মূর্তি গড়ছেন মণিকা পাল

Durga Puja 2024: স্বামীকে হারিয়ে একাই ধরেছেন সংসারের হাল! বছর বছর দশভূজার মূর্তি গড়েন এই ‘দ্বিভূজা’!

পশ্চিম মেদিনীপুর: পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে সব কিছুই। সময় তার উত্তর দিয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে অনেকটা বছর। তবে দশভূজার মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরি করেন দুই হাতের এই ‘দেবী’। নাম তাঁর মনিকা পাল। দিন রাত এক করে ছেলেদের মত পরিশ্রম করে নির্দিষ্ট সময়ে দেবী দুর্গার মূর্তি পৌঁছে দেন বিভিন্ন পুজো মন্ডপে। কোনও প্রতিমায় থাকে থিমের ছোঁয়া, কোনওটি আবার সাজিয়ে তোলেন সাবেকিয়ানায়। স্বাভাবিকভাবে মৃৎশিল্পী স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেছেন রক্তমাংসে গড়া এই দুর্গা। জীবনের ভরসা এখন মাটির প্রতিমা গড়া।

আরও পড়ুন-ধোনির মেয়ে পড়ে ঘরের কাছের এই দারুণ স্কুলে! কত ফি? জানলে আপনিও পাঠাবেন সন্তানকে!

স্বামী পেশাগতভাবে মৃৎশিল্পী ছিলেন। বিয়ের পর তার স্বামী থেকেই দেখেছেন ঠাকুর বানানো। তবে স্বামীর জীবদ্দশায় সেভাবে তাকে সাহায্য করতে হয়নি প্রতিমা গড়ার কাজে। তবে স্বামীর অসুস্থতার সময় থেকে ধরতে হয়েছে সংসারের হাল। স্বামীর অসুস্থতার সময়ে পুজোর মরশুম থাকায় প্রতিমা করতে হয়েছে দুই হাতের এই ‘দশভূজা’কে। তবে এরপর স্বামীর মৃত্যুর পরই স্বামীর পেশাকে জিইয়ে রেখেছেন তিনি। বর্তমানে নিজেই ঠাকুর বানান। প্রতিবছর বেশ অনেকগুলো ঠাকুরের অর্ডার আসে তার কাছে। স্বাভাবিকভাবে মনে ভয়কে পুষে না রেখে দিব্যি অন্যান্য মৃৎশিল্পীদের মত কাজ করে চলেছেন তিনি। তার হাতের নিখুঁত কাজ অবাক করবে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর গ্রামীণের মোহনপুর চক সোফিয়াবাদ এলাকার মৃৎশিল্পী মনিকা পাল। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি প্রতিমা গড়ছেন। এবারেও মেদিনীপুর, খড়গপুর মিলিয়ে একাধিক ঠাকুরের অর্ডার রয়েছে তার কাছে। শিল্পী মনিকা পালের এক মেয়ে রয়েছে, যদিও তার বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। মেয়ে যখন ছোট, তখনই তার স্বামীর মৃত্যু হয়। একদিকে পরিবার, অন্যদিকে ছোট বাচ্চা সামলে তিনি ঠাকুর গড়েছেন। সময় মতো ডেলিভারিও দিয়েছেন। এভাবেই সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। দশ হাত না থাকলেও দুই হাতে করেছেন কামাল। শিল্পীর হাতের নিপুনতা চমকে দিয়েছে সকলকে।

আরও পড়ুন- দেশে MBBS-এ চান্স না পেলে জলের দরে পড়ুন বিদেশে গিয়ে! কোন পরীক্ষায় বসবেন, জেনে নিন।

এক সময় খড়ের চালা থেকে শুরু। প্রতিদিন পরিস্থিতির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে তাকে। স্বামীর অসুস্থতা এবং তারপর মৃত্যু, বদলেছে সময়, তবে বদলাইনি চালচিত্র। নিজের দুই হাতে সংসার, পরিবার এবং ব্যবসা সামলাচ্ছেন তিনি। শুধু দুর্গা প্রতিমা নয়, বছরভর একাধিক প্রতিমা তৈরি করেন তিনি। একা মহিলা হওয়ার কারণে ভয় এসেছে নানাভাবে। তবে সেসবকে তোয়াক্কা না করে জীবনযুদ্ধে জয়ের পথে এগিয়ে চলেছেন তিনি। শিল্পীর ভাবনা এবং জীবন যুদ্ধের লড়াইকে কুর্নিশ জানাতে হয়।

রঞ্জন চন্দ