পেট্রোল পাম্পে আসা বাইকে তেল ভরছেন মায়া দেবী

Women Empowerment: কন্যাসন্তানই একমাত্র রোজগেরে! পেট্রল পাম্পে চাকরি করে বাবা মায়ের সংসারের হাল ধরেছেন বিবাহিতা তরুণী

মৈনাক দেবনাথ, নদিয়া: কথায় বলে যে রাধে, সে চুলও বাঁধে। বর্ধমানের বাসিন্দা মায়া অধিকারী, ছোটবেলা থেকেই অনেক কষ্টে মানুষ করে তুলেছেন তাদের তিন বোনকে৷ তাদের বাবা-মায়ের কোনো পুত্র সন্তান নেই । মায়াদেবীর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরেও পেট্রোল পাম্পের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দশভুজা হয়ে।

পার্শ্ববর্তী জেলা নদিয়াতে এসে পেট্রোল পাম্পে কাজ করে এখন নিজেই তাঁর বাবা-মায়ের দেখভাল করছেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই তিনি অতি কষ্টে মানুষ হয়েছেন। দুই বোনের এর আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে অনেক দূরে। তাঁর নিজেরও বিয়ে হয়েছে প্রায় ১৫ বছর আগে। তার স্বামী দুর্গাপুরে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত। শ্বশুর শাশুড়ি বছরখানেক আগেই গত হয়েছেন। মায়াদেবীর কোনও দাদা কিংবা ভাই নেই৷ তাই বাবা মাকে দেখারও কেউ ছিলনা। আর সেই কারণেই বিয়ের প্রায় ১২ বছর পরে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ এর একটি পেট্রোল পাম্পে চাকরি নেন।

প্রতিদিন বর্ধমানে নিজের বাড়ি থেকে ভোর পাঁচটায় বেরিয়ে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের পেট্রোল পাম্পে এসে নিজের ডিউটি সামলে এর পর আবার বাড়ি গিয়ে ঘরের কাজ করেন তিনি। পেট্রোল পাম্পের মালিক থেকে শুরু করে কর্মচারী প্রত্যেকেই তাঁকে যথেষ্ট এই বিষয়ে উৎসাহ দেন ও সাধ্যমতো সাহায্য করেন বলে জানা যায়।

আরও পড়ুন : বর্ষায় ফুচকা খাচ্ছেন? সর্বনাশ! নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন না তো! জানুন

তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু আমার মা-বাবার কোন ছেলে নেই তাই এই বয়সে তাদের দেখাশোনা করার কেউ নেই। আমার স্বামী বাইরে কর্মরত৷ দুই বোনের বিয়ে হয়েছে অনেক দূরে৷ সেই কারণে আমি মা বাবার দেখভালের জন্য এই কাজ করছি বর্তমানে। মাসের শেষে যে ক’টা টাকা পাই পুরোটাই তুলে দিই বাবার হাতে৷ বাবাই নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করে সংসার চালান। স্বাভাবিকভাবেই মায়া দেবীর এই জীবন সংগ্রামের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন পেট্রোল পাম্পের মালিক কর্মচারীরা থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারাও।’’