সম্পূর্ণা এবং ইন্দ্রাণী 

Madhyamik Result: মেয়ের পড়াশোনার জন‍্য গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছিলেন দুই কৃতির বাবা-মা! প্রথম দশে একই স্কুলের দুই কন‍্যা

পূর্ব বর্ধমান: বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে ২০২৪ মাধ্যমিকের ফলাফল। গত বছরের তুলনায় এবছর পাসের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে বেশ খানিকটা। রাজ্যে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু জেলার পড়ুয়ারা। এবং তারই মধ্যে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলাও।

এবছর পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১ থেকে ১০ এর মধ্যে রয়েছে সাত জন। যার মধ্যে বর্ধমান শহরের তিন জন পড়ুয়া রয়েছে। তবে বর্ধমান শহরের তিনজনের মধ্যে দু’জন একই স্কুলের পড়ুয়া। একই স্কুল থেকে পড়াশোনা করে মাধ্যমিকে একজন অষ্টম স্থান অধিকার করেছে, এবং অন্যজন অধিকার করেছে দশম স্থান।

স্বাভাবিক ভাবেই একই স্কুলের দুজনের এহেন সাফল্যে খুশি শহরবাসী। যারা অষ্টম এবং দশম স্থান অধিকার করেছে তারা দুজনেই বর্ধমান বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী। ইন্দ্রানী চক্রবর্তী ৬৮৬ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে এবং ৬৮৪ নম্বর পেয়ে দশম স্থান অধিকার করেছে সম্পূর্না তাঁ।

আরও পড়ুন: গরমে রোজ দই খাচ্ছেন? তলে তলে বাড়ছে না তো ইউরিক অ‍্যাসিড? জেনে নিন

অষ্টম স্থানাধিকারী ইন্দ্রানী চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে জানায়, “পরীক্ষার আগে প্রায় ১৩-১৪ ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। সাতটা সাবজেক্টে আমার মোট সাত জন শিক্ষক ছিল। পড়াশোনার বাইরে গল্পের বই পড়তে ভাল লাগে, গান শুনতে ভাল লাগে মাঝে মাঝে টিভিও দেখি। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই। তার কারণ আমার বাবার ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু তিনি হতে পারেননি। তাই বাবার স্বপ্ন আমি পূরণ করতে চাই। আমার একটা এক্সপেক্টেশন ছিল যে র‍্যাংক করব। আমার এই সাফল্যের প্রধান যারা সহযোগিতা করেছেন তারা হলেন আমার মা বাবা এবং শিক্ষকরা। “

অন্যদিক বর্ধমান বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী দশম স্থানাধিকারী সম্পূর্না তাঁ জানায়, “আমার এই ফলাফলের জন্য আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি। আশা করেছিলাম ভাল রেজাল্ট হবে কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মেধাতালিকায় ঢুকতে পারব সেটা আশা করিনি। আমি স্কুল টিচারদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। শিক্ষকরা যেভাবে গাইড করেছিলেন সেভাবে পড়াশোনা করে পরীক্ষার প্রিপারেশন নিয়েছিলাম। আমার কোনও বাঁধা ধরা পড়তে বসার টাইম ছিল না। যখন ভাল লাগত তখন পড়াশোনা করতাম এবং যতটা পড়া থাকত সেই পড়া শেষ করে তবেই উঠতাম। প্রত্যেকটা বিষয়ের জন্য আমার একজন করে শিক্ষক ছিলেন। অবশ্যই মা বাবা এবং স্কুলের শিক্ষকদের জন্যই আমার আজকের এই সাফল্য তাছাড়া আমি নিজেও অনেক পরিশ্রম করেছি। প্রত্যেকটা বিষয়ে আমার পছন্দের তার মধ্যে অংক সবথেকে বেশি ভালো লাগে। বড় হয়ে ডাক্তার হবার ইচ্ছা রয়েছে। আমার মনে হয় এই ডাক্তার প্রফেশনে থাকলে অনেক মানুষের সেবা করতে পারব সেই কারণেই ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।”

তবে জানা গিয়েছে এই দুজন পড়ুয়ার আসল বাড়ি গ্রামে। অষ্টম স্থানাধিকারী ইন্দ্রানীর বাড়ি খণ্ডঘোষ ব্লকের একটি গ্রামে। তার বাবা তাকে পড়াশোনার জন্য গ্রাম থেকে শহরে নিয়ে আসে। অন্যদিকে সম্পূর্নার বাড়িও রায়না থানার অন্তর্গত একটি গ্রামে। ভালভাবে পড়াশোনা করানোর জন্য তার বাবাও তাকে বারো বছর আগে বর্ধমান শহরে নিয়ে আসে। এই দুজন পড়ুয়ায় এখন বর্ধমান শহরে বসবাস করে। গ্রাম থেকে শহরে এসে এহেন সাফল্য পাওয়ায় খুশি হয়েছে সম্পূর্না এবং ইন্দ্রাণীর পরিবার। দুজনের পরিবারের তরফেই জানানো হয়েছে আগামী দিনে ওদের সাফল্যের জন্য যথাযথ ভাবে সহযোগিতা করা হবে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী