কলেজে বাঁশি বাজাচ্ছেন তিনি

West Medinipur News: রাতে আপন খেয়ালে বাঁশিতে সুর তোলেন, হালকা আবহে ভরে যায় কলেজ প্রাঙ্গণ, চিনে নিন তাকে

পশ্চিম মেদিনীপুর : রাত হলেই কলেজের কোনও এক প্রান্ত থেকে ভেসে আসে মিষ্টি এক বাঁশির সুর। যেন আপন খেয়ালে নিজের মনের আনন্দে বাজান কেউ। কখনও রবীন্দ্র সংগীত, কখনও নানান লোকগীতির আবহ ভেসে আসে প্রায় প্রতিদিন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় তিনি কলেজে আসেন। তারপর নিজের দায়িত্ব সামলে রাতটুকু কাটান বাঁশির সঙ্গে। একা রুমে বসে আপন খেয়ালে বাজিয়ে চলেন বাঁশের বাঁশি। এটাই তার কাছে রাতের সময় কাটানোর এক অন্যতম মাধ্যম। কথা শুনে গা ছমছমে মনে হলেও আদতে তা নয়। তিনি একজন কলেজের কর্মী। রাতের প্রহরী বা নাইটগার্ডের কাজ করেন তিনি। আর গোটা রাতটুকু পার হয় বাঁশির সুরে।

পেশাগতভাবে বংশপরম্পরায় পরিবারে ঢাক, ঢোল, তাসা বাজানোর চর্চা থাকলেও তেমন কেউ জানতেন না বাঁশি। ছোট থেকেই ঢাক বাজাতে পারেন তিনি। তবে কলেজে যখন তিনি অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করেন তখনই বিকল্প কাজ করার মানসিকতা নিয়ে তিনি নিজেই শিখেছিলেন বাঁশি। কোনও অনুষ্ঠানে দেখে, কিংবা কারোর থেকে তাল, লয় শিখে তিনি শুরু করেন বাঁশি বাজানোর কাজ। এখনও সেই ধারাকে রেখেছেন তিনি। ঘরে অবসরে বাঁশির সুর তোলার পাশাপাশি কলেজে ডিউটিরত অবস্থায় বড় রাত কাটান বাঁশি বাজিয়ে।

আরও পড়ুন : এমন চোর হয় নাকি! চুরি করতে এসে যা করল চোর, জানলে হেসে পেটে খিল ধরবে!

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন কলেজের নাইটগার্ড প্রদীপ ঘোড়াই। বাড়ি দাঁতন থানার চকইসমাইলপুর গ্রামে। ২০১০ সাল থেকে তিনি দাঁতন ভট্টর কলেজে অস্থায়ী ভিত্তিতে গ্রুপ ডি এর কাজ করতেন। সেই সময় তার কাজ স্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলেন তিনি। পারিবারিকভাবে যেহেতু শিল্পচর্চা রয়েছে তাই তিনি অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র বাদ দিয়ে শুরু করলেন বাঁশি বাজানোর কাজ। তেমন কোনও প্রথাগত তালিম মেলেনি। নিজের ইচ্ছেতেই তিনি শিখেছেন। এরপর কলেজের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা এমনকি যাত্রা দলেও আবহ সৃষ্টি করেছেন তিনি। মূলত পেশা হিসেবে বেছে নিতে তিনি হাতে তুলে নিয়েছিলেন বাঁশের বাঁশি। পরে অবশ্য কলেজের কাজ স্থায়ী হতে তিনি শখের বশেই এখনও বাঁশি বাজান। কখনও কখনও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে করেন তিনি। সংসার সামলে চলে তার এই শিল্পের কাজ।

আরও পড়ুন : পেশায় পশু চিকিৎসক, যুবকের নেশা জানলে অবাক হবেন

বিকেল গড়ালেই তিনি আসেন কলেজে। বিভিন্ন রুম দেখে নেওয়া, চারিদিক খতিয়ে দেখার পাশাপাশি রাত জাগতে হয় তাকে। কিন্তু সেই অবসরে তিনি তার বাঁশের বাঁশি নিয়ে আবহ সৃষ্টি করেন। মধুর সুরে ভরে ওঠে কলেজ প্রাঙ্গণ। প্রদীপ বাবুর ভুয়সী প্রশংসা করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ।নিজের কাজ, দায়িত্ব, সংসার সামলেও তিনি করে চলেন এই শিল্পকর্ম।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

সবকিছু সামলেও তিনি যেন তার জীবনের আবহ বাঁশিতেই সৃষ্টি করেন।

রঞ্জন চন্দ