হুগলি: একই গলায় হাজারও সুর। কখনও পাখির আওয়াজ, কখনও জীবজন্তু কখনও বা ঝড়ের শব্দ বের হচ্ছে মানুষের গলা থেকে। চোখ বন্ধ করে শুনলে মনে হবে কানের সামনে সত্যিই যেন কোনও সাউন্ড এফেক্ট চলছে। তবে এই সাউন্ড এফেক্ট পুরোটাই ঘটছে মানুষের কন্ঠে। গান বাজনা, যাত্রাপালার মত একটা সময় মঞ্চ কাঁপাতেন এই হরবোলা শিল্পীরা। তবে বর্তমানে সে সব অতীতের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে!
বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে হরবোলা শিল্প এবং শিল্পীরা। একটা সময় ছিল যখন গ্রাম বাংলার কোনও ফাংশন বা জলসা হরবোলা শিল্পীদের ছাড়া হত না। এমনকি অনেক সময় দেখা যেত টিভির পর্দাতেও অনেক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে এই হরবোলা শিল্পীদের। কিন্তু বর্তমানে বাঙালির সাংস্কৃতিক পছন্দ ও চর্চা আমূল বদলে গিয়েছে। তার ফলে কদর কমেছে হরবোলা শিল্পীদের। তাই এই শিল্পীরা আজ রুজি-রুটির টানে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এরকমই একজন হরবোলা শিল্পী হলেন কোন্নগরের নবগ্রাম ঝিলপাড়ের বাসিন্দা সুরজিৎ অধিকারী।
আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত আলিপুরদুয়ার, ভাসছে রাস্তা থেকে কৃষিজমি
এক সময় তিনি বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে এই হরবোলা শিল্পী হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে হরবোলা শিল্পী হিসাবে তাঁর আর ডাক আসে না। তাই সেই পেশা ছেড়ে দিয়ে সুরজিৎবাবু আজ রঙিন মাছ এবং কোল্ড্রিংস বিক্রি করে কোনমতে দিন চালাচ্ছেন। অথচ একসময় তাঁর গলাতেই উঠে আসত বিভিন্ন রকম পশু-পাখির ডাক, শিশুর কান্না, ঝড়ের শব্দ, বিভিন্ন ভূত পেতের আওয়াজ। যা এক সময় বিভিন্ন মঞ্চ কাঁপাত, টিভি সিরিয়াল থেকে রেডিওতেও শোনা যেত।
রাহী হালদার