নদিয়া: লক্ষণ সর্দারের লাঠির উপর ভরসা করত সে সময়ের তাবড় জমিদাররা। আজও সেই লাঠিই তাঁর ভরসা, কিন্তু সম্পূর্ণ অন্যভাবে। গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণ লক্ষণ সর্দারকে আজ সচল রেখেছে সেই লাঠি।
আরও পড়ুন: রমজান মাসে আর পাওয়া যাবে না তরমুজ! কয়েক ঘণ্টার শিলা বৃষ্টিতে সব শেষ…
একসময় যে লাঠির ভয়ে পালাত ডাকাতের দল, জমিদাররা যে লাঠির উপর ভরসা করতেন সেই লাঠি বৃদ্ধ বয়সে লক্ষণ সর্দারের একমাত্র ভরসার যষ্টি হয়ে উঠেছে। বয়সের ভারে অনেক স্মৃতি আজ ম্লান, তবে লক্ষণ সর্দারের কথায় উঠলে নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকের বাবলা পঞ্চায়েতের তেঘরি গ্রামের মানুষের মনে অনেক গল্প ভিড় করে। জমিদার প্রথা উঠে যাওয়ার পর শেষ জীবনে প্যান্ডেলের কাজ করলেও জীবনের প্রথমদিকে বাবা কাকার মত লাঠিয়ালের কাজ করতেন তিনি। শান্তিপুর গুপ্তিপাড়া বীরনগর রানাঘাট সহ নদিয়া জেলার সে সময়ের তাবড় জমিদারদের ভরসা ছিলেন এই লক্ষণ সর্দার।
বয়স তাঁর অনেক। বৌমা সুলেখা শশুরের বয়সের স্বপক্ষে যুক্তি দেন, তাঁর সমসাময়িক সকলেই প্রায় ১০০ বছরের কাছাকাছি। ছিল আজ থেকে ৭-৮ বছর আগে তাঁরা মারা গিয়েছেন। তবে এই বয়সে এখনও লাঠির উপর ভর করে হেঁটে চলে বেড়ান লক্ষণবাবু। কোনও জটিল সমস্যা নেই শরীরে। তবে ধীরে ধীরে হাঁটাচলা করেন, খাওয়া-দাওয়া, স্নান নিজের কাজকর্ম নিজেই করতে পারেন এখনও। ছেলে বীরেন সর্দার বলেন, তাঁদের ছোটবেলায় এলাকার যারা প্রবীণ তাঁদের মুখ থেকেই শুনেছেন দেশভাগের সময়েও তাঁর বাবা ছিলেন যুবক।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
লক্ষণ সর্দার অবশ্য এত বছরের পুরনো স্মৃতি মনে আনতে পারছিলেন বেশ কিছুক্ষণ বাদে বাদে। শোনালেন সে সময় নকশাল আন্দোলন থেকে শুরু করে শান্তিপুরের তৎকালীন বিধায়ক স্যার অসম্মঞ্জ দের গ্রামীণ সংগঠনের কথা। তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা। দেশভাগের নানান কথা। ১৮ অগস্ট নদিয়ার স্বাধীনতা সহ আরও কত কী! তবে প্রতিবেশীদের মতে এরকম একটি প্রবীণ মানুষকে এলাকার জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারি তরফে কখনও সংবর্ধিত করা হয়নি। এ যেন শেষ পাতে কিছুটা অনুযোগের সুর।
মৈনাক দেবনাথ