শুক্রবার বাংলাজুড়ে প্রতীকী ধর্মঘটের দাবি শুভেন্দু-সুকান্তর... মশাল মিছিল করবে বিজেপির মহিলা মোর্চা

Suvendu Adhikari-Sukanta Majumdar: শুভেন্দুর সংখ্যালঘু ‘ত্যাগ’ বার্তা নিয়ে কী বললেন সুকান্ত? রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে

ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: নিজের মন্তব্যে ‘অনড়’ শুভেন্দু। ‘‘মনের অনেক যন্ত্রণা থেকে বলেছি। ‌তবে আমার বক্তব্যের সঙ্গে এনডিএ সরকার কিংবা প্রধানমন্ত্রীর স্লোগানকে মেলাবেন না।’’ বললেন শুভেন্দু অধিকারী। মোদি সরকার তাঁর অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংখ্যালঘুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রচুর মানুষের পাশে আর্থিকভাবে দাঁড়িয়েছে। সংখ্যালঘুদের উন্নয়নেও‌ এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকার পাশে থেকেছে। কিন্তু সেই সমস্ত মানুষজন যখন বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেন তখন তো খারাপ লাগে বলেও নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় বলেন শুভেন্দু। ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির মুখে বারবার ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-এর কথা শোনা গিয়েছিল। একুশের পর চব্বিশেও বাংলায় ভরাডুবি পদ্মের।

আরও পড়ুন– বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা প্রবল! উইকেন্ডে জমিয়ে বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে

সাংগঠনিক বৈঠকে বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর। নির্বাচনে হেরেই কি অবস্থান বদল গেরুয়া শিবিরের? উঠছে প্রশ্ন। আর এই নিয়েই রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। বুধবার সাইন্স সিটি অডিটোরিয়ামে দলের বৈঠকে প্রকাশ্য সভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আপনারও বলেছেন সবকা সাথ সবকা বিকাশ। আমি আর বলব না। এবার বলব জো হামারে সাথ। হম উনকে সাথ।’’ শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্যের পরপরই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। শুভেন্দুর বক্তব্যকে হাতিয়ার করে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, ‘‘এটা প্রমাণ হল, বিজেপি শুধু তাঁদের সঙ্গে থাকবে যাঁরা বিজেপিকে ভোট দেবে। তাদের সঙ্গে থাকবে না, যারা বিজেপিকে ভোট দেবে না।’’ ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের সময় থেকে নরেন্দ্র মোদির স্লোগান ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ…..।‌’ নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন বক্তব্যেও উঠে এসেছে এই স্লোগান।

আরও পড়ুন- অস্বস্তিতে বিজেপি! ‘ব্যর্থদের কেউ পছন্দ করে না…’ বিস্ফোরক সৌমিত্রর নিশানায় কে? আর কী বললেন অর্জুন?

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় এই স্লোগান বদলে হয়, ‘সবকা সাথ…সবকা বিকাশ…সবকা বিশ্বাস।’ মোদির এই স্লোগানকে সামনে রেখে সংখ্যালঘুদের বার্তা দিয়েছে বিজেপি। কিন্তু, এ রাজ্যে তাতে কোনও লাভ হয়নি। একুশের পর চব্বিশেও বাংলায় ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির।

সংখ্যালঘুরাও বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বুধবার কলকাতায়, বিজেপির বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে চর্চা অব্যাহত। শুভেন্দু অধিকারী বুধবার বলেন, ‘‘আমি বলেছি রাষ্ট্রবাদী মুসলিম। আপনারও বলেছেন সবকা সাথ সবকা বিকাশ। আর বলব না। বলব, জো হামারে সাথ। হম উনকে সাথ। সবকা সাথ সবকা বিকাশ বনধ করো। নো নিড সংখ্যালঘু মোর্চা।’’

এতেই অনেকের প্রশ্ন, চব্বিশের ভোটে ভরাডুবি হওয়ার কারণেই কি সুর বদল বঙ্গ বিজেপির? এবার থেকে কি আরও বেশি করে মেরুকরণে শান? শুভেন্দুর মন্তব্যের দায় নিতে নারাজ বঙ্গ বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট বলেন, ‘‘আমরা পরিষ্কার করে বলছি, দল এই বক্তব্যকে অনুমোদন করে না। কেউ প্রস্তাব দিতেই পারেন। এটা দলের সিদ্ধান্ত নয় এটা পরিস্কার করে দিচ্ছি। আজকে কেউ ডেলিগেটস হিসেবে প্রস্তাব দিতেই পারেন। কিন্তু এটা পার্টির বক্তব্য নয়।’’

মোদির মন্ত্র ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’। শুভেন্দু বললেন, ‘জো হামারে সাথ। হম উনকে সাথ।’ তাহলে কি বিজেপির ভিতরে দু’রকম সুর? এ নিয়ে পদ্ম শিবিরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন,’‌ নিজের মনের কথা শুভেন্দু বলেছেন। সেকথা পার্টির সিদ্ধান্ত হয় না। এটা কেন্দ্রীয় চিন্তা। সেই চিন্তা পরিবর্তন করতে হলে সেটা কেন্দ্রীয় পার্টি করবে।’ শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। এটা বুঝতে পেরে এদিনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শুভেন্দু অধিকারী। নিজের বক্তব্যের ব্যাখা দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এও বলেন,’ এটা সত্য শুধু হিন্দুরাই ভোট দিয়েছেন। মুসলিমরা দেননি। সে‌ কারণে আমি বাস্তব পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক অ্যাঙ্গেল থেকে বলেছি। এর সঙ্গে মোদির সবকা সাথ স্লোগানের সম্পর্ক নেই। এর সঙ্গে এনডিএ সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর স্লোগানকেও দয়া করে মেলাবেন না।’