বেশ কয়েকটা বছর তাঁর ভরসা এই টোটো

Struggle for Life: হাঁটুর নীচে দগ্ধ পা অকেজো, হাসিমুখে টোটো চালিয়ে সংসারে অন্ন সংস্থান হাফিজুলের

রঞ্জন চন্দ, পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রতিদিন জীবনের জন্য লড়ে যেতে হয় সকলকে। কিছু মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার কাহিনি সমাজের কাছে অনুপ্রেরণা। প্রতিদিন রাস্তায় হয়তো দেখা যায় এনাকে। প্রতিদিন হয়তো সকলে লক্ষ্য করেছেন তার দুটো পা অকেজো। হাঁটুর উপর কিংবা হাতে ভর করে তাঁকে যেতে হয় এদিক থেকে ওদিক। রোজগার করতে তিন চাকার টোটো ভরসা। তার প্রতিদিনের জীবনযাত্রার কাহিনী চোখে জল আনবে। আগুনে পুড়ে এমনই অবস্থা তার। হাঁটুর নীচে দু’ পা একদম অকেজ। হাঁটুর উপর ভর করে কোনওভাবেই চলে যায় দিন। তবুও বেঁচে থাকার তাগিদে জীবনযুদ্ধে সামিল পিংলার এক ব্যক্তি।

প্রতিদিন বেঁচে থাকার জন্য তার নিরন্তর লড়াই। সংসার চালাতে সকাল থেকে কায়িক পরিশ্রম করতে হয় তাঁকে। তবুও পরিজনদের মুখে হাসি ফোটাতে দুঃখ কষ্ট মুখ বুজে সহ্য করছেন হাফিজুল। দুই ছেলে,স্ত্রী,বাবা-মায়ের সংসার। তাঁদের মুখে দু্ই বেলা দু’মুঠো অন্ন তুলে দিতে জীবনযুদ্ধকে জয় করে টোটো নিয়ে বের হয় তিনি। যা উপার্জন হয়, তাতেই চলে তাঁর সংসার। এভাবে বেশ কয়েকটা বছর তাঁর ভরসা এই টোটো। ছোট থেকেই চলাফেরা করার ক্ষমতা থাকলেও আগুনে পুড়ে দু’পা অকেজো হয় যায় তাঁর। অভাবের সংসার টানতে টোটো নিয়ে বের হয় তিনি। দু’পা কার্যত না থাকলেও সকাল থেকে বিকেল টোটো চালিয়ে চলে দিনযাপন।

সকাল থেকেই রোজগারের আশায় টোটো নিয়ে বার হন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার পাঁচথুবি এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ হাফিজুল রহমান। টোটো চালিয়ে যে ক’টা টাকা হয় তাতেই চালাতে হয় সংসার। বাড়িতে স্ত্রী, দুই ছেলে রয়েছে হাফিজুলের। কখনও আবার লোকের বাড়িতে মজুরি খাটতে যাওয়াই ভরসা। জেলার প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা পাঁচথুবিতে বাড়ি হাফিজুলের। বেশ কয়েক বছর টোটো চালিয়ে সংসারে জোগাতে হয় অর্থ, জোগাতে হয় অন্যান্য খরচ। বহুবছর আগে আগুনে পুড়ে দু’ পা অকেজো হয়ে যায় হাফিজুলের। হাঁটুতে ভর করে এদিক ওদিক যাতায়াত করতে হয় তাকে।

আরও পড়ুন : মাত্র ১ চামচ! থাকলে ব্লাড সুগারেও নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন ভাত! জানুন ডায়েটিশিয়ানদের জাদু টিপস

চোখে মুখে তার কষ্টের ছাপ স্পষ্ট। তবুও হাসিমুখে দুঃখ জয় করে টোটো নিয়ে সকাল থেকে যাত্রী বইতে বের হন তিনি। তাঁর লক্ষ্য-পরিজনদের মুখে হাসি ফোটানো। জীবনযুদ্ধে সর্বতোভাবে সাহায্য করেন তাঁর স্ত্রী। পাশে থাকেন বাবা-মাও। প্রথম প্রথম ভয়ে তার টোটোয় উঠতেন না সওয়ারিরা। তবে এখন ভয় কাটিয়ে তার টোটোতে চড়েন যাত্রীরা। তারাও চান, হাফিজুল কে সাহায্য করা হোক।