সুকান্ত মজুমদার এবং শমীক ভট্টাচার্য

West Bengal BJP: বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে গরম রাজ্য রাজনীতি, নেতাদের বার্তা দিয়ে পদ্মের অবস্থান স্পষ্ট করলেন সুকান্ত- শমীক

ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: আবারও মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি। এবার দাবি তুললেন বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক। গৌরীশঙ্কর ঘোষের পর এবার সুব্রত মৈত্র। অন্যদিকে, সুকান্ত মজুমদারের উত্তরবঙ্গ-প্রস্তাবকে সমর্থন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদের। এ নিয়ে পদ্ম শিবিরকে কটাক্ষ তৃণমূলের। গৌরীশঙ্কর ঘোষের পর এবার সুব্রত মৈত্র। ফের মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি বিজেপি বিধায়কের। মুর্শিদাবাদের বিধায়কের পর এবার সরব বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। তাঁর কথায়, ‘‘আজকে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে যেভাবে অনুপ্রবেশ মায়ানমার, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ঘটে চলেছে, তাতে আমাদের সনাতনিরা ভীষণভাবে আতঙ্কিত। যার জন্যই দরকার কেন্দ্রীয় আইন-শাসন ব্যবস্থা।’’

আরও পড়ুন- সপ্তাহজুড়েই উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতে বৃষ্টির পূর্বাভাস, কলকাতায় বৃষ্টি বাড়বে কবে?

শাসক শিবির বলছে, ‘‘মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই বিজেপি এটা করছে। এগুলো অযৌক্তিক কথা। বাংলাদেশ থেকে কোনও মুসলমান আসেনি। বর্ডারে বিএসএফ আছে। কেন ঢুকবে। তাদের গোয়েন্দা আছে। বাংলাদেশ থেকে কেউ এলে খুঁজে বের করুক।’’

এর আগে মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং বিহারের তিন জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবিতে সংসদে সরব হন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সংসদে তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মালদহ-মুর্শিদাবাদ থেকে লোকজন এসে আমাদের লোকদের হঠিয়ে দিচ্ছে। একের পর এক হিন্দু গ্রাম খালি হচ্ছে। স্পিকার মহোদয়, আমার অনুরোধ, কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া, কাটিহার, মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং পুরো সাঁওতাল পরগনাকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করুন। এটা না হলে হিন্দু খালি হয়ে যাবে। এনআরসি কার্যকর করুন। ২০১০ সালের আইন কমিশনের রিপোর্ট কারযকর করুন। যাতে বলা আছে, ধর্মান্তরণ ও বিয়ের জন্য অনুমতি জরুরি।’’

বিজেপি সাংসদের মন্তব্য ঘিরে রাজনীতিতে ঝড় ওঠে। তারপরেই প্রকাশ্যে আসেন মুর্শিদাবাদের আরেক বিজেপি বিধায়ক। গৌরীশঙ্কর ঘোষ জানান, মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবিতে তিনি ২০২২ সালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং রাজভবনে চিঠি দেন।

আরও পড়ুন– ইউরোপ-এশিয়ার সুন্দর দেশগুলির থেকে কোনও অংশে কম নয়; ধীরে ধীরে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে রাশিয়ায়, রইল ভ্রমণের খুঁটিনাটি

পদ্ম বিধায়ক সুব্রত মৈত্র, গৌরীশঙ্কর এবং নিশিকান্তর দুবের মন্তব্যকে তিনি সমর্থন করেন বলে স্পষ্ট জানান। মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা নিয়ে বিতর্ক শুরুর আগেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে উত্তরবঙ্গ নিয়ে প্রস্তাব দেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। এ নিয়েও রাজ্য রাজনীতিতে জোর শোরগোল পরে। এ পরিস্থিতিতে সুকান্ত মজুমদারের পাশে দাঁড়ান জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। বলেন, ‘‘আমরা উত্তরবঙ্গের মানুষ তো এমনিতেই বঞ্চিত। উনি উত্তরবঙ্গকে ভাল করে জানেন, উনি বালুরঘাটের সাংসদ। এবং তিনি চাইছেন এখানে উন্নয়ন হোক। আমি ওনাকে ২০০ শতাংশ সমর্থন করি। তবে বিজেপি যে বাংলা বিভাজনের বিরুদ্ধে তা রাজ্যসভার সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট করে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ভারতীয় জনতা পার্টি এবং ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গ বিভাজনের বিরুদ্ধে। এটাই পার্টির অবস্থান।’’

এ ব্যাপারে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করে তৃণমূলের কটাক্ষ,’বিজেপি রাজনৈতিকভাবে বাংলায় ক্ষমতা দখল করতে না পেরে বাংলাকে টুকরো টুকরো করে তারা রাজনৈতিক ডিভিডেন্ড পেতে চাইছে। তারা নাকি রাজ্যভাগের বিরুদ্ধে। কিন্তু পর পর তাদের একাধিক নেতা যেভাবে বলছে তাদের বিরুদ্ধে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। নাটকবাজি বন্ধ করে বিজেপি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করুক।’