দক্ষিণবঙ্গ: তাকে পাকড়াও করতে গেলে পুলিশের উপরে চালানো হয়েছিল গুলি৷ তারপরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে খাটের নীচে থাকা সুড়ঙ্গপথ দিয়ে পালিয়েছিল সে৷ কুলতলি প্রতারণা কাণ্ডের সেই সাদ্দাম সর্দারকে গত বুধবার রাত ১টা বেজে ১৫ মিনিটে একটি ভেড়ির আলাঘর থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ৷ সাদ্দামের পাশাপাশি, ওই ভেড়ির মালিক তথা কুলতলির সিপিএম নেতা মান্নান খানকেও পাশের একটি আলাঘর থেকে গ্রেফতার করা হয়৷ এই নিয়ে কুলতলি কাণ্ডে মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করা হল বলে পুলিশ সূত্রের খবর৷
মূলত, আসল সোনার মূর্তির ছবি দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে টোপ ফেলে নকল সোনার মূর্তি বিক্রির অভিযোগ ছিল এই সাদ্দামের বিরুদ্ধে৷ শুধু তাই নয়, সাদ্দামের বাড়িতে নাকি রমরমিয়ে চলত নকল সোনার ব্যবসা৷ পুলিশ সূত্রের খবর, সাদ্দামের বাড়ি থেকে ইতিমধ্যেই উদ্ধার হয়েছে ধাতু গলানোর যন্ত্র এবং রাসায়নিক৷ তদন্তে জানা গিয়েছে, বিগত ১৫ বছর ধরে এই প্রতারণার কারবার চালাত সাদ্দাম৷
শুধু নকল সোনার কারবারই নয়, সাদ্দাম সর্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ডাকাতিরও৷ এছাড়া, ২০১৯ সালের একটি খুনের ঘটনাতেও সে অভিযুক্ত৷ কুলতলির জালাবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েতের পয়তারহাটের বাসিন্দা সাদ্দমের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই প্রতারণার অভিযোগ। এর আগেও এ রকম একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এক বার তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত সোমবার সাদ্দামের পয়তারহাটের বাড়িতে অভিযানে যায় পুলিশ। সাদ্দামকে ধরেও ফেলে তারা।
কিন্তু এর পরেই তার বাড়ি এবং আশেপাশের মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সাদ্দামের ভাই সাইরুল পুলিশকে নিশানা করে গুলিও চালান বলে অভিযোগ। এই সুযোগে পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যান সাদ্দাম এবং সাইরুল। সাদ্দামের স্ত্রী রাবেয়া সর্দার এবং মাসুদা সর্দার নামে আরও এর মহিলাকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ গ্রেফতার করা হয়।
সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় দেখা যায়, তার ঘরের স্টিলের খাটের নীচে একটি সুড়ঙ্গ খোঁড়া রয়েছে৷ সেই সুড়়ঙ্গে যোগ রয়েছে পাশের একটা খালের কাছে৷ পুলিশ অনুমান করে সেই সুড়়ঙ্গের পথেই পালিয়েছিল অভিযুক্ত৷
পুলিশের সন্দেহ গত সোমবার সকালে ওই ভাবে পালানোর পর থেকেই স্থানীয় ভেড়ির মালিক তথা সিপিএম নেতা মান্নান খানের ভেড়ির একটি আলাঘরে গা ঢাকা দিয়েছিল সাদ্দাম৷ বুধবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই আলাঘর ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী৷ তারপর রাত ১টা ১৫নাগাদ আলাঘর থেকে বের করে আনা হয় সাদ্দামকে৷
পুলিশের সূত্রের খবর, এই সিপিএম নেতা মান্নান দীর্ঘদিন ধরেই সাদ্দামের পরিচিত৷ এই গোটা প্রতারণাচক্রে তারও হাত থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ৷