পুরুলিয়া: এখানে না আছে আধুনিকতার ছোঁয়া, না আছে সেই স্বাচ্ছন্দ্য। এই এলাকায় না আছে ইন্টারনেট, না আছে টাওয়ার। কিন্তু এখানে ভোট হয়। গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন এই জায়গার মানুষ। তবে এমন নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এলাকায় আজকের দিনে ভোট করানোটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের কাছে।
পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের একদা মাওবাদী উপদ্রুত ধানচাটানি গ্রামের খুরুজারা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের জন্য তাই বিশেষ ব্যবস্থা করতে হয়েছে কমিশনকে। সব মিলিয়ে জেলার এমন ৮৭ টা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রকে মোবাইল শ্যাডো জোনের আওতায় রাখা হয়েছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আরটি সেটের ভরসায় যাবতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে এই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে।
লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ | Lok Sabha Election 2024 West Bengal
আরও পড়ুন: ভোটের বায়না পেয়ে হাসি ফুটেছে ওঁদের মুখে
সুষ্ঠুভাবে ভোট করাতে প্রশাসন তথা কমিশনের কাছে এই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতাটাই চ্যালেঞ্জ। ভোটারদের দু’কিমির নয়া বিধিতে এবারই খুরুজারা স্কুলে বুথ হচ্ছে। তাই অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় ধারাবাহিকভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এরিয়া ডমিনেশন চলছে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বুথে আরটি সেটের ব্যবস্থা থাকবে। পুরুলিয়া সেক্টর থেকে এখানে আসতে প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে হয়।
এই কেন্দ্রে আসতে হলে ২ দিন আগে থেকেই ভোট কর্মীদের রওনা হতে হবে তেমনটা নয়। কিন্তু পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা এই বুথে যাওয়ার ঝক্কিও কম নয়। দুর্গম না হলেও পাহাড়ি পথ ভাঙলে তবেই পৌঁছনো যাবে ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে। সিরকাবাদ থেকে ছাতনি হয়ে প্রায় সাত কিমি পাকদন্ডি বেয়ে অযোধ্যা হিলটপ। তারপরে বাঘমুন্ডি ব্লকের অযোধ্যা পাহাড়ের পুনিয়াশশান, উসুলডুঙরির জঙ্গল পেরিয়ে বাঁ দিকে ধানচাটানি গ্রাম। স্বাভাবিকভাবেই এখানে যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতা আছে। যদিও এই ঘন জঙ্গল আর পাহাড়ে আগের মত পায়ে পায়ে মাও আতঙ্ক নেই। কিন্ত তা না থাকলেও হাতির আতঙ্ক এখন প্রবল আকার ধারণ করেছে।
আরও পড়ুন: রমজান মাসে জমে উঠেছে সিমাই-লাচ্ছার বাজার
এই ব্যাপারে আড়শার বিডিও গোপাল সরকার জানিয়েছেন, ধানচাটানির খুরুজারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবারই প্রথম বুথ হচ্ছে। সিরকাবাদ ব্লক কার্যালয় থেকে প্রায় ২৫ কিমি দূরে অবস্থিত জায়গাটি। জেলার মানুষের মধ্যে অনেকেই বলছেন, মাও হিংসা আজ অতীত হলেও, ধানচাটানি গ্রামে পা রাখলেই গা ছমছম করে আজও। তাই ভোটের ২ মাস আগে থেকেই আড়শা থানার পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে এই এলাকায় ‘কনফিডেন্স বিল্ড আপ’ চালিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্য প্রথমবার হওয়া এই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট করানো।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি