আর তারকা প্রচারক নন কুণাল

Kunal Ghosh: তৃণমূল থেকে কি মুছেই ফেলা হল কুণাল ঘোষকে? বুধের পর বৃহস্পতিতেও বিরাট পদক্ষেপ! কেঁদেই ফেললেন কুণাল

কলকাতা: তৃণমূলের মুখপাত্র, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারণের পর এবার দলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও বাদ গেলেন কুণাল ঘোষ। বৃহস্পতিবার পঞ্চম দফা ভোটের জন্য তৃণমূলের তারকা প্রচারকের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে নাম নেই কুণালের। যদিও দুদিনে একের পর এক পদ খুইয়ে বৃহস্পতিবার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। এমনকী কেঁদেও ফেলেন। তবে, ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেন কুণাল ঘোষ, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

বুধবার সকালেই একই মঞ্চে হাজির হয়ে কলকাতা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের প্রশংসা করেছিলেন কুণাল৷ দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দলের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষও করেছিলেন কুণাল ঘোষ৷ এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কুণালের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করে তৃণমূল কংগ্রেস৷ দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল কুণাল ঘোষকে৷ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বিবৃতি দিয়ে কুণালের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন৷ এরপরই ডেরেক তীব্র আক্রমণ করে ‘পোস্টমাস্টার’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি।

এদিকে, সরাসরি না হলেও কুণালের পাশে পরোক্ষে দাঁড়ালেন তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ”অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হলে শান্তনু সেন বা কুণাল ঘোষের মতো ব্যক্তিরা অগ্রপশ্চাৎ না ভেবে দলের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা ঠিক দল যাকে প্রার্থী করবে তাকে মেনে নিতে হয়। তেমনি কেউ হঠাৎ করে একদিন বা দুই দিন কোনও মন্তব্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। কুণাল ঘোষ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে বসে ফিশফ্রাই খাচ্ছেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী অফিসের দ্বারোদঘাটনে অনেকে যেতে না পারলেও কুণাল ঘোষ ছিলেন। আবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইফতারে কুণাল ঘোষ ছিলেন। কুণাল ঘোষ উত্তর কলকাতার প্রার্থী সুদীপ বন্দোপাধ্যায়ের হয়েই ভোটে লড়বেন। তিনি নিজেই বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন তাঁর নেতা-নেত্রী। তিনি তৃণমূলের সৈনিক।”

আরও পড়ুন: ৪ জুন, গণনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টা- অমিত শাহের বিরাট দাবি! কী হতে চলেছে, জানালেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী

সুদীপের সঙ্গে সংঘাতের জেরে কয়েক মাস আগে দলের মুখপাত্রের পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছিলেন কুণাল৷ এবার দলের সমস্ত পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে৷ বৃহস্পতিবার দলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে।

বুধবারই ডেরেক ও ব্রায়েন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘সম্প্রতি কুণাল ঘোষ এমন কিছু মন্তব্য করেছেন যা দলের মতামতের সঙ্গে মেলে না৷ এটা স্পষ্ট করে দেওয়া দরকার যে এগুলি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত এবং কোনওভাবে দলের নয়৷ একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হবে সেগুলিকেই দলের মতামত বলে গণ্য করতে হবে৷ ‘

একই সঙ্গে ওই বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘কুণাল ঘোষকে আগেই দলের মুখপাত্রের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল৷ এবার তাঁকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল৷’ কুণালের কোনও বক্তব্যকে তৃণমূলের সঙ্গে না জড়ানোর জন্যও সংবাদমাধ্যমের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে৷

বুধবার কলকাতা পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি রক্তদান শিবিরে একই মঞ্চে দেখা যায় কুণাল ঘোষ এবং কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়কে৷ ওই মঞ্চ থেকেই তাপস রায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন কুণাল৷ এমন কি, প্রার্থী হিসেবে তাপস রায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে পিছিয়ে নেই বলে মন্তব্য করেও শোরগোল ফেলে দেন কুণাল৷ পাশাপাশি কুণাল আরও বলেন, ‘একটাও ছাপ্পা ভোট দেবেন না৷ যে যোগ্য প্রার্থী তাঁকে মানুষের ভোটে জিততে দিন৷’