Category Archives: কৃষি

Spine Gourd Cultivation: মোটা আয়ের হাতছানি! ধান, পাট ছেড়ে কাঁকরোল চাষে মজেছেন কৃষকরা

উত্তর ২৪ পরগনা: ধান বা অন্যান্য সবজি চাষ ছেড়ে এখন কাঁকরোল চাষের ঢেউ নেমেছে বাদুড়িয়ায়। তাতে কৃষকদের লাভের পরিমাণ বেড়েছে। ফলে ঋতুভিত্তিক চাষের প্রথা ক্রমশই কমছে এই এলাকায়।

গ্রীষ্মকালীন পুষ্টিকর সবজির মধ্যে অন্যতম কাঁকরোল। যেমন সুস্বাদু তেমনই পুষ্টিগুণেও ভরপুর এই ফসল। এই সবজিটি গ্রীষ্মকালে বাজারে বহুল প্রচলিত। তবে বসিরহাটের বাদুড়িয়ার চাষিরা চিরাচরিত ঋতুভিত্তিক চাষ প্রথা ছেড়ে এখন কাঁকরোল চাষে জোর দিচ্ছেন। সবজি ক্ষেতে গেলে দেখা যাবে বাগান ভর্তি সবুজ কাঁকরোল গাছের সমাহার। মাচার উপর শতাংশে গাছের নিচে শোভা পাচ্ছে পরের পর কাঁকরোল।

আরও পড়ুন: এই গ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভোট দিতে যেতে হয়

ধান, পাটের ঋতুভিত্তিক চাষে খরচ ও পরিশ্রম অনেকটাই বেশি থাকে। সেখানে কাঁকরোল চাষে একবার চারা গাছ রোপন করলে বহুদিন ধরে ফল পাওয়া যায়। হাইব্রিড প্রজাতির কাঁকরোলের ফলন ভাল হওয়ায় আয়‌ও ভাল হচ্ছে কৃষকদের। হাইব্রিড জাতের কাঁকরোল চাষে কৃষিতে ভাল ফলন ধরেছে। কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন সবজি কাঁকরোল চাষ করে ভাল দাম পাচ্ছেন। অধিকাংশ জমিতেই মাচায় চাষ করা হয়েছে।

সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, সব ধরনের মাটিতেই কাঁকরোল চাষ করা যায়। তবে দো-আঁশ, এঁটেল-দো-আঁশ মাটি চাষের জন্য বেশি উপযুক্ত। জল জমে না, উঁচু বা মাঝারি উঁচু জমি এই চাষের জন্য দরকার। চাষের আগে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। এরপর চাষের জমিতে প্রয়োজনীয় মাপের মাচা তৈরি করতে হবে। এরাম কতগুলো সহজ বিষয়ে মাথায় রাখলে কাঁকরোল চাষ করে আপনার ভাল আয় হতে পারে।

জুলফিকার মোল্যা

Cucumber: কীটনাশক ব্যবহারে শসা হয়ে উঠছে চরম বিষাক্ত, খাওয়ার আগে এই ৩ কাজ অবশ্যই করুন

আমরা অনেকেই বিশেষ করে গ্রীষ্মের মরশুমে শসা খেতে পছন্দ করি। তবে বর্তমানে এমন একটি খবর প্রচার হচ্ছে যা স্বাদ তিক্ততায় ভরিয়ে দেয়। কারণ আমরা প্রতিনিয়ত যে শসা খাচ্ছি সেগুলির উৎপাদনে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার করা হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

নিয়ামতপুরের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. নূতন ভার্মা বলেন, শসা তৈরিতে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। কীটনাশক ব্যবহার করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শসা বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ক্ষতিকারক কীটনাশক আমাদের স্বাস্থ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই বাজার থেকে শসা কিনে খাওয়ার আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এতে কীটনাশকের প্রভাব কিছুটা হলেও কমানো যায়।

আরও পড়ুন: YouTube-ভিডিও থেকে কত টাকা আয় হয়? ১ মিলিয়ন ভিউজ হলে কত রোজগার হয়? ৯৯% লোকজনই জানেন না

