ইউটিউব ক্লাস 

YouTube Teaching: শিক্ষকের অভাবে ইউটিউব চালিয়ে পড়াশোনা হচ্ছে! হাইস্কুলের দুর্দশায় চোখ কপালে উঠবে

পূর্ব বর্ধমান: ইউটিউবের মাধ্যমে ক্লাস হচ্ছে হাই স্কুলে! এমনই অচেনা ছবি ধরা পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের একটি বিদ্যালয়ে। কেতুগ্রাম ব্লকের বেড়ুগ্রামে রয়েছে বেড়ুগ্রাম বান্ধব বিদ্যাপীঠ। আর এই বিদ্যালয়েই বর্তমানে পড়ুয়াদের ক্লাস করানো হচ্ছে ইউটিউবের মাধ্যমে। প্রোজেক্টারের মাধ্যমে ইউটিউব চালিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এখানে পড়ানো হয় পড়ুয়াদের৷ যে পাঠ্যবই পড়ানো হবে তার ভিডিও এখন রয়েছে ইউটিউবে। সেই ভিডিও চালিয়ে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের সামনে। আর পড়ুয়ারা নিজে নিজেই ক্লাসে সেসব দেখে সিলেবাস সম্পূর্ণ করে।

কিন্তু বিদ্যালয়ে ইউটিউবের মাধ্যমে কেন ক্লাস করানো হচ্ছে? এই বিষয়ে বেড়ুগ্রাম বান্ধব বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ আলি নওয়াজ জানান, আগে স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যেমে সবাই চলে গিয়েছেন। এখন আমরা চারজন স্থায়ী শিক্ষক আছি৷ তারমধ্যে দু’জন শরীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার শিক্ষক৷ বাংলা ও ইংরাজির দু’জন মাত্র শিক্ষক আছেন৷ অঙ্ক সহ বিজ্ঞান বিভাগের কোনও শিক্ষক নেই৷ এই পরিস্থিতিতে নিয়মিত ক্লাস করাতে মাঝেমধ্যেই ইউটিউবের সাহায্য নিতে বাধ্য হন বলে জানান তিনি।

আর‌ও পড়ুন: আন্ডার পাসের অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাইন পারাপার

বেড়ুগ্রাম বন্ধব বিদ্যাপীঠ ১৯৫৮ সালে গড়ে ওঠে। পঞ্চম থেকে দশম পর্যন্ত স্কুলে ৬১৬ জন পড়ুয়া রয়েছে। ছাত্র ও ছাত্রী একসঙ্গেই পড়াশুনা করে৷ স্কুলে চারজন স্থায়ী শিক্ষক ছাড়াও ৩ জন প্যারাটিচার রয়েছেন৷ আর একজন করনিক ও দু’জন চতুর্থ শ্রেনির কর্মী রয়েছেন৷ পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে একজন শিক্ষককে একসঙ্গে দুটো তিনটে করে ক্লাস নিতে হয়৷ একটা শ্রেণিকক্ষে গিয়ে অল্প কিছুক্ষণ পড়িয়েই সেই শিক্ষককে ছুটতে হয় অন্য শ্রেণিকক্ষে৷ তাই বাধ্য হয়ে পড়ুয়াদের জন্য বর্তমানে ইউটিউবের মাধ্যমে এই বিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। পড়ুয়ারা নিজে নিজেই ইউটিউব দেখে কোনও রকমে সিলেবাস সম্পূর্ণ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্তু এভাবে কী পড়াশোনা করা সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছে পড়ুয়ারারাই।

বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরাও৷ অভিভাবকদের মতে, এভাবে ক্লাস করানো হলে মাধ্যমিক পড়ুয়াদের অনেক ক্ষতি হবে। এছাড়াও শিক্ষক ছাড়া বিজ্ঞান বিভাগের সিলেবাস কীভাবে শেষ হবে সেই নিয়েও তাঁরা চিন্তায় রয়েছেন। এই স্কুলে গ্রামের অনেক গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে৷ তারা অনেকেই পয়সার অভাবে প্রাইভেট টিউশন নিতে পারে না৷ স্কুলের শিক্ষকদের পড়ানোর উপরেই তাদের নির্ভর করতে হয়৷ কিন্তু বিদ্যালয়ের এরকম অবস্থার কারণে পড়ুয়ারাও সমস্যায় পড়েছে। সবমিলিয়ে একমাত্র নতুন শিক্ষক এলে তবেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী