এই ধরনের জমা জল চিন্তার কারণ।

West Bardhaman News: শুরু ডেঙ্গির প্রকোপ! জুনে জেলায় আক্রান্ত ৭, বাড়ছে আতঙ্ক

আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান : স্বস্তির বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলেন গোটা দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিকে যে আবহাওয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছে, বিগত কয়েকদিনের সেই পরিস্থিতি অনেকটা বদলে গিয়েছে। শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। এই বৃষ্টিপাত যেমন স্বস্তি এনে দিয়েছে, তেমনভাবেই আবার চিন্তাও বাড়িয়েছে। বৃষ্টিপাত শুরু হতেই ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে অনেক আগে থেকেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

প্রসঙ্গত, বিগত বছরে ডেঙ্গি ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর এবং আসানসোলে। দুর্গাপুরের পলাশডিহা এলাকা কার্যত ডেঙ্গি আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছিল। ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছিল আসানসোলের বিভিন্ন এলাকায়। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে স্বাস্থ্য দফতরকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। আক্রান্ত হয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু এ’বছর যাতে সেই পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে তার মধ্যেই নীরবে বংশবিস্তার করে ফেলেছে ডেঙ্গির জীবাণু বাহক মশার প্রজাতি।

ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আসানসোল এবং দুর্গাপুরের কাছে। বিগত বছরের মত এবছরেও ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে পলাশডিহা এলাকায়। অন্যদিকে, আসানসোলের কালিপাহাড়ি এলাকাতেও ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে বলে খবর। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মোঃ ইউনুস জানিয়েছেন, জুন মাস পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ জন। তবে তাদের সঠিক সময় চিকিৎসা দেওয়া গিয়েছে। সুস্থ করে তোলা গিয়েছে সকলকে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের প্রয়াস, যাতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কম হয়। তাহলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক আগে থেকেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর সচেতন ছিল। মে মাসের ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বিশেষ বৈঠক সারা হয়েছিল। যাতে শুষ্ক মরশুমেও ডেঙ্গি কোনওভাবে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে। সেই মতঅভিযান চালানো হয়েছে। এমনকি জুন মাসের ২৯ তারিখে সরকারি বিভিন্ন অফিস এলাকাগুলিতে ডেঙ্গির মশা নিধন অভিযান চালানো হয়েছে। অন্যদিকে আসানসোল এবং দুর্গাপুর পৌরসভা দুটিকে নিয়েও বৈঠক করা হয়েছে। যাতে করে পুরসভাগুলি ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য সদর্থক ভূমিকা নেয়। অর্থাৎ বর্ষা আসার আগে থেকেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর সচেতনতার সঙ্গে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

তবে বর্ষা আসার পরেই ডেঙ্গি চিন্তা বাড়িয়েছে জেলার মানুষের। কারণ বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন জায়গায় জল জমেছে। জন্ম হচ্ছে আগাছার। যার ফলে মশার উপদ্রব বাড়ছে। সেখানেই মিশে থাকছে ডেঙ্গির জীবাণু বাহক মশা। এই সময় সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিশেষ করে এই সময় অবশ্যই মশারির ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি যাতে বাড়ি বা আশপাশে কোথাও জল না জমে থাকে, সেই দিকে নজর রাখতে হবে।

আরও পড়ুনঃ Nadia News: স্কুলের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে বোমা! অবাক কান্ড নদিয়ায়!

বাতিল হয়ে যাওয়া টায়ারগুলিতে যাতে জল না জমে, সেজন্য গ্যারেজ মালিকদেরও সাবধান করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পতঙ্গবিদরা সার্ভে শুরু করেছেন। তাছাড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর আগামী কয়েকদিনের মধ্যে গাপ্পি মাছ ছাড়া আর পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মোঃ ইউনুস। সবমিলিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবরকম ভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে নীরবে বংশবিস্তার করে চলেছে ডেঙ্গির জীবাণু বাহক মশা।

নয়ন ঘোষ