শসা অত্যন্ত বিষাক্ত হয়ে উঠছে

ড. নূতন ভার্মা জানান, শসায় কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। প্রতি ১ লিটার জলে ১৭.৮ মিলি ইমিডাক্লোপ্রিড মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে শসা ৫% থেকে ১০% ফুলে উঠলেই এই স্প্রে করা উচিত। এই সময়ে স্প্রে করা হলে শসার ফসলের ক্ষতি হবে না। শসা ফসলের মুকুল হওয়ার সময় কোনও কীটনাশক ব্যবহার করা ঠিক নয়। কীটনাশক ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর হতে পারে।

৫ দিন ধরে ফসল কাটা যাবে না

ড. নুতন ভার্মা বলেন, যদি মুকুলের সময় শসার ফসলে কীটপতঙ্গের আক্রমণ হয়, তাহলে কৃষকরা থিওমেথক্সাম ব্যবহার করবেন। যার প্রভাব ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত ফসলে থাকে। ইমিডাক্লোপ্রিড ব্যবহার করলে ৫ দিনের জন্য ফসল প্রভাবিত হয়। এমতাবস্থায় মনে রাখতে হবে যদি এই ওষুধগুলো ফসলে স্প্রে করা হয়ে থাকে, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি শসা কাটা উচিত নয়।

নিমের পণ্য ব্যবহার

ড. নূতন ভার্মা বলেন, যদি পাতায় পোকা থাকে তাহলে নিম থেকে তৈরি পণ্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

শসা খাওয়ার আগে এটি করা উচিত

শসা পরিষ্কার করতে, জলে নুন যোগ করে ১০ মিনিটের জন্য শসা ডুবিয়ে রাখতে হবে। অথবা ১ লিটার জলে দুই ক্যাপ ভিনিগার মিশিয়ে তাতে শসা ডুবিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। এরপর জল দিয়ে দুই থেকে তিনবার ধুয়ে শসা খাওয়া যেতে পারে।

Muskmelon Cultivation: গরমে এই ফল চাষ করলে লাভের টাকায় উপচে পড়বে পকেট

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এখন সেভাবে দেখা যায় না এই ফল। তবে আগেকার দিনের মানুষের এই ফল ছিল খুব পছন্দের। এটি হল ফুটি। সাধারণ যেকোনও জমিতেই চাষ করা যায় ফুটি। সাধারণত বেশ বড় আকারের হয়। কাঁচা ফুটি সবুজ হয়, পাকলে হলুদ রঙের হয়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফল ফেটে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।

ফুটির বাইরের দিকটা দেখতে অনেকটাই কুমড়োর মত হালকা ডোরাকাটা হয়। খেতে তেমন মিষ্টি নয়। তবে আগেকারদিনে মানুষরা গুড় বা বাতাসা দিয়ে এই ফুটি খেত। কিন্তু এখন আর সেভাবে জমিতে চাষ হতে দেখা যায় না ফুটি। তবে এবার সুন্দরবনে এই ধরনের ফল চাষ হতে দেখা যাচ্ছে। এবং কৃষকরা ভাল মুনাফাও করছেন। কারণ এই ফল খেলে নানান উপকার‌ও হয়।

আরও পড়ুন: পর্যটক টানতে বড় সিদ্ধান্ত এই পুরসভার, থাকবে বোটিং-এর ব্যবস্থা

ফুটি কাঁচা অবস্থায় রান্না করে খাওয়া যায়। তার পাশাপাশি এই ফল হজম শক্তি বাড়ায়। মিষ্টি কম থাকায় ডাইবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও এই ফল খেতে পারেন। এইটা সাধারণত শুষ্ক ও উষ্ণ জলবায়ুতে উর্বর দোআঁশ ও পলি মাটিতে ভাল চাষ হয়। আপনি যদি ফুটি চাষ করতে চান তবে এর জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল ফেব্রুয়ারি মাস। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বীজ রোপণ করতে হবে। এতে খুব একটা সারের প্রয়োজন পড়ে না। তবে ভাল ফলন ও গাছের পোকা রোধ করার জন্য রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। এবং ফল জন্মানোর পর যাতে ফল পচে না যায় যার জন্য জমিতে ফলের নিচে খড় বিছিয়ে দেওয়াটা বাধ্যতামূলক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফল এক কেজি থেকে দু কেজি, এমনকি আড়াই কেজি ওজন পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই ফল অনেক সময় ফেটে যায়। সেটা রোধ করতে গেলে জমিতে নিয়মিত পরিমাণ মত জল দিতে হবে। তাতে ফাটার সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে।

