দক্ষিণ দিনাজপুর: চিরাচরিত চাষের বাইরে গিয়ে গাঠি কচুর চাষ করে ব্যাপক লাভবান প্রশান্ত মণ্ডল। অন্যান্য শাকসবজির পরিবর্তে প্রশান্ত তাঁর নিজের জমিতে বেশ কিছু এলাকা জুড়ে দেশি প্রজাতির গাঠি কচুর চাষ করেছেন। কীটনাশক প্রয়োগের পাশাপাশি সারের বেশি প্রয়োজন হয় না বলে এই কচুর চাষ করতে খরচও অনেকটাই কম। ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে গাঠি কচু চাষ করে তিনি লাভের মুখ দেখছেন।
এই কচুর অনেক ধরনের নাম আছে। কেউ বলেন বই কচু, কেউ বলেন সুজি কচু, তো কারও কাছে পরিচিত মুখীকচু হিসেবে। খেতে সুস্বাদু। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের হলদিডাঙা এলাকার কৃষক প্রশান্ত লাভজনক সবজি হিসেবে এই গাঠি কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বিগত তিন বছর ধরে।
তবে শুধু এই জেলায় নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা-সহ এই গাঠি কচু রফতানি হচ্ছে অন্য রাজ্যেও। এই কচু গাছের রোগবালাই নাই বললেই চলে। তাই কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। এ ছাড়াও এই কচুর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ ও আয়রন থাকে। বিষমুক্ত সবজি হিসেবে দিন দিন এর চাহিদাও বাড়ছে।
চাষি প্রশান্ত জানান, এই গাঠি কচু হতে প্রায় ৫-৬ মাস সময় লাগে। তবে ̈আগাম বাজার ধরতে হলে আরও ২-১ মাস আগে গাঠি কচু উঠিয়ে বাজারজাত করা যেতে পারে। বিগত কয়েক বছর আগেও এর তেমন দাম না পাওয়া গেলেও কয়েক বছর যাবৎ গাঠি কচুর চাহিদা বাজারে যথেষ্ট। ফলে দামও বেশ ভালই মিলছে। এই সময়ে যে সমস্ত শাক সবজি চাষ হয় তার পরিবর্তে এই কচু চাষ করে ব্যাপক লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে।
বেলে ও দোআঁশ মাটিতে কচু চাষ খুব ভাল হয়। এমনকি এই কচু চাষে জল একটু বেশি পরিমাণে দরকার। তাই নিচু জল জমা জমি এই গাঠি কচু চাষের পক্ষে উপযোগী। সারাদিন রোদ পায় এমন স্থানে এই কচু জন্মানো উচিত। জল সেচের ব্যবস্থা থাকলে ফাল্গুন মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে বীজ বপনের সবচেয়ে ভাল সময়। উর্বর মাটির জন্য এক এক সারির দূরত্ব ২ ফুট এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১.৫ ফিট হতে হবে। সেইভাবেই বীজ রোপন করতে হয়।
সুস্মিতা গোস্বামী