বামেদের ভোট চাইলেন নিশীথ প্রামাণিক! তুমুল শোরগোল

Nisith Pramanik: বাম ভোট টানতে মরিয়া পদ্ম শিবির ? বামেদের ভোট চাইলেন নিশীথ প্রামাণিক! তুমুল শোরগোল

ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কোচবিহার: লোকসভা ভোটে গেরুয়ার টার্গেট কি লাল? বাম ভোটকে কি নিজেদের দিকে টানাতে মরিয়া পদ্ম শিবির? কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের মন্তব্য ঘিরে নতুন করে এই প্রশ্নই উঠছে।

নিশীথ প্রামাণিক। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী এবং বিদায়ী সাংসদ। চব্বিশের ভোটে তাঁর নজর বামেদের ভোটে! সোমবার নিশীথ প্রামাণিক লোকসভা ভোটের মুখে শীতলকুচির এক প্রকাশ্য সভায় বলেন, ‘‘যেখানে যেখানে বামপন্থী ভাইদের যত পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করেছে, তাঁরা উদ্ধার করতে না পারলে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর ভারতীয় জনতা পার্টি সেই সব পার্টি অফিস উদ্ধার করে বামপন্থী ভাইদের হাতে তুলে দেবে।’’ তবে বামপন্থীদের দলীয় কার্যালয় উদ্ধারের জন্য শর্তও দেন নিশীথ। বলেন, ‘‘কিন্তু অনুরোধ একটাই, ভোটগুলো নষ্ট করবেন না। যেখানে ভোট দিলে আপনাদের ভোট কাজে লাগবে, আপনাদের ভোট সেখানে দেবেন।’’

আরও পড়ুন– ‘ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলকে হারাব, এক লক্ষ বিজেপি কর্মী ময়দানে থাকবে…’! হুঙ্কার শুভেন্দু অধিকারীর

পাল্টা তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর খোঁচা, ‘‘কোচবিহারের বামেদের পার্টি অফিস ফেরত দেওয়ার আগে ত্রিপুরায় গিয়ে সিপিআইএমের যত অফিস বিজেপি দখল করেছে তার একটা অংশ ফেরত দিক। যে কথাটা বলেছে সেটা ওর চরিত্রের সঙ্গে মানানসই। কারণ ও হচ্ছে, সুপারি কিলারের মতো। সুপারি কিলার যেমন পয়সার বিনিময়ে মানুষ খুন করে, ও তেমন ভোটের বিনিময়ে সিপিআইএমের পার্টি অফিস উদ্ধারের কথা বলছে।’’ বলা বাহুল্য, একসময় বামেদের গড় ছিল কোচবিহার।

১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৯। টানা এই লোকসভা কেন্দ্রে জেতে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। ২০১৪ সালে জেতে তৃণমূল। ২০১৯ সালে বিজেপি। ভোটের ফলেই স্পষ্ট, বামেদের ভোট রামে যাওয়াতেই ২০১৯ সালে কোচবিহারে জেতে বিজেপি। ২০১৪ সালে কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী পান প্রায় ৩৩ শতাংশ ভোট।

আরও পড়ুন- ঢাকাই পোড়া মাংস থেকে নলেন গুড় চিজ কেক প্ল্যাটার; জমে উঠতে চলেছে পয়লা বৈশাখের বিশেষ ভূরিভোজ!

২০১৯ সালে তা দাঁড়ায় তিন শতাংশে। অর্থাৎ বামেদের ভোট কমে তিরিশ শতাংশ। অন্যদিকে বিজেপির ভোট শতাংশ বৃদ্ধির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালে কোচবিহারে বিজেপি প্রায় ১৬ শতাংশ ভোট পায়। উনিশে সেটাই হয় প্রায় ৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ বিজেপির ভোট বাড়ে ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ বামেদের ভোট কমল ৩০ শতাংশ। বিজেপির ভোট বাড়ল ৩২ শতাংশ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের কথায়, এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট যে বামেদের ভোট গিয়েছিল বিজেপিতে।

এক কথায় বাম ভোট রামে। শুধু কোচবিহার নয়, ২০১৯ সালে রাজ্যজুড়েই এই সমীকরণ দেখা গিয়েছে। যার জেরেই বিজেপি ২ থেকে একলাফে পৌঁছে যায় ১৮-এ। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বামেরা পায় ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। উনিশে যা কমে হয় সাড়ে সাত শতাংশ। অর্থাৎ বামেদের ভোট কমে প্রায় ১৮ শতাংশ। আর উনিশে কংগ্রেসের কমেছিল প্রায় সাত শতাংশ ভোট। দুই দল মিলিয়ে ভোট কমে প্রায় ২৫ শতাংশ। আর ষোলোর তুলনায় উনিশে বিজেপির ভোট বাড়ে প্রায় তিরিশ শতাংশ। এই অঙ্কেই স্পষ্ট, উনিশের লোকসভা ভোটে বামেদের ভোটের একটা অংশ গিয়েছিল রামে। এবার কি চব্বিশেও বামেদের ভোট পেতে মরিয়া পদ্ম শিবির? নিশীথ প্রামাণিকের বক্তব্যে অন্তত তেমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।