সুমন সাহা

Ginger Export: পুঁইশাক-ঝিঙের নীচে লক্ষাধিক টাকার আদাচাষ! জলপাইগুড়ির আদা ‌যাচ্ছে ফ্রান্সে! মিশ্রচাষে বিরাট চমক

জলপাইগুড়ি: পুঁইশাক, ঝিঙের নীচেই লক্ষাধিক টাকার আদা চাষ! জলপাইগুড়ি জেলার কচুয়া বোয়ালমারী এলাকায় পরিতোষ মণ্ডল নামে এক কৃষক অল্প জমিতে মিশ্র চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। জায়গা স্বল্প হলেও ভিন্ন সবজির চাষ করেই তিনি জনপ্রিয় ভিনদেশেও। তবে নানা সবজির মধ্যেও বিশেষ নজর কেড়েছে আদা চাষ। সেই আদা ইতিমধ্যেই ফ্রান্সে পাড়ি দিতে প্রস্তুত।

সম্প্রতি ফ্রান্স থেকে কয়েকজন এসে আগাম বুকিং করে গিয়েছে এই আদা। একেবারে দেশীয় অর্থাৎ অর্গানিক উপায়ে এই আদা চাষ হয় বলেই এত চাহিদা এই আদার। রাসায়নিকের ব্যবহার ছাড়াই চাষ করা এই অর্গানিক আদার গুণগতমান দুর্দান্ত। স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল।

আরও পড়ুন: বেড়ে চলেছে জিরার দাম! গত ১০ দিনেই আকাশছোঁয়া, মশলার মূল্যবৃদ্ধিতে মধ্যবিত্তের মাথায় হাত

জানা গিয়েছে, মিশ্র চাষের মধ্য দিয়ে ৩ বার রাজ্য সরকারের তরফে কৃষি পুরস্কার অর্জন করেছেন পরিতোষ। আদা চাষ করে বিদেশে পাঠিয়ে বছরে প্রায় লক্ষাধিক টাকার আয় হয় তাঁর। তবে এই আদা চাষে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের তরফে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বলেই জানান তিনি। বীজ থেকে শুরু করে কীটনাশক এবং চাষের কার্যে ব্যবহৃত আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা হয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্য কৃষি দফতরের তরফে।

আরও একটি বিষয় হল এই আদার উপরে মাচা তৈরি করে তাতে পুঁইশাক, ঝিঙে চাষ করেছেন তিনি। ছোট শহরের এই আদা ভিনদেশে এত জনপ্রিয় হওয়ায় ইতিমধ্যেই পরিতোষের নাম ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। স্বাভাবিকভাবেই জেলাজুড়েও অর্গানিক এই আদার চাহিদা এখন তুঙ্গে।

সুরজিৎ দে

Super Food: ধান ছেড়ে ‘সুপার ফুড’ কাউনের চাষ, ভাগ্য খুলে গিয়েছে কৃষকদের

উত্তর দিনাজপুর: সুপার ফুড কাউনের পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে উত্তর দিনাজপুরে। ধান, গমের থেকেও ভীষণ লাভজনক কাউন চাষ। তাই ধান, গম ছেড়ে এখানকার কৃষকরা কাউন চাষে ঝুঁকছেন।

