প্রসাদ বিতরণ

Sheetala Puja 2024: পান্তা ভাত ও ডালের বড়া মূল প্রসাদ, ৭৩ বছর ধরে পূজিতা হচ্ছেন মা শীতলা

রুদ্র নারায়ণ রায়, উত্তর ২৪ পরগনা: দীর্ঘ প্রায় ৭৩ বছর আগে মহামারিতে আক্রান্ত হয় সীমান্ত এলাকার দত্ত পাড়ার নাথ পরিবার। বসন্ত রোগ ভয়ংকর আকার ধারণ করায় এলাকা ছেড়েও বহু মানুষ অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। এমনকি রোগের ভয়ে পরিবারের সদস্যদের জল দেওয়ারও কেউ ছিল না। এই পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির বৃদ্ধা সদস্য টুকুবালা নাথ মেদিয়ার মন্দিরে একটানা প্রার্থনা করেন বিপদ কাটাতে।

কথিত, এরপরই দেবী স্বপ্নে দেখা দেন টুকুবালা দেবীকে। জানান, রোগ নিরাময়ের জন্য কোন এলাহি আয়োজন নয়, সাদামাটা ভাবে পান্তা ভাত ও ডালের বড়া দিয়েই পুজো দিলেই মিলবে রোগ মুক্তি। এরপর, বাড়িতে ফিরে কোনও রকমে শুরু করেন মা শীতলার পুজো। এই পুজোর বিশেষত্বই হল বাড়িতে অরন্ধন রেখে, পান্তা ভাত, সঙ্গে ডালের বড়া প্রসাদ দেওয়া। জনশ্রুতি ও বিশ্বাস যে এই প্রসাদেই পরিবার-সহ এলাকা থেকে প্রকোপ কমে মহামারির। সেই থেকেই বনগাঁর দত্তপাড়ায় হয়ে আসছে প্রাচীন এই নাথ বাড়ির শীতলা মায়ের পুজো।

আরও পড়ুন : আসছে নীলষষ্ঠী ব্রত! সন্তানের কল্যাণে এই বিশেষ ফুল দিন দেবাদিদেব মহাদেবকে ও এই ফুলে পুজো করুন দেবী নীল চণ্ডিকার

তবে এখন আর সাদামাটা নয়, অনেকটাই এলাহি আয়োজনে হয় মায়ের পুজোর। এলাকাবাসীদের বিশ্বাস মা-কে সন্তুষ্ট রাখলেই ছুঁতে পারবে না কোন মহামারি ব্যাধি। তাই আজ এলাকার অনেক মহিলাই উপবাস করে এই মায়ের পুজোর কাজে অংশ নেন। ফল প্রসাদের পাশাপাশি পান্তা ভাত ডালের বড়া পরিবেশন করা হয় ভক্তদের। দূর দূরান্ত থেকেও মানুষজন আসেন এই মায়ের পুজোর ভোগ নিতে।

বর্তমানে বাড়ির তৃতীয় প্রজন্ম সামলাচ্ছেন এই পুজার দায়িত্ব। মা শীতলার এই পুজোকে ঘিরে রীতিমতো উৎসবের চেহারা নিয়েছে দত্তপাড়া এলাকা। পাত পেড়ে বসে চলছে পান্তা ভাত ডালের বড়া খাওয়া। পরম তৃপ্তিতে মায়ের সেই প্রসাদী ভোগ খাচ্ছেন ভক্তরাও। তাই হয়তো বলে, বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।