতাকে ঠিক করতে হবে। বিশেষ করে নিচুতলার সংগঠন খুব দুর্বল।’’
বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ আবার বলছেন, ‘‘নতুনদের জায়গা দেওয়া উচিত।’’ সৌমিত্র এও বলছেন, ‘‘নেতৃত্ব দিশা না দেখাতে পারলে পুরো ফেল করে যাব। সাংগঠনিক রদবদলের নিশ্চই দরকার আছে। ব্যর্থদের কেউ চায় না।’’ গত বুধবার কলকাতায় বঙ্গ বিজেপির এই বৈঠকে ছিলেন দিলীপ ঘোষও। কিন্তু, তিনি একেবারে নীরব।
নিউজ এইট্টিন বাংলার প্রশ্নের উত্তরে শুধু বললেন, ‘‘কোনও বার্তা নেই। সবার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করছি, এই পর্যন্তই।’’ কিন্তু এই দিলীপ ঘোষই চব্বিশে বঙ্গ বিজেপি ধরাশায়ী হওয়ার পর সবার আগে সুর চড়ান। দলীয় নেতৃত্বের একাংশকে নিশানা করে দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গিয়েছিল কাঠিবাজি ও চক্রান্তের কথাও। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে দিলীপের মুখে প্রায় ‘তালা।’ এদিনের বৈঠকেও তিনি ছিলেন নীরব।
বিজেপির টার্গেট এখন ২০২৬। বিধানসভা ভোটে তারা চায় বাংলায় বিজেপির সরকার গড়তে। তবে সেটা কোন পথে। এ নিয়ে কি বিজেপির নেতারাই দ্বিধা বিভিক্ত? তাই কি এক এক নেতার গলায় এক এক রকম সুর? প্রশ্ন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘দল ভাল ফল করলে তখন কেউ এসব বলে না। হারলেই এসব বলে। এটাও আমি বলছি দলকে জেতানোর সংগঠনের ভূমিকা থাকে ২৫ শতাংশ। তবে বঙ্গ বিজেপি সংঘবদ্ধ রয়েছে।’’