উত্তর দিনাজপুর জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে কাউনের চাষ। পুষ্টিকর দানা জাতীয় খাদ্যশস্য হচ্ছে কাউন। এই কাউন দিয়ে বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার যেমন পিঠে, পায়েস, বিস্কুট সহ অনেক সুস্বাদু পদ তৈরি করা যায়। তাই দানা জাতীয় ফসল হিসেবে কাউন ভীষণ জনপ্রিয়। কৃষকরা জানান, এই কাউন চাষে খুব একটা সেচের প্রয়োজন হয় না। এছাড়া অল্প যত্ন নিলেই ভাল ফলন হয়। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কাউন চাষের জমিতে খুব একটা সারের প্রয়োজন হয় না। প্রাকৃতিক উপায়ে খুব সহজে এই দানা জাতীয় শস্য চাষ করা যায়।

আর‌ও পড়ুন: বিশ্ব হাসি দিবসে শিল্পীর অবাক করা সৃষ্টি! হাতে ওটা কী জানেন?

কৃষিবিদ অবেন দেবশর্মা জানান, ঘন জীবামৃত তৈরি করে এই কাউন চাষ করা হয়। এই ঘন জীবমৃত বানাতে প্রয়োজন হয় গোবর, গুড়, বেসন, গোমূত্র। এই সার কাউনের জমিতে প্রয়োগ করলে দারুন ফলন পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক উপায়ে খুব সহজে কাউনের চাষ করে ভালো ফলন হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে কাউনের। এই কাউনের বীজ বপনের উপযোগী সময় হল অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস। প্রায় সব ধরনের মাটিতে কাউনের চাষ করা যায়। এছাড়া দেশের চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত বিদেশে রফতানি করাও সম্ভব। কাউনের চাল বাংলার বাজারে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

পিয়া গুপ্তা

Corn Cultivation: বৃষ্টির দেখা নেই, প্রবল তাপপ্রবাহে ক্ষতির মুখে ভুট্টা চাষিরা

উত্তর দিনাজপুর: প্রবল তাপপ্রবাহে মাথায় হাত উত্তর দিনাজপুরের ভুট্টা চাষিদের। ধান ও পাট চাষের পর এই জেলায় সবথেকে বেশি চাষ হয় ভুট্টার। কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ , হেমতাবাদ, ইটাহার সহ জেলার ৯ টি ব্লকেই প্রচুর পরিমাণে ভুট্টা চাষ হয়। কিন্তু অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে পুড়ে যাচ্ছে জেলার একের পর এক ভুট্টা ক্ষেত। এই সময় কিছুটা বৃষ্টির দরকার ছিল। কিন্তু তার অভাবে সর্বস্বান্ত হতে বসেছেন ভুট্টা চাষিরা।

এই পরিস্থিতিতে অল্প কিছু সংখ্যক কৃষক পাম্প চালিয়ে সেচের ব্যবস্থা করলেও অনেকেই আর্থিক সঙ্গতির অভাবে সেই পথে পা বাড়াতে পারেননি। ফলে শেষ পর্যন্ত ভুট্টা চাষের কী হাল হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন সকলে। উত্তর দিনাজপুর জেলার বহু কৃষক ঋণ নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কীভাবেঋণ শোধ করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না।

আর‌ও পড়ুন: ভোট প্রচারে ‘অনুব্রত’ দাওয়াইয়ে মিলল স্বস্তি!

এক কৃষক মোহন মণ্ডল জানান, গত বছর এই সময় বৃষ্টি হলেও এবারে বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে ভুট্টা সহ অন্যান্য ফসলের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে পাম্প সেট দিয়ে জল দিতে তিন হাজার টাকার মত খরচ হয়। তাই অনেক কৃষকের পক্ষেই পাম্প সেট দিয়ে জল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে বিঘা প্রতি ভুট্টা চাষে প্রায়‌ ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে ভুট্টা চাষে অনেক টাকা খরচ হলেও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবারে লাভ তো দূরের কথা খরচ‌ই উঠবে না বলে অনেক কৃষকের আশঙ্কা।

পিয়া গুপ্তা

Pumpkin Farming: প্রক্রিয়াকরণ করে তৈরি হচ্ছে শস, লাভের আশায় মিষ্টি কুমড়ো চাষ কৃষকদের

দক্ষিণ দিনাজপুর: মিষ্টি কুমড়ো চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার স্বপ্নে বিভোর চাষিরা। তাই ধানের বদলে দিন দিন বেড়েই চলেছে মিষ্টি কুমড়োর চাষ। কারণ মিষ্টি কুমড়ো থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে শস।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মাঠে এখন শুধুই হলুদ সবুজের সমারোহ। গ্রামের বেশিরভাগ কৃষকই কুমড়ো চাষে মজেছেন। সবুজ লতার ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে পেল্লাই সাইজের মিষ্টি কুমড়ো। প্রতিবছরই ফল ওঠার সময় দূর দূরান্ত থেকে বহু মহাজন সহ পাইকাররা এসে তাঁদের কুমড়ো মাঠ বা বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যান সস সহ অন্যান্য জিনিস তৈরি করার জন্য। এতে লাভের পরিমাণ থেকে অনেকটাই বেশি থাকে।

আর‌ও পড়ুন: ডুয়ার্সের জঙ্গল দর্শনে ফরাসি রাষ্ট্রদূত, পরিদর্শন শেষে সন্তোষ না অসন্তোষ জানালেন?

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু, বোয়ালদাড় এবং বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকায় মিষ্টি কুমড়োর চাষ হয়। পলিমাটি হওয়ায় এই এলাকায় মরসুমি মিষ্টি কুমড়া চাষ ব্যাপক হারে হয়। প্রত্যেক বছর কয়েক হাজার কৃষক এই মিষ্টি কুমড়ো চাষ করেন। এবারও বালুরঘাট ব্লকে প্রায় ১৩০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ো চাষ করেছেন কৃষকরা। মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ভাল মত ফসল হলে এক বিঘা জমিতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কুইন্টাল মিষ্টি কুমড়ো হয়। আর বাজারে ঠিকমত দাম থাকলে বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হয়। হিসেবটা দেখে বুঝতেই পারছেন কেন এখানকার কৃষকরা মিষ্টি কুমড়া চাষে ঝুঁকেছেন।

সুস্মিতা গোস্বামী

Agriculture Tips: তাপপ্রবাহে চাষের ক্ষতি! কী করে বাঁচবেন জানালেন কৃষি  বিশেষজ্ঞ

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এই গ্রীষ্মের তাপদহে সাধারণ মানুষ যেমন অতিষ্ঠ তার পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি চাষে প্রচন্ড ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের আর তা থেকে কিভাবে বাঁচবেন এ বিষয়ে নিমপীঠ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের কৃষিবিজ্ঞানী কৃষকদের প্রতি পরামর্শ। কিভাবে তারা ফল হোক বা সবজি কিভাবে বাঁচাবেন তা জেনে নেওয়া ‌যাক। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এই গরমে যে ফসলগুলি রয়েছে তার মধ্যে এই সময় প্রচুর হারে লিচু চাষা হয়। আরে লিচু চাষের জন্য কি করনীয় প্রথমত লিচু চাষীদের প্রতিদিনই গাছের জল স্প্রে করতে হবে তার পাশাপাশি কিছু ওষুধ স্প্রে করতে হবে।

আরও পড়ুন: পরিবেশ বাঁচাতে স্কুল শিক্ষকের নয়া ভাবনা! সাজছে ঘরবাড়িও

লিচুর সঙ্গে আম ও এই সময় প্রচুর পরিমাণে চাষ হয় এই জেলাতে তার পাশাপাশি প্রচুর বাড়িতেও চাষ হয়। আমের ক্ষেত্রে জল স্পে করা পাশাপাশি কিছু ভিটামিন ওষুধ যেমন বরোণ জিম পলি ক্লালাম এই ধরনের ভিটামিন ওষুধ তা ছাড়া সলিবুল ফার্টিলাইজার যেমন ১৩ জিরো ৪৫ বা পটাশিয়াম নাইট্রেড এগুলো স্প্রে করলে ফলন যেমন ভালহবে তার পাশাপাশি এই যে প্রচন্ড গরমে গাছের যে শুকিয়ে যাওয়া পাতা বা কান্ড জল স্পে করলে এই গরম আবহাওয়া থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। তার সঙ্গে এই সময় কিছু শোষক পোকার আক্রমণ বাড়ে সবজির ক্ষেত্রে ঢেঁড়স  এই জাতীয় যে ফসলগুলি রয়েছে সেগুলির ক্ষেত্রে মাঠে এখন যে সবজিগুলি রয়েছে তার জন্য রাসায়নিক সার নিম নির্যাস তৈরি তৈরি করে গাছের স্পে করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন:  প্রথম মহিলা ‘ট্রাক ড্রাইভার’ ভারত থেকে পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ে পৌঁছলেন বাংলাদেশ

সেটির জন্য আপনাকে একটি ১৫ লিটার ড্রাম যোগাড় করতে হবে তার জন্য ছাত্র থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের নিমপাতা তিন থেকে ৪০০ গ্রাম মত গোবর এবং ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম মত গোমুত্র। সেই নিমপাতা গুলি অল্প বেটে নিয়ে অল্প জল দিয়ে সেই গো চোনা এবং গোবরটি মিশিয়ে তিন চার দিন রেখে দেয়ার পর ভালো করে ছেঁকে নিতে হবে। তারপর গাছে গাছে স্পে করতে। তাতে এই পোকার হাত থেকেও বাঁচা যাবে এবং গাছগুলি যেগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে এই গরমে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া যাবে এই নিয়মগুলি মেনে চললে।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

সুমন সাহা

Gardening Tips: থোকায় থোকায় ফুটবে গোলাপ ফুল, আয় হবে লক্ষ লক্ষ! ৫ জাতের গোলাপ চাষেই বাম্পার লাভ

যাঁরা আর ধান, গম, ফল এবং সবজি চাষ করতে চান না তাঁদের জন্যই আসলে এই খবর। ঐতিহ্যবাহী ফসল ছাড়াও গোলাপ চাষ করেই বর্তমানে কৃষকরা প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে পারেন। এই ফুলের বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, আখের রসের চেয়েও এই ফুলের রস বহুগুণ বেশি মিষ্টি।

এছাড়াও বাজারে এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। এই ফুলটি সাজসজ্জার জন্যও ব্যবহৃত হয়। ফলে গোলাপ চাষে কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে। গোলাপকে সারা বিশ্বের মানুষ এর অপরূপ সৌন্দর্যের জন্য ফুলের রাজা বলে মেনে নিয়েছে। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিশ্ববাজারেও তাই গোলাপ ফুল ও গোলাপ তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘জীবনের সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা’! বিয়ের দু’মাস আগেই…কী হয়েছিল সানির সঙ্গে? কষ্ট-যন্ত্রণা নিয়ে নিজেই মুখ খুললেন নায়িকা

সাধারণত জুলাই-অগাস্ট মাসে বর্ষা আসার সঙ্গে সঙ্গে গোলাপ রোপণ করা হয়। ১৫°সে থেকে ২৮°সে এর মধ্যে তাপমাত্রা গোলাপ চাষের জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়। গোলাপ গাছের বৃদ্ধির পর্যায়ে, এদের ৫ থেকে ৪ ঘন্টা সূর্যালোক পাওয়া উচিত।

সাধারণত আর্দ্র আবহাওয়ায় বা মেঘলা অবস্থায় সূর্যালোকের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও, ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাতেও গোলাপ ভাল জন্মায়। গোলাপ চাষের জন্য, মাটির পিএইচ মান ৬ থেকে ৭.৫এর মধ্যে হওয়া উচিত। বেলে-দোআঁশ মাটিতে গোলাপ গাছ ভাল জন্মায়।

অ্যাসিস্ট্যান্ট ডেভেলপমেন্ট অফিসার, সরকারি কৃষি কেন্দ্র, শিবগড়, রায়বেরেলিতে কর্মরত দিলীপ কুমার সোনি বলেছেন যে, গোলাপ ফুল সাজসজ্জার পাশাপাশি সৌন্দর্যজাত পণ্য এবং অনেক ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। যে কারণে বাজারে এর চাহিদা বেশি। একবার গোলাপের চারা রোপণ করা হলে, এটি ৪ থেকে ৫ বছর ধরে ভাল ফুল দেয়। এটি অর্থকরী ফসলের চাষ। যার কারণে কৃষকরা প্রতি একর জমি থেকে প্রতি বছরে আনুমানিক আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন।

গোলাপ কখন রোপণ করা হয়?

আমাদের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে দিলীপ কুমার সনি বলেন, সাধারণত জুলাই থেকে অগাস্ট মাসে বর্ষা আসার সময় গোলাপের আবাদ করা হয়। এরপর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে গাছে ফুল আসা শুরু হয়। এই পাঁচটি উন্নত জাতের গোলাপ হচ্ছে হাইব্রিড টি, স্মল রোজ, ফ্লোরিবুন্ডা রোজ, আলবা রোজ, ক্লাইম্বিং রোজ, যেগুলো চাষ করে চাষিরা ভাল লাভ করতে পারেন।

এই জাতগুলি চাষ করা উচিত

দিলীপ কুমার সোনি ব্যাখ্যা করেছেন যে হাইব্রিড টি জাতটি গোলাপ ফুলের সবচেয়ে উন্নত জাত। এটিতে ৪০ থেকে ৫০টি পাপড়ি বিশিষ্ট সুন্দর ফুল ফোটে যা গোলাপের কাণ্ড থেকে বের হয়। ফ্লোরিবুন্ডা গোলাপের ঝোপের মতো। এর কান্ড ছোট এবং এর ফুল গুচ্ছ আকারে দেখা যায়। আলবা গোলাপও একটি হাইব্রিড জাত। এর সুন্দর নীল, সবুজ, পাতা বা হালকা গোলাপি ফুল খুবই সুন্দর দেখতে। এটি বছরে একবার ফোটে।

Drumstick Cultivation: সজনে ডাঁটা ফলিয়ে মালামাল এখানকার চাষিরা

উত্তর ২৪ পরগনা: সজনে গাছকে বলা হয় পুষ্টির সুপারফুড। পুষ্টি ও ওষুধি গুণাগুণের জন্য সজনে চাষে ঝুঁকছেন হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা। মূলত সজনে ডাঁটার উচ্চ চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে এই উদ্যোগ।

মাছ চাষের ভেড়ি, রাস্তার ধার সহ বাগানে সজনে গাছ রোপণ করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার বহু মানুষ। এই বছর এলাকায় সজনের ফলনও হয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। ফলে কৃষকরা ভাল দামও পাচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে সজনে ডাঁটা কিনে নিয়ে তা বসিরহাট সহ কলকাতার বাজারে পাইকারি বিক্রি করছেন। স্থানীয় বাজারেও সজনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

আর‌ও পড়ুন: স্কুলেই আসেন না জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা, সাদা খাতা জমা দিয়ে প্রতিবাদ পড়ুয়াদের

মুখোরোচক ও পুষ্টি গুনে ভরপুর সজনে ডাঁটা বর্তমানে ভিন জেলায় নিয়মিত পাড়ি দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ১৫-২০ টাকা প্রতি কেজি সজনে ডাঁটা কিনে তা তা শহরে পাইকারি বিক্রি করছে। খোলা বাজারে এই ডাঁটা ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গাছ থেকে সজনে ডাল সংগ্রহ করে কার্টিং পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়। রাস্তার ধার, পুকুর, জলাশয় সহ যে কোন‌ও স্থানের মাটিতে ৩-৪ মিটার দূরত্বে কার্টিং রোপন করা যায়। রোপনের সময় গোবর সার এবং দ্রত শিকড় গজানোর জন্য সামান্য ফরফরাস সার ও ছাই ব্যবহার করা হয়। এতেই দুর্দান্তভাবে ডাল পালা মেলে বড় হয়ে ওঠে সজনে গাছ। আর তারপরই ফলতে শুরু করে ডাঁটা।

জুলফিকার মোল্লা